আমিও ভুল করি, সমালোচনা হতেই পারে, কিন্তু সমালোচকদের সময় কই: PM Narendra Modi
PM Narendra Modi: "বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, মানুষ কেবল অভিযোগে করে বিভ্রান্তি তৈরির জন্য। আর এর কারণ হল, সমালোচনার জন্য, একজনকে প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়, গবেষণা করতে হয়। আর আজকের দ্রুত গতির বিশ্বে হয়তো মানুষের কাছে সেই সময়টাই নেই। তাই কখনও কখনও, আমি সমালোচকদের 'মিস' করি।''
দেশ: এক দশক ধরে প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে তিনি। তাঁর মুখে বারবার শোনা গিয়েছে ‘আত্মনির্ভর ভারতের’ কথা। সেই ১০ বছরে তিনিও বেশ কয়েকটি ভুল করেছেন। তাঁর-ও দোষ, ত্রুটি রয়েছে। কিন্তু ‘প্রকৃত’ সমালোচক কই? Open Magazine-কে খোলামেলা সাক্ষাৎকারে এমনই জানালেন নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)।
প্রধানমন্ত্রীর কথায়, নির্বাচনী রাজনীতিতে যোগ দিতে তাঁর ঘোর অনীহা ছিল। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে তাঁর কোনওরকম সম্পর্ক-ও ছিল না। কিন্তু পাকচক্রেই তিনিই রাজনীতিতে। আর সেখান থেকে দেশের প্রধানমন্ত্রীও বটে। মোদীর কথায়, “আমার পারিপার্শ্বিক, আমার অভ্যন্তরীণ জগৎ, আমার দর্শন — এগুলি খুব আলাদা ছিল। ছোট থেকেই আমার মধ্যে জেঁকে বসেছিল আধ্যাত্মিকতা।” রামকৃষ্ণ পরম হংসদেব এবং স্বামী বিবেকানন্দ তাঁর আদর্শ। কিন্তু সেখান থেকে কীভাবে রাজনীতির দুয়ারে এলেন?
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “রাজনীতির আশেপাশে তো কোনছাড়া কোনও দূরবর্তী সংযোগও ছিল না। অনেক পরে পরিস্থিতির কারণে এবং কিছু বন্ধুর জেদের কারণে, আমি রাজনীতিতে যোগ দিয়েছি। এমনকী সেখানে, আমি এমন একটি অবস্থানে ছিলাম যখন আমি কেবল প্রাথমিকভাবে সাংগঠনিক কাজ করতাম।”
তার পরে পাকেচক্রে তিনি রাজনীতিতে ঢুকে পড়েছেন বলে সাক্ষাৎকারে জানান তিনি। বলেন, “কুড়ি বছর আগে পরিস্থিতি এমন হয়ে উঠেছিল যে আমাকে একটি প্রশাসনের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য সম্পূর্ণ অজানা জায়গায় ঢুকতে হয়েছিল। সেটা ২০০১ সাল। যখন গুজরাট আমাদের দেখা সবচেয়ে বিধ্বংসী ভূমিকম্পে ভয়ঙ্কর ভাবে প্রভাবিত হয়েছিল।” আর সেখান থেকে তাঁর রাজনীতিতে প্রবেশ, গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থেকে আজ তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রী। তবে প্রধানমন্ত্রী হওয়া বড় কোনও বিষয় বলে মনে করেন না তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “অনেকের দৃষ্টিতে, প্রধানমন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রী হওয়া খুব বড় জিনিস হতে পারে। কিন্তু, আমার নিজের চোখে, এগুলি জনগণের জন্য কিছু করার উপায় ছাড়া আর কিছু নয়।” কিন্তু সেই মোদী কি ভুল করেন না কাজ করতে গিয়ে? বিরোধীরা বরাবরই অভিযোগ করে এসেছেন, প্রধানমন্ত্রী সমালোচনা ও সমালোচকদের নিতে পারেন না। এ নিয়ে কী বলছেন প্রধানমন্ত্রী নিজে?
মোদী এই সাক্ষাৎকারে কার্যত মেনে নেন, ভুল তিনিও করেন, দোষ ত্রুটি তাঁরও আছে। তাঁর নিজের কথায়, “কেউ যদি শুধু আমার কাজ বিশ্লেষণ করত, তাহলে সে আমার সম্পর্কে কোনও বিভ্রান্তির মধ্যে থাকত না। আমি মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর, প্রায় ২০ বছর আগে, যখন আমার প্রশাসনের কোনও পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল না, তখন আমি প্রথম কাজ করেছিলাম… আমি সবার আগে কচ্ছ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কাছে গিয়েছিলাম। আমি প্রকাশ্যে বলেছিলাম যে, ভূমিকম্পের পরে এটা প্রথম দিওয়ালি, তাই আমরা উদযাপন করব না। আমি নিজে দিওয়ালির দিন ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারের সঙ্গে সেখানে ছিলাম। এবং তাঁদের দুর্ভোগ ভাগ করে নিয়েছিলাম।” তার পরেই তাঁর সংযুক্তি, “এর অর্থ এই নয় যে মোদীর কোনও দোষ নেই বা এমন কোনও মানে নেই, যার উপর মোদীর সমালোচনা করা যেতে পারে না।”
তিনি বলেন, “নিজেদের বিকাশের জন্য আমি সমালোচনাকে ভীষণ গুরুত্ব দিই। আমি সৎ মনের সমালোচকদের ভীষণ শ্রদ্ধা করি। কিন্তু, দুর্ভাগ্যবশত, এমন সমালোচকদের সংখ্যা খুবই কম। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, মানুষ কেবল অভিযোগ করে বিভ্রান্তি তৈরির জন্য। আর এর কারণ হল, সমালোচনার জন্য একজনকে প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়, গবেষণা করতে হয়। আর আজকের দ্রুত গতির বিশ্বে হয়তো মানুষের কাছে সেই সময়টাই নেই। তাই কখনও কখনও, আমি সমালোচকদের ‘মিস’ করি।”
আরও পড়ুন: Jal Jeevan Mission: ২ বছরে জলের ট্যাপ পেয়েছে পাঁচ কোটি পরিবার, সচেতনতা বাড়াতে অ্যাপ লঞ্চ করলেন মোদী