PM Modi: ৯ বছরে যোগ দিয়েছেন ৩০০০ অনুষ্ঠানে, ক’দিন ছুটি নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী?
PMO's Reply To RTI Query: আরটিআই প্রশ্নের উত্তরে পিএমও জানিয়েছে, ২০১৪ সালের মে মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেওয়ার পর থেকে ৩০০০টিরও বেশি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন তিনি। তিনি কখনই 'অফ ডিউটি' হন না, প্রধানমন্ত্রী সব সময়ই 'অন ডিউটি' থাকেন। অর্থাৎ, দায়িত্বে বহাল থাকেন।
নয়া দিল্লি: বিজেপি নেতারা প্রায়শই দাবি করে থাকেন, দেশের ‘প্রধান সেবক’ হিসেবে কখনও ছুটি নেন না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কোনও অবকাশ না নিয়ে তিনি চব্বিশ ঘণ্টাই কাজ করে চলেছেন। সারা জীবনই তিনি দেশ এবং দেশের প্রতিটি নাগরিকের কল্যাণের কাজে উৎসর্গ করেছেন। বিজেপি নেতাদের সেই দাবি শুধুমাত্র কোনও রাজনৈতিক আখ্য়ান নয়। এবার তথ্য জানার অধিকার আইনে করা প্রশ্নের জবাবে, তাই নিশ্চিত করল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। আরটিআইয়ের জবাবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, ক্ষমতায় আসার পর থেকে, গত নয় বছরে একটি দিনও ছুটি নেননি প্রধানমন্ত্রী মোদী। আরটিআই প্রশ্নের উত্তরে পিএমও আরও জানিয়েছে, ২০১৪ সালের মে মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেওয়ার পর থেকে ৩০০০টিরও বেশি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন তিনি। তিনি কখনই ‘অফ ডিউটি’ হন না, প্রধানমন্ত্রী সব সময়ই ‘অন ডিউটি’ থাকেন। অর্থাৎ, দায়িত্বে বহাল থাকেন।
চলতি বছরের ২৩ জনৈক প্রফুল্ল পি সারদা, তথ্যের অধিকার আইনের আওতায় প্রধানমন্ত্রীর দফতরের কাছে দুটি প্রশ্নের উত্তর জানতে চেয়েছিলেন। প্রথম, ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নয়া দিল্লিতে তাঁর কার্যালয়ে কত দিন উপস্থিত ছিলেন? তার বিশদ তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছিল। দ্বিতীয়ত, ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কতগুলি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন, তার বিস্তারিত পরিসংখ্যান জানতে চাওয়া হয়েছিল। আরটিআই-এর আওতায় করা প্রশ্নগুলির উত্তর দেওয়ার দায়িত্বে আছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আন্ডার সেক্রেটারি পরবেশ কুমার। প্রথম প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানিয়েছেন, “প্রধানমন্ত্রী সব সময়ই কর্তব্যে বহাল থাকেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে কোনও ছুটি নেননি নরেন্দ্র মোদী।” দ্বিতীয় প্রশ্নের জবাবে তিনি পিএমও ওয়েবসাইট – http://www.pmindia.gov.in-এর একটি লিঙ্ক শেয়ার করেছেন। সেই লিঙ্কে দেখা যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী মোদী গত ৯ বছরে ৩০০০-র বেশি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন। অর্থাৎ, গত ৯ বছরে প্রতিদিনে গড়ে প্রায় একটি করে অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর একদিনও ছুটি না নেওয়ার অনন্য পরিসংখ্যান, সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে শেয়ার করা হয়েছে। আরটিআই-এর উত্তরের স্ক্রিনশটগুলি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে ভাইরাল হয়েছে। মজার বিষয় হল, এর আগে ২০১৫ এবং ২০১৬ সালে আরও দুই বার আরটিআই-এর আওতায় একই ধরণের প্রশ্ন কর হয়েছিল। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে দাখিল করা আরটিআই-এর জবাবে প্রধানমন্ত্রীর দফতর জানিয়েছিল, তিনি একদিনও ছুটি নেননি। তবে, সেটা ছিল নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বের প্রথম বছর। নয় বছর পরও তিনি সেই রেকর্ড অক্ষুণ্ণ রাখবেন, তা হয়তো সেই সময় অনেকেই আশা করেননি।
২০১৬ সালের অক্টোবরে, আরটিআই-এর আওতায় প্রধানমন্ত্রীদের ছুটির নিয়ম, পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছিল। সেই সময়ও জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী সর্বদাই অন ডিউটি থাকেন। আবেদনকারী আরও জানতে চেয়েছিলেন, মনমোহন সিং, অটলবিহারী বাজপেয়ী, এইচডি দেবগৌড়া, আইকে গুজরাল, পিভি নরসিমা রাও, চন্দ্রশেখর, ভিপি সিং এবং রাজীব গান্ধীদের মতো প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীরা কে কতদিন ছুটি নিয়েছেন, তার কোনও রেকর্ড আছে কি? প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছিল, পূর্ববর্তী প্রধানমন্ত্রীদের ছুটির রেকর্ড সম্পর্কিত তথ্য, বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নেই।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কোনও ছুটি না নেওয়ার বিষয়টি রাজনৈতিক চর্চারও বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে, অমিত শাহ দাবি করেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয়ই, গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবেও একদিনও ছুটি নেননি নরেন্দ্র মোদী। যে ২০ বছর তিনি সরকারি পদে থেকেছেন, তার মধ্যে একদিনও ছুটি নেননি।