Delhi High Court: বদলাতে হবে কি ‘ইন্ডিয়া’ জোটের নাম? ২৬ দল ও নির্বাচন কমিশনকে নোটিশ হাইকোর্টের
INDIA name Row: তিনি অভিযোগ করেছেন, ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থে তারা ইন্ডিয়া নামটি ব্যবহার করছে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের উপর এর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। এই নামকরণের জন্য ভোটে অশান্তি হতে পারে।
নয়া দিল্লি: ‘ইন্ডিয়া’ জোটের ২৬টি রাজনৈতিক দল এবং নির্বাচন কমিশনকে নোটিশ পাঠাল দিল্লি হাইকোর্ট। রাজনৈতিক জোটের নাম ‘ইন্ডিয়া’ রাখা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে দিল্লি হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন সমাজকর্মী গিরিশ ভরদ্বাজ। তাঁর দাবি, জোটের নাম হিসেবে বিরোধী দলগুলিকে আমাদের দেশের নাম ব্যবহার করতে যাবে না। শুক্রবার (৪ অগস্ট), এই মামলার বিষয়েই নোটিশ পাঠিয়ে ২৬টি রাজনৈতিক দল এবং নির্বাচনী সংস্থার জবাব চেয়েছে প্রধান বিচারপতি সতীশচন্দ্র শর্মা এবং বিচারপতি সঞ্জীব নারুলার ডিভিশন বেঞ্চ।
বিরোধীদের বেঙ্গালুরু সম্মেলনে এই জোটের নাম স্থির করা হয়েছিল। নাম দেওয়া হয়, ‘ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টাল ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স’ বা সংক্ষেপে ‘ইন্ডিয়া’। এনডিএ বনাম ইন্ডিয়া – অর্থাৎ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বিজেপি তথা এনডিএ জোট ইন্ডিয়া বা ভারত-বিরোধী – এই রাজনৈতিক আখ্যান তৈরির লক্ষ্যেই এই নাম স্থির করেছিল বিরোধী দলগুলি। তবে, তারপর থেকে এই নাম নিয়ে প্রচুর জলঘোলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্বয়ং জানিয়েছেন, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি, ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন বা পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়ার মতো সংস্থা ও সংগঠনগুলির নামেও ইন্ডিয়া শব্দটি ছিল। কিন্তু, তার তারা কখনই ভারতের কল্যাণ চায়নি। কাজেই জোটের নাম ইন্ডিয়া মানেই যে বিরোধীদের এই জোট ভারতের হিতে কাজ করবে, তার কোনও মানে নেই। বিরোধী জোটের সঙ্গে জঙ্গি সংগঠনগুলির তুলনা করার কারণে প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করেছে বিরোধীরা।
এই তর্ক-বিতর্কের মধ্যেই বিরোধী জোটের নামে ইন্ডিয়া শব্দ ব্যবহার করার বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলাটি দায়ের করেছিলেন গিরিশ ভরদ্বাজ। তাঁর আবেদনে, তিনি বিরোধী জোটের ২৬টি দলকেই উত্তরদাতার তালিকায় রেখেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থে তারা ইন্ডিয়া নামটি ব্যবহার করছে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের উপর এর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। এই নামকরণের জন্য ভোটে অশান্তি হতে পারে। নির্বাচনের স্বচ্ছতা এবং ন্যায্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে। পাশাপাশি, নাগরিকদের মধ্যে হিংসা ছড়াতে পারে এবং দেশের আইনশৃঙ্খলার ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন আবেদনকারী। তিনি আরও বলেছেন, ভারতের প্রতীক ও নাম (অনুচিত ব্যবহার প্রতিরোধ) আইন, ১৯৫০-এর ধারা অনুযায়ী এই ধরণের ক্ষেত্রে ভারতের নাম ব্যবহার করা নিষিদ্ধ বলেও দাবি করেছেন তিনি।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর বক্তব্য তুলে ভরদ্বাজ দাবি করেছেন, “এই নেতারা জোটের নাম আমাদের দেশের নামে দিয়ে দেখাতে চাইছেন এনডিএ/বিজেপি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মোদী আমাদের দেশের বিরোধী। রাহুল গান্ধীর বক্তব্য সাধারণ মানুষের মনে বিভ্রান্তি তৈরি করেছে। মানুষকে তারা বোঝাতে চাইছে, আসন্ন নির্বাচনে একটি রাজনৈতিক জোট এবং আমাদের দেশের মধ্যে লড়াই হবে।” তাঁর আরও অভিযোগ, তিনি ভারতের নির্বাচন কমিশনেও এই অভিযোগ জানিয়েছিলেন। কিন্তু, কমিশন কোনও পদক্ষেপ করেনি। সেই জন্যই তিনি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। এই মামলার জল কতদূর গড়ায়, এখন সেটাই দেখার।