উত্তরাখণ্ড বিপর্যয়: শতাধিক নিখোঁজ ব্যক্তিকে ‘মৃত’ বলে ঘোষণা করতে চলেছে সরকার

সাধারণত, সাত বছর কেটে যাওয়ার পর কোনও নিখোঁজ ব্যক্তিকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। কিন্তু উত্তরাখণ্ডের বিপর্যয়ের (Uttarkhand Disaster) ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

উত্তরাখণ্ড বিপর্যয়: শতাধিক নিখোঁজ ব্যক্তিকে 'মৃত' বলে ঘোষণা করতে চলেছে সরকার
১৫ দিন পেরিয়েও খোঁজ নেই ১৩৬ জনের
Follow Us:
| Updated on: Feb 23, 2021 | 3:38 PM

দেরাদুন: প্রায় ১৫ দিন পার হয়ে গিয়েছে। এখনও শতাধিক মানুষের খোঁজ নেই। উত্তরাখণ্ডের বিপর্যয়ের (Uttarkhand Disaster) পরের দিন থেকেই উদ্ধার হয়েছে একের পর এক দেহ। কখনও ছিন্ন ভিন্ন দেহও খুঁজে পেয়েছেন উদ্ধারকারীরা। তবে এখনও অনেকের সন্ধান পাওয়া যায়নি। অসহায় পরিবারগুলিও আশা ছেড়ে দিচ্ছে আসতে আসতে। পরিবারের সদস্যের মৃত্যুর কোনও প্রমাণ না থাকায় ক্ষতিপূরণের টাকাও পাচ্ছেন না তাঁরা। তাই এবার সেই সব নিখোঁজ মানুষদের মৃত বলে ঘোষণা করতে চলেছে সরকার।

সোমবার পর্যন্ত উদ্ধারকারী দল ৬৮ টি দেহ উদ্ধার করেছে। এখনও ১৩৬ জনের খোঁজ নেই। এনটিসি হাইড্রো পাওয়ার প্রজেক্টের টানেলের ভিতর থেকে ১৪ জনের পাওয়া গিয়েছিল। বাকিদের দেহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল এদিক ওদিক। গত ৭ ফেব্রুয়ারি কেদারনাথের স্মৃতি উসকে হিমবাহ ভেঙে পড়ে জোশীমঠে। আছড়ে পড়ে জলোচ্ছ্বাস। চামোলি জেলার তপোবন এলাকায় রানি গ্রামে ঋষিগঙ্গা বিদ্যুৎ প্রকল্পের উপর আচমকাই হিমবাহটি ভেঙে পড়ে। প্রবল জলের তোড়ে ভেঙে যায় ধৌলিগঙ্গা নদীর উপর বাঁধ। জলের তোড়ে ভেসে যায় আশেপাশের বহু বাড়ি, বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় গ্রাম। সেই দুঃস্বপ্ন এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি এলাকার মানুষ।

নিয়ম অনুযায়ী, সাত বছর কোনও ব্যক্তির খোঁজ না থাকলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তার ব্যতিক্রম হতে চলেছে। যদিও এই ঘটনা নতুন নয়। কেদারনাথের বিপর্যয়ের পরও এভাবেই সাত বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই নিখোঁজ ব্যক্তিদের মৃত বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। এ ক্ষেত্রে ‘রেজিস্ট্রেশন অফ বার্থস অ্যান্ড ডেথস, ১৯৬৯’ -এর আশ্রয় নিচ্ছে উত্তরাখণ্ড সরকার। ওই বিপর্যয়ের পর কেন্দ্রের তরফে ঘোষণা করা হয়, মৃতদের পরিবারকে ৪ লক্ষ টাকা ও আহতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে। সেই ক্ষতিপূরণ যাতে পরিবারগুলি দ্রুত পায়, তার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

নিখোঁজ ব্যক্তিদের তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম ভাগে রাখা হচ্ছে তাদের যারা বিপর্যয়গ্রস্ত এলাকার আশেপাশের এলাকার বাসিন্দা। পরের ভাগে থাকছে তাদের নাম যারা অন্য জেলার বাসিন্দা, কিন্তু ঘটনার দিন ওই এলাকায় উপস্থিত ছিল আর তৃতীয় ভাগে থাকবে অন্য রাজ্যের নিখোঁজ বাসিন্দাদের নাম যারা ওই দিন এলাকায় ছিল। ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে তাঁরা ডেথ সার্টিফিকেট তৈরি করতে শুরু করেন।

আরও পড়ুন: ভয়ঙ্কর সকাল! শিশুর গোঙানি, রক্তে ভাসছে রাস্তা, ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে ১৩ মৃতদেহ

কেদারনাথের হড়পা বানের পর কয়েক বছর কেটে গেলেও বহু মানুষের খোঁজ পাওয়া যায়নি এভাবেই। বহু মানুষের ছেঁড়া জামা, জুতো উদ্ধার হয়েছিল, পাওয়া যায়নি দেহ। এমনকি কারও কারও মৃতদেহ চিহ্নিত করতে ডিএনএ পরীক্ষাও করতে হয়।