‘চার দেওয়ালে বন্দি থেকে খারাপ হচ্ছে পারিবারিক সম্পর্কও’, স্কুল খোলার পক্ষেই সওয়াল সংসদীয় প্যানেলের
পড়ুয়াদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকটি নজরে রেখে দ্রুত স্কুল খোলার পরামর্শ দিয়েছে সংসদীয় কমিটিও।
নয়া দিল্লি: করোনা সংক্রমণের জেরে প্রায় দেড় বছর ধরেই বন্ধ স্কুল-কলেজ। সংক্রমণ কিছুটা কমায় মাঝে একবার কয়েকটি রাজ্যে স্কুল খুললেও তা কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই বন্ধ করে দিতে হয়। দীর্ঘ সময় ধরে গৃহবন্দি থাকায় শিশুদের মনেও প্রভাব পড়ছে, এ কথা বহুবার বলেছেন চিকিৎসক-মনোবিদরা। এ বার সংসদীয় প্যানেল(Parliamentary Panel)-র তরফেও জানানো হল, করোনা সংক্রমণের জেরে স্কুল বন্ধ থাকায় শিশুরা সশরীরে উপস্থিত থেকে পঠনপাঠন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, তার প্রভাব এড়িয়ে যাওয়া যায় না। স্কুল খুললে ছাত্রছাত্রীদেরই উপকার হবে।
সংসদীয় কমিটির পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, “বিগত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে স্কুল বন্ধ থাকার জেরে পড়ুয়াদের উপর গুরুতর প্রভাব পড়েছে। বিশেষ করে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যে খারাপ প্রভাব পড়েছে। স্কুল না খোলায় যে ক্ষতি হচ্ছে, তা এড়ানো সম্ভব নয়।চার দেওয়ালের মধ্যে বন্দি থাকায় বন্ধু বান্ধবদের সঙ্গে মিশতে পারছে না পড়ুয়ারা, প্রভাব পড়ছে মা-বাবার সঙ্গে সম্পর্কেও।”
কমিটির তরফে জানানো হয়, শিক্ষাব্যবস্থায় বৈষম্য করোনা সংক্রমণের আগে থেকেই ছিল। কিন্তু লকডাউনের কারণে সেই বৈষম্য আরও প্রকট হয়ে উঠেছে। যে সমস্ত পড়ুয়াদের আর্থিক সামর্থ্য নেই, তাদের পঠনপাঠনে ব্যপক প্রভাব পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে দাড়িয়ে স্কুল খুলে দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা আরও প্রকট হয়ে উঠছে।
জুলাইয়ের শেষ ভাগ থেকেই একাধিক রাজ্যে স্কুল খুলে দেওয়া হয়েছে। পঞ্জাব, ওড়িশা সহ একাধিক রাজ্যে নবম থেকে একাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য স্কুল খোলা হয়েছে। তবে প্রাথমিক পড়ুয়াদের এখনও অনলাইন ক্লাসেই আবদ্ধ থাকতে হচ্ছে। রাজ্যেও পুজোর পর থেকে স্কুল খোলার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
চলতি সপ্তাহেই শিক্ষা, নারী ও শিক্ষার সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির তরফে রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়। সেই রিপোর্টে স্কুল খোলার ক্ষেত্রে একাধিক পরামর্শও দেওয়া হয়। এগুলি হল-
- পডুয়া, শিক্ষক ও স্কুলকর্মীদের জন্য় যথাযথ টিকাকরণ কর্মসূচি গ্রহণ, যাতে দ্রুত স্কুল খোলা যায়।
- বিকল্প দিনগুলিতে ভিন্ন ভিন্ন ক্লাসের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। নয়তো স্কুলের সময়সীমাকে দুই ভাগে ভেঙে দিয়ে বিভিন্ন ক্লাসের পঠনপাঠন শুরু করা উচিত। এরফলে একাধিক ক্লাসের পড়ুয়াদের সমাগমও হবে না।
- নিয়মিত ছাত্রছাত্রীদের থার্মাল স্ক্রিনিং করা প্রয়োজন। এছাড়াও পড়ুয়া, শিক্ষক ও স্কুলকর্মীদের আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করতে হবে।
- হাত ধোয়া, মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ববিধি বজায় রাখার মতো স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতেই হবে।
- এছাড়াও প্রতিটি স্কুলে কমপক্ষে দুটি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর রাখা ও তার ব্যবহারের জন্য় যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা উচিত। স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নিয়মিত স্কুল পরিদর্শনে যাওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। আরও পড়ুন: PM Kisan scheme: ১০ কোটি কৃষকের অ্যাকাউন্টে কিসান সম্মান নিধির টাকা পাঠাবেন প্রধানমন্ত্রী, বাদ পড়ছে না রাজ্যও!