Hate Speech: রাজনীতির স্বার্থে ধর্মের ব্যবহার বন্ধ করুন, হেট স্পিচও বন্ধ হবে: সুপ্রিম কোর্ট

Supreme Court on Hate Speech: বুধবার শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, যেই মুহূর্তে রাজনীতি এবং ধর্ম আলাদা হয়ে যাবে এবং রাজনীতিবিদরা রাজনীতির স্বার্থে ধর্মকে ব্যবহার করা বন্ধ করে দেবেন, ঘৃণাবাচন বা হেট স্পিচও বন্ধ হবে।

Hate Speech: রাজনীতির স্বার্থে ধর্মের ব্যবহার বন্ধ করুন, হেট স্পিচও বন্ধ হবে: সুপ্রিম কোর্ট
সুপ্রিম কোর্ট।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 29, 2023 | 9:55 PM

নয়া দিল্লি: ‘হেট স্পিচ’ বা ঘৃণামূলক বক্তৃতার বিরুদ্ধে কড়া অবস্থায় নিল সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার এই বিষয়ে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, যেই মুহূর্তে রাজনীতি এবং ধর্ম আলাদা হয়ে যাবে এবং রাজনীতিবিদরা রাজনীতির স্বার্থে ধর্মকে ব্যবহার করা বন্ধ করে দেবেন, ঘৃণাবাচন বা হেট স্পিচও বন্ধ হবে। দেশের মানুষের উচিত ঘৃণাত্মক বক্তৃতা দেওয়া থেকে নিজেদের সংযত করা। হেট স্পিচের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রাজ্য সরকারগুলির ব্যর্থতা বিষয়ে এক আবেদনের শুনানির সময় এদিন, সুপ্রিম কোর্টে এই নিয়ে উত্তপ্ত বিতর্ক হয়। বিচারপতি কেএম জোসেফ বলেন, “রাজনীতিবিদরা এই ধরনের গেম খেলেন বলেই এসব ঘটছে। রাজনীতিতে ধর্মকে ব্যবহার করবেন না। রাজনীতি ও ধর্মকে আলাদা করা হলেই তা (হেট স্পিচ) বন্ধ হয়ে যাবে।” অপর বিচারপতি বিভি নাগারত্নও একের পর এক ঘৃণাবাচনের দৃষ্টান্তে গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “সভা করা অধিকারের থেকে, সভায় কী বলা বা করা হচ্ছে তা আলাদা। এই দেশের নাগরিকরা কেন অন্যকে গালি না দেওয়ার শপথ নিতে পারেন না? অন্যকে গালি দিয়ে কি লাভ?”

শাহিন আবদুল্লা নামে কেরলের এক ব্যক্তি, মহারাষ্ট্রের এক বর্তমান বিধায়কের সঙ্গে সঙ্গে মিছিল এবং জনসভায় একাধিক ব্যক্তির ঘৃণা বক্তৃতার কথা আদালতের সামনে তুলে ধরেন। আবেদনে তিনি জানান, জড়িতদের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা এবং অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এসভি রাজু, আবেদনকারীর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন। তুষার মেহতা অভিযোগ করেন, ওই ব্যক্তি নির্বাচিতভাবে দেশে একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধেই ঘৃণাত্মক বক্তৃতার ঘটনাগুলিকে নির্দেশ করেছেন। তিনি বলেন, “একটি রাজ্য এবং একটি নির্দিষ্ট ধর্মকে চিহ্নিত করার পরিবর্তে, সমস্ত সমস্যাজনক ঘটনাগুলিকে বিবেচনা করতে হবে। এই আবেদনগুলি নির্বাচিত এক সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে করা। আবেদনে কেরলের মুসলিম নেতাদের ঘৃণামূলক বক্তব্য-সহ অন্যান্য ঘটনাগুলিকেও অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।”

আদালত অবমাননার পদক্ষেপ নিতে পারে এমন কতজনের বিরুদ্ধে বিস্ময় প্রকাশ করে, বেঞ্চ বলেছে যে কেন ভারতের জনগণ অন্য নাগরিক বা সম্প্রদায়কে অপমান না করার প্রতিশ্রুতি নিতে পারে না। “প্রতিদিনের প্রান্তিক উপাদানগুলি টিভি এবং পাবলিক ফোরাম সহ অন্যদের নিন্দিত করার জন্য বক্তৃতা করছে,” ঘৃণামূলক বক্তৃতাকারীদের বিরুদ্ধে এফআইআর নথিভুক্ত করতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য বিভিন্ন রাজ্য কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অবমাননার আবেদনের শুনানি করার সময় বেঞ্চ বলেছিল। বিচারপতি জোসেফ তাঁকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, “কোনও মানুষের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল তার মর্যাদা। কিন্তু, এখন নিয়মিতভাবে সেই মর্যাদা লঙ্ঘন করা হয়। যারা এই দেশে থাকতে চান, তাঁদের বলা হয় পাকিস্তানে চলে যাও। , এরা আমাদের ভাই-বোন।” এসজি আপত্তি জানিয়ে বলেন, “এই ধরনের বিবৃতিতে ভুল ধারণা তৈরি হবে পারে যে, এই ধরনের প্রতিক্রিয়া ন্যায়সঙ্গত।”

জবাবে বিচারপতি জোসেফ বলেন, “যখন এই সব ঘটছে তখন রাষ্ট্র কেন নীরব? আমাদের দেশ এমন একটি দেশ, যে তার বহু-সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার নিয়ে সমগ্র বিশ্বকে আলোকিত করে। আমাদের সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার হল সহনশীলতা। আদালতের আদেশ স্পষ্ট, কেউ যদি এই ধরনের বক্তৃতা দেয় তবে আইন তাদের উপর এক টন ইটের মতো নেমে আসবে।” আদালত এই মামলার বিষয়ে মহারাষ্ট্র সরকারের জবাব তলব করেছে। পরবর্তী শুনানি হবে ২৮ এপ্রিল।