Maharashtra Assembly Election 2024: গোলকধাঁধার থেকেও জটিল! মহারাষ্ট্রের ভোটে কে কার হয়ে লড়ছে? কেই বা কার বিরুদ্ধে?
Maharashtra Election 2024: মহারাষ্ট্রে এসবের বাইরেও যেটা আছে, সেটা হল রহস্য। শরদ পাওয়ার, অজিত পাওয়ার শিবির। উদ্ধব ঠাকরে, একনাথ শিণ্ডে, দেবেন্দ্র ফড়নবীস শিবির। আরও কত আছে কে, জানে। কে, কার হয়ে মাঠে নেমেছেন? কার মনে কী ঘুরছে? কোন নেতা কী চাইছেন? ভোটের দিন কোন কে, কী খেলা খেলবেন? সবটাই রহস্য।
মুম্বই: আগামী বুধবার মহারাষ্ট্রে বিধানসভা ভোট। সাম্প্রতিককালে সম্ভবত দেশের সবচেয়ে হাই-প্রোফাইল ভোট। অথচ একটি সংস্থা বাদে দেশের প্রথম সারির কোনও সংস্থাই ওপিনিয়ন পোল করেনি। এক্সিট পোল হয়তো হবে, তা সেটা অনেকটাই নিঃশব্দে। সো-কলড বিশেষজ্ঞরাও এখনও পর্যন্ত চুপচাপ। গত দেড় বছরে মহারাষ্ট্রের রাজনীতি যেভাবে ওলটে-পালটে গিয়েছে, চেনা সব সমীকরণ বদলে গিয়েছে, তাতে মারাঠা-ভূমে সম্ভাব্য ফল নিয়ে কেউই খুব একটা উচ্চবাচ্য করছেন না। সে ভালো কথা। লোকসভা ভোট ও তার পর হরিয়ানা নিয়ে পোল পন্ডিতদের যেভাবে মুখ পুড়েছে, তাতে তাঁদের কিছুদিন মুখ বন্ধ রাখাই ভাল।
তবে এসব নেই বলে, ভাববেন না, যে ভোটটা ম্যাড়মড়ে হচ্ছে। ওখানেও নাটকের কোনও অভাব নেই। নরেন্দ্র মোদীর উদ্বোধন করা শিবাজির মূর্তি ভেঙে পড়া নিয়ে জমজমাট নাটক। এদিন শরদ পাওয়ার অভিযোগ করলেন, মোদী অপয়া। তিনি উদ্বোধন করেছেন বলেই মূর্তি ভেঙে পড়েছে। জবাবে মুম্বই- ওরলি সি-লিঙ্কের এন্ট্রি গেটের আগে টানা লাইভ স্ক্রিনিং করল বিজেপি। সঙ্গে সিনেমার ধাঁচে শুটিং। নরেন্দ্র মোদীর উদ্বোধন করা প্রকল্পে মানুষ কতটা উপকৃত সেটা বোঝাতেই বলিউডের ক্রু নিয়ে শুটিং।
মহারাষ্ট্রে এসবের বাইরেও যেটা আছে, সেটা হল রহস্য। শরদ পাওয়ার, অজিত পাওয়ার শিবির। উদ্ধব ঠাকরে, একনাথ শিণ্ডে, দেবেন্দ্র ফড়নবীস শিবির। আরও কত আছে কে, জানে। কে, কার হয়ে মাঠে নেমেছেন? কার মনে কী ঘুরছে? কোন নেতা কী চাইছেন? ভোটের দিন কোন কে, কী খেলা খেলবেন? সবটাই রহস্য।
ভোটের সাতদিন আগে অজিত পওয়ার দাবি করছেন, ২০১৯ সালে বিধানসভা ভোটের পর হয়তো শরদ পওয়ার এনডিএ-তেই যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলেছিলেন। ২০১৯ সালে মহারাষ্ট্র বিধানসভায় জোট করে লড়েছিল বিজেপি ও শিবসেনা। ভোটে তাঁদের জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতাও পায়। কিন্তু শিবসেনার মুখ্যমন্ত্রীত্বের দাবি মানতে রাজি হয়নি বিজেপি। জোট ভেঙে যায়। রাজনৈতিক মহলকে চমকে দিয়ে বিজেপিকে সমর্থনের ঘোষণা করেন অজিত পওয়ার। যদিও এনসিপি থেকে প্রয়োজনীয় বিধায়ক ভাঙিয়ে আনতে পারেননি। সরকারও বাঁচানো যায়নি। সেই সময় বিদ্রোহ ও দলবিরোধী কাজের অভিযোগে অজিত পওয়ারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেয় এনসিপি। কয়েক মাসের মধ্যে অজিতকে দলে ফিরিয়ে উপ-মুখ্যমন্ত্রীর পদ দেন শরদ পাওয়ার।
৫ বছর পর অজিত পওয়ার বলছেন, তিনি বিদ্রোহ করে এনসিপি ভেঙে বেরিয়ে আসেননি। তাঁর দল ভাঙার পিছনে কাকা শরদ পওয়ারের সমর্থন ছিল। অজিত বলছেন, কাকা শরদ ও গৌতম আদানির সঙ্গে কথা বলেই যা করার করেছি। আমার দল ছাড়া ও বিজেপির সঙ্গে জোটের ব্যাপারে ওঁরা মধ্যস্থতা করেছিলেন। অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকের ব্যাপারেও দুজনের ভূমিকা ছিল। ২০২৩ সালে ফের এনসিপি ভেঙে বেরোন অজিত। তখন কী হয়েছিল? অজিতের দাবি, তিনি দল ছাড়বেন শুনে শরদ আপত্তি করেননি। তাঁর কথায়, আমার মনে হয়েছিল, আমি যা করছি, তাতে ওঁর সম্মতি আছে। কিন্তু শরদ পওয়ার নিজের দল ভাঙতে সায় দেবেন কেন? অজিত নিজে এই প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছেন। অজিত ঘনিষ্ঠ এক এনসিপি নেতার দাবি, রাজনীতির ম্যারপ্যাঁচে অন্যদের থেকে অনেকটা এগিয়ে থাকেন শরদ পওয়ার। তিনি আগেই বুঝেছিলেন, মেয়ে সুপ্রিয়া ও ভাইপো অজিতের মধ্যে সংঘাতে হবেই। এনসিপিতে ভাঙনও অনিবার্য। আগে থেকেই দুজন আলাদা হয়ে গেলে বরং দলকে ফের জোড়া লাগাতে সুবিধা হবে।