‘নির্বাচন যেন রক্তক্ষয়ী না হয়’, শাহকে বাংলার হাওয়া বুঝিয়ে দিয়ে গেলেন রাজ্যপাল
বঙ্গ ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যপাল জানিয়ে দিলেন, তিনি কোনও দলের ধ্বজাধারী নন। রাজ্যপাল বলেন, "আমি শুধু সংবিধানের নির্দেশ মানি।"
নয়া দিল্লি: শুক্রবার রাতে দিল্লি উড়ে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। কী নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হবে তাঁর! এই নিয়ে জোর জল্পনা ছিল গোটা দেশ জুড়ে। শনিবার ২ ঘন্টার বৈঠকের পর জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankhar) ৬ কৃষ্ণ মেনন মার্গ থেকে বেরিয়ে গেলেন বঙ্গ ভবনে। টুইট করে জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক কার্যকলাপ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানাতেই শাহি দরবারে গিয়েছিলেন তিনি।
রাজ্যে আইনের শাসন নেই, রাজ্যপালের এই অভিযোগ দীর্ঘদিনের। আবার পাল্টা রাজ্যপালকে ‘পদ্মপাল’ বলেও খোঁচা দেয় তৃণমূল। এদিন বঙ্গ ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যপাল জানিয়ে দিলেন, তিনি কোনও দলের ধ্বজাধারী নন। বলেন, “আমি শুধু সংবিধানের নির্দেশ মানি।” পাশাপাশি এ-ও জানালেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর কোনও বিরোধ নেই। প্রসঙ্গত, দিল্লি যাওয়ার আগেই রাজভবনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ঘন্টাখানেক বৈঠক হয়েছিল রাজ্যপালের। যদিও এই বৈঠকের সূত্রপাত মমতার সৌজন্যেই। কারণ, এদিন তিনি ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাতে রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাতে গিয়েছিলেন।
Called on Union Home Minister @AmitShah today @HMOIndia
Had more than an hour interaction as regards various facets of state of affairs @MamataOfficial. Traversed issues of concern. pic.twitter.com/9WlExHWPNv
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) January 9, 2021
এদিন রবীন্দ্রনাথ, জেপি নাড্ডার কনভয়ে হামলা থেকে বহিরাগত তত্ত্ব নিয়েও রাজধানীতে বসে সুর চড়াতে দেখা গেল জগদীপ ধনখড়কে। একুশের নির্বাচন প্রসঙ্গে রাজ্যপাল বলেন, “নির্বাচন যেন রক্তক্ষয়ী না হয়। ২০২০ অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিল। অনেকে মারা গিয়েছেন। ২০২১ অনেক ভাল পরিস্থিতি।” জেপি নাড্ডার কনভয়ে হামলায় কাঠ গড়ায় দাঁড় করিয়ে ধনখড় জানান, ডায়মন্ড হারবারে অন্যায় হয়েছে। সামলাতে পারেননি। সংবিধান রক্ষা করা তাঁর দায়িত্ব। তাই তিনি সরব হয়েছেন।
বিগত কয়েক মাস ধরেই রাজ্যপাল রাজ্যে আইনের শাসন কায়েম না থাকার অভিযোগ করছেন। সাংবিধানিক ক্ষেত্রের সঙ্গে যোগসূত্র নেই এমন বিভিন্ন বিষয়ে রাজ্যপাল নাক গলিয়েছেন, এই অভিযোগও করেছে তৃণমূল। তবে রাজ্যের শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অমিত শাহকে জানাতে যাওয়ার আগে বিজেপি সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বিএল সন্তোষের সঙ্গে দেখা করেন জগদীপ ধনখড়। রাজ্যপাল এই ঘটনাকে সৌজন্য সাক্ষাৎ বলে উড়িয়ে দিলেও কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল।
আরও পড়ুন: ‘বাংলার গর্ব মমতা’ বনাম ‘বাংলার গর্ব মনীষী’
দলীয় সভা থেকে রাজ্যপাল প্রসঙ্গে কুণাল ঘোষ বলেন, ”রাজ্যপাল তাঁর পদের সাংবিধানিক মর্যাদা ধুলোয় লুটিয়ে দিচ্ছেন। তিনি একটা নির্দিষ্ট দলের অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে কাজ করছেন। চক্রান্ত করছেন তিনি। তিনি বিজেপির প্রতিনিধি হয়ে কাজ করছেন। প্রশাসনিক ভাবে সাহায্য করছেন।” পাশাপাশি ব্যারাকপুরের সভা থেকে রাজ্যপালকে ফের ‘পদ্মপাল’ বলে আক্রমণ করেন তৃণমূল নেতা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।