Bombay HC: চুম্বন, হাত বোলানো ”অস্বাভাবিক অপরাধ’ নয়! পর্যবেক্ষণ বোম্বে হাইকোর্টের

Bombay High Court: ঠোঁটে চুম্বন করা এবং গোপনাঙ্গ স্পর্শ করা ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারার অধীনে সংঙ্গায়িত 'অস্বাভাবিক অপরাধ' নয়। এক নাবালককে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত এক ব্যক্তিকে জামিন দেওয়ার সময় এই গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ শোনালো বোম্বে হাইকোর্ট।

Bombay HC: চুম্বন, হাত বোলানো ''অস্বাভাবিক অপরাধ' নয়! পর্যবেক্ষণ বোম্বে হাইকোর্টের
অভুতপূর্ব পর্যবেক্ষণ বোম্বে হাইকোর্টের
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 15, 2022 | 11:57 PM

মুম্বই: ঠোঁটে চুম্বন করা এবং গোপনাঙ্গ স্পর্শ করা ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারার অধীনে সংঙ্গায়িত ‘অস্বাভাবিক অপরাধ’ নয়। গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ বোম্বে হাইকোর্টের। সম্প্রতি এক নাবালককে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত এক ব্যক্তিকে জামিন দেওয়ার সময় এই পর্যবেক্ষণটি শোনান বিচারপতি অনুজা প্রভুদেসাই। ঘটনাটি গত বছরের। নির্যাতিতর বয়স ছিল ১৪ বছর। ছেলেটির বাবা এই ঘটনার বিষয়ে পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তারপরই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

আদালতের পর্যবেক্ষণ

সূত্রের খবর, অভিযুক্তকে জামিন দেওয়ার সময় বিচারপতি অনুজা প্রভুদেসাই বলেন, ‘নির্যাতিতর বক্তব্যের পাশাপাশি এফআইআর থেকে প্রাথমিকভাবে ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে যে, আবেদনকারী (জামিনের) নির্যাতিতর গোপনাঙ্গ স্পর্শ করেছিল এবং তার ঠোঁটে চুম্বন করেছিল। আমার বিবেচনায় অনুযায়ী, এটা ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারার অধীনে প্রাথমিকভাবে অপরাধ বলে গণ্য হবে না’।

কী ঘটেছিল ?

এফআইআর অনুসারে, ঘটনাটি মুম্বইয়ের একটি শহরতলির। নির্যাতিত ছেলেটির বাবার আলমারি থেকে কিছু টাকা খোয়া গিয়েছিল। ছেলেকে জিজ্ঞাসা করাতে, নাবালকটি তাঁকে বলেছিল, অনলাইন গেম রিচার্জ করার জন্য সে ওই টাকা খরচ করে ফেলেছে। নাবালকটির বাবা আরও জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারেন, তাঁর ছেলে মোবাইলে ‘ওলা পার্টি’ নামে একটি অনলাইন গেম খেলে। এক দোকানে সেই গেম রিচার্জ করে দেওয়া হয়। সে প্রায়ই সেই দোকানে যায়।

এরপরই, নাবালকটি তার বাবাকে বলে, একবার রিচার্জ করতে ওই দোকানে যাওয়ার পর, ওই দোকানি ব্যক্তি, তার ঠোঁটে চুমু খেয়েছে। সেই সঙ্গে তার গোপনাঙ্গও স্পর্শ করেছে। এই কথা জেনেই ছেলেটির বাবা পুলিশের কাছে গিয়েছিলেন। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যৌন অপরাধ থেকে শিশুদের প্রতিরোধ আইন বা পকসো-র প্রাসঙ্গিক ধারায় এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারা-এর অধীনে এফআইআর নথিভুক্ত করেন। উল্লেখ্য ভারতীয় দণ্ডবিধির এই ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। এই ধারায় অভিযুক্তদের জামিন পাওয়াও কঠিন হয়।

কেন জামিন পেল অভিযুক্ত?

তবে, এই ক্ষেত্রে বোম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি অনুজা প্রভুদেসাই অভিযুক্তকে জামিন দিয়েছেন। কেন জামিন দিলেন? বিচারপতি বলেন, ওই নাবালক যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করেছে। কিন্তু মেডিকেল পরীক্ষার রিপোর্টে তার প্রমাণ মেলেনি। বিচারপতি অনুজা প্রভুদেসাই আরও বলেন, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পকসো ধারায় যে অভিযোগগুলি আনা হয়েছে, তাতে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের সাজা হতে পারে। অভিযুক্ত জামিনও পেতে পারেন।

বর্তমান মামলায়, অস্বাভাবিক যৌনতার অভিযোগটি প্রযোজ্য নয়। তাছাড়া, অভিযুক্ত ইতিমধ্যেই এক বছরের জন্য হেফাজতে ছিল এবং এই মামলার বিচার শীঘ্রই শুরু হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। এরপরই বিচারপতি প্রভুদেসাই বলেন, ‘উপরোক্ত তথ্য এবং পরিস্থিতি বিবেচনায়, আবেদনকারী জামিন পাওয়ার যোগ্য’। অভিযুক্তকে অবশ্য ৩০,০০০ টাকার ব্যক্তিগত বন্ড দিতে হয়েছে।

৩৭৭ ধারা কী?

ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারাটি ‘অস্বাভাবিক অপরাধ’ বিষয়ক। এতে বলা হয়েছে, কোনও ব্যক্তি স্বেচ্ছায় প্রকৃতির নিয়মের বিরুদ্ধে কোনও পুরুষ, মহিলা বা প্রাণীর সঙ্গে দৈহিক মিলন করলে, তাকে আজীবন কারাদণ্ড অথবা দশ বছর পর্যন্ত যে কোনও মেয়াদের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হবে এবং এছাড়াও জরিমানা করা হবে। ধারাটির ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, কোনও পেনিট্রেশন বা অনুপ্রবেশ ঘটানো হয়েছে প্রমাণ করতে পারলেই, এই ধারায় আওতায় তা অপরাধ বলে গন্য করা হবে না। অর্থাৎ, অনুপ্রবেশ না ঘটানো হলে, ভারতীয় দণ্ডবিধির এই ধারায় দৈহিক মিলন বলা হবে না।