TV9 Bangla Explained: কীভাবে হয় কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচন? কারা ভোট দেন?

নয়া দিল্লি: দুই দশকেরও বেশি সময় পরে, কংগ্রেস সভাপতি পদে নির্বাচন হচ্ছে। একদিকে প্রার্থী হচ্ছেন শশী থারুর, অন্যদিকে মল্লিকার্জুন খাড়্গে। বিভিন্ন দিক থেকেই আসন্ন নির্বাচন ঐতিহাসিক হতে চলেছে। দীর্ঘ কয়েক দশক বাদে কংগ্রেস সভাপতি পদের দৌড়ে নেই গান্ধী পরিবারের কোনও সদস্যের নাম। নির্বাচনে নিরপেক্ষ থাকার লক্ষ্যে গান্ধীরা ভোটও দেবেন না বলে শোনা যাচ্ছে। কিন্তু, কীভাবে হয় কংগ্রেস নির্বাচন? কারা ভোট দেয়? আসুন জেনে নেওয়া যাক কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনের বিষয়ে সবকিছু –

নির্বাচন প্রক্রিয়া

কংগ্রেসের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৮-তে সভাপতি পদের নির্বাচন পরিচালনার যাবতীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় ব্লক স্তর থেকে বিভিন্ন স্তরের কংগ্রেস কমিটিগুলি অংশ নেয়। ব্লক স্তরের কমিটিগুলি প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির প্রতিনিধি নির্বাচন করে। প্রদেশ কংগ্রেস কমিটিগুলি, অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটির প্রতিনিধিদের নির্বাচন করে। প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির প্রাক্তন সভাপতিরা, যাঁরা অন্তত এক বছর ধরে সেই পদে ছিলেন এবং এখনও দলের সদস্য, তাঁরা পদাধিকার বলেই এআইসিসি-তে জায়গা পান।

দলীয় সভাপতি পদে মনোনয়নের প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর প্রার্থীদের নাম প্রকাশ করেন দলের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটির চেয়ারম্যান। সভাপতি পদে নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হওয়ার জন্য অন্তত ১০ জন প্রতিনিধি লাগে প্রস্তাবক হিসেবে। মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর সাত দিন সময় দেওয়া হয় প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য। যারা নাম প্রত্যাহার করবেন না, শেষ পর্যন্ত তাঁদেরই নাম ব্যালটে থাকে। যদি, মনোনয়ন প্রত্যাহারের পর শুধুমাত্র একজন প্রার্থীর নাম অবশিষ্ট থাকে, তাহলে আর নির্বাচনের প্রয়োজন হয় না। ওই ব্যক্তিকেই নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়। অন্যথায় নির্দিষ্ট দিনে প্রতিটি রাজ্যের প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সদর দফতরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। প্রত্যেক প্রতিনিধির একটি করে ভোটাধিকার রয়েছে। গণনার পর সর্বোচ্চ ভোট যে প্রার্থী পান, তাঁকেই পরবর্তী সভাপতি হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

কারা ভোট দিতে পারেন?

দলের ইলেক্টোরাল কলেজে প্রায় ৯ হাজার প্রতিনিধি রয়েছেন যাদের সভাপতি নির্বাচনে ভোটাধিকার রয়েছে।

আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থী কারা?

রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট থেকে শুরু করে দিগ্বিজয় সিং-এর নামও শোনা যাচ্ছিল প্রার্থী হিসেবে। তবে পরে তাঁরা দুজনেই এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ান। শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন শশী থারুর, মল্লিকার্জুন খাড়্গে এবং ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মন্ত্রী কে এন ত্রিপাঠি। স্ক্রুটিনির পর টেকনিক্যাল কারণে বাতিল হয় কে এন ত্রিপাঠির মনোনয়ন। ফলে চূড়ান্ত লড়াইয়ে সামিল থারুর এবং খাড়্গে। সূত্রের খবর, গান্ধী পরিবারের পক্ষ থেকে চাওয়া হয়েছিল, আরও অনেক বেশি প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুন। এছাড়া দলের কোনও বাছাই করা সরকারি প্রার্থী নেই বলেও দাবি করেছেন তাঁরা। কিন্তু, মল্লিকার্জুন খাড়্গেই দলের হাইকমান্ডের বাছাই প্রার্থী বলে শোনা যাচ্ছে।

শেষ কবে হয়েছিল নির্বাচন?

২২ বছর আগে, ২০০০ সালের নভেম্বরে শেষবার কংগ্রেস সভাপতি পদের জন্য নির্বাচন হয়েছিল। সনিয়া গান্ধীর বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলেন জিতেন্দ্র প্রসাদ। তবে লজ্জাজনক হার হয়েছিল তাঁর। তারপর থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সনিয়া গান্ধী এবং রাহুল গান্ধী এই পদে নির্বাচিত হয়েছেন। ২০০০ সালের আগে, ১৯৯৭ সালেও সনিয়াকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন সীতারাম কেশরী, শরদ পওয়ার এবং রাজেশ পাইলট। তিনজনেরই হার হয়েছিল।