‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ ডিভোর্স চাওয়ার প্রধান কারণ হতে পারে, ঐতিহাসিক রায় কেরল হাইকোর্টের

শুক্রবার কেরলের ডিভিশন বেঞ্চ নিজের রায়ে জানায়, 'বৈবাহিক ধর্ষণ' বিবাহ-বিচ্ছেদের দাবি জানানোর যুক্তিযুক্ত কারণ হতে পারে।

'বৈবাহিক ধর্ষণ' ডিভোর্স চাওয়ার প্রধান কারণ হতে পারে, ঐতিহাসিক রায় কেরল হাইকোর্টের
ফাইল ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 06, 2021 | 8:14 PM

তিরুঅনন্তপুরম: ভারতীয় দণ্ডবিধিতে ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ কোনও শাস্তিযোগ্য অপরাধ নয়। বিয়ের পর স্বামীর হাতেই ধর্ষিতা হতে পারেন কোনও স্ত্রী, এমনটা অপরাধের কথা উল্লেখ করে শাস্তির বিধান এখনও পর্যন্ত নেই ভারতীয় আইনে। কিন্তু ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ বিবাহ-বিচ্ছেদের কারণ হতে পারে। শুক্রবার এমনই ঐতিহাসিক রায় দিল কেরল হাইকোর্ট। শুক্রবার কেরলের ডিভিশন বেঞ্চ নিজের রায়ে জানায়, ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ বিবাহ-বিচ্ছেদের দাবি জানানোর যুক্তিযুক্ত কারণ হতে পারে।

‘বৈবাহিক ধর্ষণের’ ইস্যু নিয়ে একসময় একাধিকবার উত্তাল হয়েছে সংসদ। বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক হয়েছে নানাবিধ সময়ে। ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’, এই সংজ্ঞা আদৌ কতদূর প্রযোজ্য, ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ বলে কোনও অপরাধের অস্তিত্ব রয়েছে কি না, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও। এ দিন কেরল হাইকোর্টের বিচারপতি এই প্রসঙ্গেই একটি মামলার শুনানি করতে গিয়ে নিজের রায়ে জানান, বৈবাহিক ধর্ষণ বিষয়টিকে বিবাহ-বিচ্ছেদের কোনও কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয় না ঠিকই, কিন্তু এটি বিবাহ-বিচ্ছেদের অন্যতম কারণ হতে পারে। এই রায় কার্যত বৈবাহিক ধর্ষণের মামলায় নতুন সম্ভবনার দরজা খুলে দিল বলে মনে করছেন আইনজ্ঞরা।

মামলাকারী মহিলার দাবি ছিল, তাঁর স্বামীর একটি বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্ক রয়েছে। এবং ক্রমাগত তাঁর স্বামী শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছেন। এই মামলা রায়দান করতে গিয়ে নিজের পর্যবেক্ষণে বিচারপতি মহম্মদ মুস্তাক এবং বিচারপতি এডাপ্পাগাথের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, “একজন স্ত্রীর সম্মত্তি উপেক্ষা করে স্বামীর অবৈধ আচরণ বৈবাহিক ধর্ষণ বলেই বিবেচ্য। তথাপি এই ধরনের আচরণের কোনও শাস্তি দেওয়া যায় না। কিন্তু একে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের আওতায় রাখা হয়।”

হাইকোর্টের স্পষ্ট বক্তব্য, “শুধুমাত্র আইন এবং দণ্ডবিধি বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধের স্বীকৃতি দেয় না বলে সেটা কখনই আদালতকে আটকাতে পারে না একে নির্যাতন হিসেবে বিচার করে বিবাহ-বিচ্ছেদ মঞ্জুর করতে।” আদালত নিজের রায়ে আরও উল্লেখ করেছে, “আমরা প্রত্যেকদিনই এরকম একাধিক ঘটনা দেখতে পাচ্ছি। সম্ভবত ওঁর (মামলাকারী) চোখের জলের জন্য আমরাই দায়ী। এটা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। তাঁর শারীরিক বা মানসিক অধিকারকে আমাদের সম্মান করতেই হবে।” আরও পড়ুন: অভিভাবকরা বকেয়া ফি না মেটালে ব্যবস্থা নিতে পারবে স্কুল কর্তৃপক্ষ, নির্দেশ হাইকোর্টের