অস্থিরতার ইঙ্গিত উপত্যকায়, বাড়ছে হামলা, ঢুকছে জঙ্গিরা; গোয়েন্দা রিপোর্টে অশনি সঙ্কেত
গোপন সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই বেশ বড় নাশকতার ছক কষে কাশ্মীর উপত্যকায় পা রেখেছে ৬ টি জঙ্গি গোষ্ঠী।
নয়া দিল্লি: আফগানিস্তান থেকে আমেরিকা সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের জন্য ভুগতে হতে পারে ভারতকেও। এর প্রধান কারণ হল, ইতিমধ্যেই জঙ্গি এবং সন্ত্রাসবাদের স্বর্গরাজ্য হওয়ার দিকে অগ্রসর হয়েছে আফগানিস্তান। আর তালিবান যদি প্রত্যক্ষভাবে ভারতের বিরুদ্ধে কোনও ষড়যন্ত্র নাও করে, তবে আফগানিস্তানের জমিকে ব্যবহার করেই ভারতের ক্ষতি করার চেষ্টা চালিয়ে যাবে জঙ্গিরা। যেই চেষ্টা এখন থেকেই পুরোদমে শুরু হয়ে গিয়েছে। গোপন সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই বেশ বড় নাশকতার ছক কষে কাশ্মীর উপত্যকায় পা রেখেছে ৬ টি জঙ্গি গোষ্ঠী। বর্তমানে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে আসা তথ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গোয়েন্দা সূত্র জানাচ্ছে, গত এক মাস ধরে ২৫-৩০ জন জঙ্গিদের একটি দল ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীকে ব্যস্ত রেখেছে। সেই সুযোগে জঙ্গিদের ওই ৬ টি দল বড় কিছু পরিকল্পনা করে ভারতে ঢুকে পড়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, আফগানিস্তানে ঘটে চলা ধাপে ধাপে ঘটনাপ্রবাহের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জম্মু কাশ্মীরের পরিস্থিতিও ধীরে ধীরে বদলে গিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সরকারি আধিকারিক জানিয়েছেন, মাসখানেক ধরে তাঁরা হিংসার ঘটনায় আধিক্য লক্ষ্য করছেন। গত একমাস ধরে প্রায় প্রত্যেকদিনই নিরাপত্তারক্ষীদের নিশানায় নিয়ে আইডি বিস্ফোরণ, বা কোনও রাজনৈতিক নেতাকে খুনের ঘটনা ঘটছে।
গত ফেব্রুয়ারি মাসের পর থেকে সীমান্ত-সংলগ্ন জঙ্গিদের যে লঞ্চপ্যাডগুলি রয়েছে, সেগুলিও ক্রমশ সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে জানা গিয়েছে সূত্র মারফৎ। নিয়ন্ত্রণ রেখার ওপারে থাকা যে ছাউনিগুলিতে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনী তা ধ্বংস করে দিয়েছিল, সেগুলি ক্রমশ নতুন করে গড়ে উঠেছে। এমনকী, কমপক্ষে ৩০০ জঙ্গি সীমান্তবর্তী সেই ছাউনিগুলিতে দখল নিয়ে ফেলেছে বলেও জানিয়েছে গোয়ন্দা সূত্র। এহেন স্পর্শকাতর পরিস্থিতির বিষয়ে জানার সঙ্গে সঙ্গেই অবশ্য সেনার পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে। সব ধরনের পরিস্থিতির জন্য ভারত তৈরি বলে জানিয়েছেন সেনার এক শীর্ষ আধিকারিক।
আফগানিস্তানে তালিবানের দখল নেওয়া যে কাশ্মীরি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নতুন করে ব্যাপকভাবে উদ্বুদ্ধ করেছে, সে কথাও মনে করিয়ে দেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সেন কর্তা। তিনি বলেন, “সম্প্রতি জম্মু কাশ্মীরে একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে নিজের বাড়িতে ফিরে এসেছে কয়েকজন যুব। এবং তাদের রীতিমতো রাজকীয় অভ্যর্থনা জানানো হচ্ছে। কারণ তারা তালিবানের হয়ে লড়তে গিয়েছিল।” এই ধরনের ভিডিয়ো কাশ্মীরি যুবকদের থেকে দূরে কী ভাবে রাখা যায়, বর্তমানে সেটাই মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে সেনাবাহিনীর জন্য।
আরও একটি বিষয় জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের রাতের ঘুম কেড়ে রেখেছে। তা হল- মাস কয়েক আগেই উপত্য়কার প্রায় ৬০ জন যুবক কোনও কাজের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে যায়। তারপর থেকে এখনও পর্যন্ত কারোর খোঁজ মেলেনি। সেই যুবকরা না জঙ্গি দলে নাম লিখিয়ে বসে, এটাই ভাবাচ্ছে প্রশাসনকে। আরও পড়ুন: আবার নতুন প্রজাতি! করোনার C.1.2 ভ্যারিয়েন্টকে ঘিরে উদ্বেগ, ফাঁকি দিতে পারে টিকাকে