‘এর চেয়ে মরে যাওয়া শ্রেয়’, জেলবন্দি থেকে শারীরিক অবস্থার চরম অবনতি স্ট্যান স্বামীর
শুনানি চলাকালীন স্ট্যান স্বামী বলেন, "আমায় আট মাস আগে সম্পূর্ণ সচল ছিলাম। একা একাই স্নান করতে পারতাম, হাঁটতে পারতাম, এমনকি লিখতেও পারতাম। কিন্তু যতদিন যাচ্ছে, একে একে সব ক্ষমতা হারিয়ে যাচ্ছে। এখন ঠিকমতো খেতেও পারিনা। কাউকে চামচ দিয়ে খাইয়ে দিতে হয়।"
মুম্বই: সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার বদলে তিনি কষ্ট পেয়ে মরে যাবেন, এমনটাই জানালেন ভীমা-কোরেগাঁও হিংসার ঘটনায় ধৃত খ্রিস্টান মিশনারি স্ট্যান স্বামী। শুক্রবার বম্বে হাইকোর্টে মামলার শুনানি চলাকালীন তিনি বলেন, গ্রেফতারির পর থেকেই তাঁর স্বাস্থ্যের ক্রমাগত অবনতি হয়েছে। তবে মুম্বইয়ের সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার বদলে তিনি রোগে ভুগে মারা যাওয়া বেশি পছন্দ করবেন।
শুক্রবার এলগার পরিষদ-মাওবাদী সংযোগ মামলায় ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে বিচারপতি এসজে কাঠাওয়ালা ও এসপি তাভাডের সামনে পেশ করা হয় স্ট্যান স্বামীকে। বর্তমানে তিনি নভি মুম্বইয়ের তালোজা জেলে বন্দি রয়েছেন।
জেল কর্তৃপক্ষের তরফে মুম্বইয়ের জেজে হাসপাতাল থেকে স্ট্যান স্বামীর স্বাস্থ্য রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়। সেই রিপোর্টে জানানো হয়েছে, স্ট্যান স্বামী দুই কানেরই শ্রবণশক্তি খুবই কম, ওনার পায়ের উপরিভাগে পেশি দুর্বল ও ক্রমাগত কাঁপুনি হয়। ওনার হাঁটার জন্য লাঠি বা হুইলচেয়ারের প্রয়োজন। বাকি সবকিছু মিলিয়ে ওনার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল।
তবে শুনানি চলাকালীন স্ট্যান স্বামী বলেন, “আমায় আট মাস আগে গ্রেফতার করে নিয়ে আসা হয়। যখন আমি তালোজা জেলে আসি, তখনও আমার শরীর সম্পূর্ণ সচল ছিল। কিন্তু বিগত আটমাস ধরে আমার শারীরিক অবস্থার ক্রমাগত অবনতিই হয়েছে। আটমাস আগে আমি একা একাই স্নান করতে পারতাম, হাঁটতে পারতাম, এমনকি লিখতেও পারতাম। কিন্তু যতদিন যাচ্ছে, একে একে সব ক্ষমতা হারিয়ে যাচ্ছে। এখন ঠিকমতো খেতেও পারিনা। কাউকে চামচ দিয়ে খাইয়ে দিতে হয়।”
এর প্রেক্ষিতেই আদালতের তরফে জিজ্ঞাসা করা হয় যে তিনি জেজে হাসপাতালে ভর্তি হতে চান কিনা। কিন্তু হাসপাতালে ভর্তি হতে অস্বীকার করে বলেন, ” কী ওষুধ দিয়েছে আমায় জেজে হাসপাতাল? আমি আগেও ওই হাসপাতালে দুইবার ভর্তি হয়েছি, আমি ওখানের ব্যবস্থা জানি। এর থেকে আমি রোগে কষ্ট পেয়ে মরে যাওয়া বেশি পছন্দ করব।” হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার বদলে তিনি অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদন জানান। যদিও আদালতের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, শুনানি হাসপাতালে ভর্তি হওয়া নিয়ে হচ্ছে, জামিনের আবেদন নিয়ে নয়।
ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা ৮৩ বছরের খ্রিস্টান মিশনারি স্ট্যানকে গত বছরের অক্টোবর মাসে গ্রেফতার করে এনআইএ। তাঁর বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে পুণের ভীমা-কোরেগাঁওয়ে মাওবাদীদের সাহায্যে হিংসা ছড়ানোর অভিযোগ করা হয়েছে। ঘটনায় মাওবাদী ঘনিষ্ঠ সংগঠন এলগার পরিষদও জড়িত ছিল বলে অভিযোগ। তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ-র তরফে স্ট্যান স্বামীর বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগও করা হয়।
আরও পড়ুন: ৪ দশক জল সীমানা পাহারা দিয়ে পতাকা নামাল আইএনএস রাজপুত