Joshimath Sinking: ভূমিধসে রাত জাগছে জোশীমঠের মানুষ, রবিবার উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠকের ডাক প্রধানমন্ত্রীর দফতরের
Joshimath Sinking: জোশীমঠে ধসে পড়ছে একের পর এক বাড়ি। রবিবার উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠকের ডাক পিএমও-র।
নয়া দিল্লি: একের পর এক বাড়ি ধসে পড়ছে। উত্তরখণ্ডের (Uttarakhand) চামোলি (Chamoli) জেলার জোশীমঠ (Joshimath) জুড়ে এখন শুধুই হাহাকারের ছবি। সেখানে প্রায় ৬০৩টি বাড়িতে ফাটল দেখা গিয়েছে। হোটেল, রাস্তাতেও চওড়া ফাটলের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ার দেওয়ালে দেওয়ালে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এক নিমেষে ঘর ছাড়া বহু। কনকনে শীতের মধ্যে খোলা আকাশের নীচেই কাঁপতে কাঁপতে দিন-রাত কাটছে একাধিক মানুষের। জোশীমঠের বাসিন্দাদের এই চরম দুর্দশার মধ্যেই এবার কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ। রবিবার প্রধানমন্ত্রীর দফতরের তরফে জোশীমঠের পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের ডাক দেওয়া হয়েছে।
রবিবার একটি সরকারি বিবৃতি প্রকাশ করে জানানো হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুখ্য সচিব পিকে মিশ্র জোশীমঠের পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য মন্ত্রিসভার সচিব, কেন্দ্রীয় সরকারের অন্যান্য বর্ষীয়ান আধিকারিক ও কেন্দ্রীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসবেন। জানা গিয়েছে, জোশীমঠের জেলা আধিকারিক ও উত্তরাখণ্ডের বর্ষীয়ান আধিকারিকরা ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে এই পর্যালোচনা বৈঠকে যোগ দেবেন।
ভূমিকম্পের ধ্বংসাবশেষের উপর তৈরি এই জোশীমঠ শহর। ১৯৭৬ সালেই ভূ-বিজ্ঞানীরা জানিয়েছিলেন, এই শহরের আয়ু একশো বছরের আশেপাশে। এই শহরে নগরায়নের ক্ষেত্রেও সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছিল। তবে তার তোয়াক্কা না করেই ব্যাঙের ছাতার মতো হোটেল, বাড়ি গজিয়ে উঠেছে। চওড়া করা হয়েছে জাতীয় সড়ক। এর জেরেই এখন প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে বসেছে জোশীমঠ। আর ভিটেছাড়া হওয়ার প্রহর গুনছেন সেখানকার বাসিন্দারা। এই লাগামছাড়া নগরায়ণের জন্য ১০০ বছর থেকে এই প্রাচীন শহরের আয়ু ৫০ বছরের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে তা কেউই কল্পনা করতে পারেননি। জোশীমঠের বাড়ির মেঝেতে, দেওয়ালে-দেওয়ালে চওড়া ফাটল দেখা যাচ্ছে। গতকালই একটি বাড়ির উপর পরিত্যক্ত মন্দির ভেঙে পড়ে। ফলে বাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভয়ে বাড়ির ভিতরে আর পা রাখতে পারেননি বাসিন্দারা। শীতে কাঁপতে কাঁপতে খোলা আকাশের নীচেই কেটে গত রাত।
এদিকে এখনও পর্যন্ত ৬০ টি পরিবারকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কোনও জরুরি পরিস্থিতির কথা মাথায় এলাকায় একটি হেলিকপ্টার রাখা হয়েছে। গতকাল উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামী পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে জোশীমঠ পরিদর্শনে যান। তাঁকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন সেখানকার বাসিন্দারা। তবে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, জোশীমঠ রক্ষা করার চেষ্টা করা হবে। তিনি এও উল্লেখ করেছেন, মানুষের জীবনের দাম অনেক বেশি। তাই আগে ৬০০ টি পরিবারকে রক্ষা করাই রাজ্যের লক্ষ্য। এদিকে জোশীমঠের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে আগামী ৬ মাসের জন্য় বাড়ি ভাড়া বাবদ ৪ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে উত্তরাখণ্ডের সরকারের তরফে। এ দিকে উত্তরাখণ্ডের এই ভূমিধসকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে চিহ্নিত করার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদনও জমা পড়েছে।