Narendra Modi wants strong opposition: ‘শক্তিশালী বিরোধী চাই, আমি কারোর বিরুদ্ধে নই’
শুক্রবার (৩ জুন) উত্তর প্রদেশের কানপুরে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের গ্রামে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, তিনি দেশে একটি শক্তিশালী বিরোধী পক্ষ চান। তবে, সেই দলকে দেশের গণতন্ত্রের প্রতি নিবেদিত হতে হবে।
নয়া দিল্লি: বিরোধীদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে কাজে লাগিয়ে বিরোধী কণ্ঠ রোধ করতে চাইছে মোদী সরকার। শুক্রবার (৩ জুন) কিন্তু, একেবারে স্ট্রেট ব্যাটে সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিন তিনি এসেছিলেন উত্তর প্রদেশের কানপুরে। কানপুর দেহাতে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের পৈত্রিক গ্রাম, পারাউঙ্খ গ্রামে এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। সেখানেই তিনি জানিয়েছেন, তিনি মোটেই বিরোধীশূন্য দেশ চান না। বরং, তিনি চান একটি শক্তিশালী বিরোধী পক্ষ। তবে, সেই দলকে দেশের গণতন্ত্রের প্রতি নিবেদিত হতে হবে। তিনি আরও জানিয়েছেন, কোনও রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তির বিরুদ্ধে তাঁর কোনও ব্যক্তিগত অসূয়া নেই। প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, ‘আমি এই দেশে শক্তিশালী বিরোধী চাই, আমি কারোর বিরুদ্ধে নই।’
এদিন, পারাউঙ্খ গ্রামে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ এবং তাঁর স্ত্রী। বক্তৃতা দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী ফের একবার রাজনৈতিক দলে পরিবারবাদের বিরুদ্ধে সরব হন। অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক দলগুলির পরিবারতন্ত্রের জন্যই যুব সমাজের অনেকেই রাজনীতিতে আসে না। মোদী বলেন, ‘কোনও রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তির বিরুদ্ধে আমার কোনও অসূয়া নেই। আমি এই দেশে গণতন্ত্রের প্রতি নিবেদিত একটি শক্তিশালী বিরোধী চাই। আমি চাই পরিবারবাদের গেরোয় আটকে থাকা দলগুলি এই রোগ থেকে মুক্ত হোক। তাদের এই রোগ থেকে সারিয়ে তুলতে চাই। একমাত্র তাহলেই ভারতের গণতন্ত্র শক্তিশালী হবে, দেশের যুবরা রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার সুযোগ পাবে।’
In a special gesture, President Ram Nath Kovind received Prime Minister Narendra Modi on arrival in his native village Paraunkh in Kanpur Dehat. pic.twitter.com/GRzE8BTLGv
— President of India (@rashtrapatibhvn) June 3, 2022
পরিবারতন্ত্রের কাঁটা না থাকলে কী হতে পারে, তা বোঝানোর জন্য খোদ রাষ্ট্রপতির উদাহরণ দেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। পারাউঙ্খ গ্রাম থেকে রামনাথ কোবিন্দ রাষ্ট্রপতি ভবনে পৌঁছে গিয়েছেন। একইভাবে, গ্রামে জন্মালেও ভারতের যে কোনও দরিদ্রতম ব্যক্তি রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, রাজ্যপাল বা মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন। এটাই ভারতীয় গণতন্ত্রের ম্যাজিক। প্রধানমন্ত্রী আরও দাবি করেন, শুধু রাজনীতির ক্ষেত্রে নয়, যে কোনও ক্ষেত্রেই মেধার বিকাশে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে পরিবারতন্ত্র। প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগেই তেলঙ্গানায় গিয়ে ‘পরিবারবাদ’ নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও-কে আক্রমণ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। পরিবারতন্ত্র নিয়ে জাতীয় কংগ্রেস এবং তৃণমূল কংগ্রেসকেও বহুবার আক্রমণ করেছেন তিনি।
শক্তিশালী বিরোধী নিয়ে এমন এক সময়ে নরেন্দ্র মোদী এই মন্তব্য করলেন, যখন প্রায় সব বিরোধী দলই একযোগে তাঁর বিরুদ্ধে ‘এজেন্সি লাগিয়ে বিরোধী স্বর বন্ধ করার’ অভিযোগ তুলছে। ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় রাহুল ও সনিয়া গান্ধীকে ইডি সমন পাঠানোর পর কংগ্রেস বলেছে, ‘ব্রিটিশ সরকারের মতোই ন্যাশনাল হেরাল্ডের কণ্ঠ রোধ করতে চাইছে মোদী সরকার।’ দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈনকে গ্রেফতারের পর, আপ দলের পক্ষ থেকে একই ধরনের অভিযোগ করা হয়েছে। তারা বলেছে, ‘হিমাচল প্রদেশে সত্যেন্দ্র জৈনের কার্যকলাপ বন্ধ করতেই এজেন্সিকে কাজে লাগানো হয়েছে।’ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেসের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় বিভিন্ন সময়ই কেন্দ্রীয় সংস্থাকে কাজে লাগিয়ে দলীয় নেতাদের হেনস্থা করার অভিযোগ করে থাকেন। কেসিআর আবার অভিযোগ করেছেন তেলঙ্গানাকে অর্থনৈতিকভাবে দমিয়ে রাখতে চাইছেন মোদী। আর দিন কয়েক আগে এইচডি কুমারস্বামী বলেছিলেন, ভারতের সবথেকে বড় শত্রু ‘সাম্প্রদায়িক ভেদাভেদের রাজনীতি, পরিবারতন্ত্র নয়’।