১৯৬৪ রুমেই লুকিয়ে রহস্য! পাঁচতারা হোটেল থেকেই তোলাবাজি চক্র চালাতেন সচিন

এনআইএ(NIA)-র এক আধিকারিক বলেন, " এক ব্যবসায়ী সচিন ভাজ়ে(Sachin Vaze)-র জন্য হোটেলটি বুক করেছিলেন। ১২ লক্ষ টাকা খরচ করে ১০০ দিনের জন্য তিনি রুমটি বুক করেছিলেন। তবে ওই ব্যবসায়ী সরাসরি নয়, এক ট্রাভেল এজেন্ট মারফত সমস্ত বুকিং করেছিলেন।"

১৯৬৪ রুমেই লুকিয়ে রহস্য! পাঁচতারা হোটেল থেকেই তোলাবাজি চক্র চালাতেন সচিন
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Updated on: Apr 02, 2021 | 6:39 PM

মুম্বই: কেঁচো খুড়তেই বেরিয়ে এল কেউটে! মুকেশ অম্বানী(Mukesh Ambani)-র বাড়ির সামনে বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি উদ্ধারের মামলার তদন্তে এ বার এনআইএ(NIA)-র হাতে মুম্বইয়ের একটি বিলাসবহুল হোটেলের তথ্য উঠে এল। জানা গিয়েছে, ওই হোটেলের ১৯৬৪ নম্বর রুম থেকেই তোলাবাজি চালাতেন মুম্বই পুলিশের ধৃত অফিসার সচিন ভাজ়ে (Sachin Vaze)। নিজে নয়, এক ব্যবসায়ী তাঁর হয়ে ১০০ দিনের জন্য ওই রুমটি বুক করেছিলেন। এতে খরচ হয়েছিল ১২ লাখ টাকা। তাঁর সঙ্গে জড়িত আরও কয়েকজন পুলিশ অফিসারকেও ইতিমধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আগামিদিনে তাঁদের গ্রেফতারির ইঙ্গিতও দিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা।

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি শিল্পপতি মুকেশ অম্বানীর বাড়ির সামনে থেকে একটি বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনার তদন্তে নেমে এনআইএ মুম্বইয়ের ক্রাইম ব্রাঞ্চের পুলিশ অফিসার সচিন ভাজ়েকে গ্রেফতার করে। এরপরই ধীরে ধীরে রহস্য উন্মোচন হতে শুরু হয়। সম্প্রতি জানা যায়, সচিন ভাজ়ে তাঁর ব্যক্তিগত গাড়ির চালককে দিয়েই অম্বানীর বাড়ির সামনে বিস্ফোরক বোঝাই গাড়িটি রাখিয়েছিলেন। সাদা ইনোভা গাড়িতে করে তিনি গোটা ঘটনার উপর নজর রাখছিলেন।

এ দিন তদন্তকারী সংস্থার তরফে জানানো হয়, মুম্বইয়ের নরিম্যান পয়েন্টে একটি পাঁচতারা হোটেলে বসেই তোলাবাজি চক্র চালাতেন সচিন ভাজ়ে। পুলিশের চোখ এড়াতে এক ব্যবসায়ীকে ওই হোটেলে রুম বুক করতে বলেছিলেন। সুশান্ত সদাশিব খামকার নামক ভুয়ো নাম এবং নকল আধার কার্ড ব্যবহার করেই তিনি হোটেলে যাতায়াত করতেন।

আরও পড়ুন: Corona Cases and Lockdown News live: হাসপাতালে ভর্তি সচিন, লকডাউনে ‘না’ কেজরীবালের

এনআইএ-র এক আধিকারিক বলেন, ” এক ব্যবসায়ী সচিন ভাজ়ের জন্য হোটেলটি বুক করেছিলেন। ১২ লক্ষ টাকা খরচ করে ১০০ দিনের জন্য তিনি রুমটি বুক করেছিলেন। তবে ওই ব্যবসায়ী সরাসরি নয়, এক ট্রাভেল এজেন্ট মারফত সমস্ত বুকিং করেছিলেন।”

হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে জানা গিয়েছে, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি তিনি একটি ইনোভা গাড়িতে করে নরিম্যান পয়েন্টের ওই হোটেলে এসেছিলেন। ২০ ফেব্রুয়ারি তিনি একটি ল্যান্ড ক্রুজার গাড়িতে করে হোটেল ছেড়ে চলে যান। চারদিনের মধ্যে গাড়ি বদলের রহস্য উদধাটন করতে গিয়েই এনআইএ জানতে পারে, ওই দিনগুলিতেই সচিন ভাজ়ে ও তাঁর দলের সদস্যরা মুম্বইয়ের বিভিন্ন নাইট ক্লাবে লাইসেন্স যাচাই করতে হানা দিয়েছিলেন। দুয়ে দুয়ে চার করতে বেশিক্ষণ লাগেনি তদন্তকারী সংস্থার।

বৃহস্পতিবারও এনআইএ দক্ষিণ মুম্বইয়ের একটি হোটেল, ক্লাব ও ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালায়। মুম্বই বিমানবন্দর থেকে সচিন ভাজ়ের এক মহিলা সতীর্থকেও আটক করা হয়। সূত্রের খবর, গতকাল যে ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালানো হয়েছিল, তা ওই মহিলারই। এনআইএ জানিয়েছে, অম্বানীকাণ্ডে মোট ৩৫ জন পুলিশকর্মীকে জেরা করা হয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকজনের বয়ান রেকর্ডও করা হয়েছে। তাঁদের হাতে পুলিশ বিভাগের বেআইনি কার্যকলাপের একাধিক প্রমাণ উঠে এসেছে বলেও দাবি। দুর্নীতি সংক্রান্ত এই তথ্য প্রমাণগুলি সংশ্লিষ্ট বিভাগের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলেই জানিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা।

এ দিকে, সচিন ভাজ়ের বিরুদ্ধে তোলাবাজির প্রমাণ মিলতেই জোরাল হচ্ছে প্রাক্তন পুলিশকর্তা পরমবীর সিং(Param Bir Singh)-র অভিযোগ। তিনি মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেকে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ (Anil Deshmukh) প্রতিমাসে ১০০ কোটি টাকা তোলাবাজির লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছিলেন ধৃত পুলিশ অফিসার সচিন ভাজ়েকে।

আরও পড়ুন: স্বামী করোনা আক্রান্ত হতেই নিভৃতবাসে গেলেন প্রিয়ঙ্কা