Puja Khedkar UPSC: পূজা নাম-ঠিকানা বদলাতেই ধোকা খেল UPSC! ব্যবস্থাতেই গলদ নেই তো?

Puja Khedkar UPSC: নিজের নাম, বাবা-মায়ের নাম, ছবি, স্বাক্ষর, ইমেল আইডি, মোবাইল নম্বর, ঠিকানা - সবই বদলে ইউপিএসসি-কে ধোকা দিয়েছিলেন তিনি। আইএএস হওয়ার আগেই তাঁর হম্বি-তম্বিই তাঁকে ধরিয়ে দিয়েছে। তবে প্রশ্ন উঠছে, পরিচয় জাল করে, ওবিসি শংসাপত্র জাল করে, শারীরিক অক্ষমতার জাল শংসাপত্র দেখিয়ে কীভাবে ইউপিএসসি-কে ধোকা দিলেন পূজা? পরীক্ষা ব্যবস্থাতেই কি কোনও গলদ রয়েছে?

Puja Khedkar UPSC: পূজা নাম-ঠিকানা বদলাতেই ধোকা খেল UPSC! ব্যবস্থাতেই গলদ নেই তো?
এত সহজে ধোকা দিলেন পূজা, ব্যবস্থায় কোনও গলদ?Image Credit source: Twitter
Follow Us:
| Updated on: Jul 31, 2024 | 5:44 PM

নয়া দিল্লি: জেনারেল ক্যাটেগরি অর্থাৎ, সাধারণ বিভাগে ছয়বার ইউপিএসসি পরীক্ষা দেওয়া যায়। ছয়বারে পাশ করতে না পারলে, হাল ছাড়তেই হয়। কিন্তু, বিতর্কিত প্রশিক্ষণার্থী আইএএস অফিসার, পূজা খেড়কর ছয়বারে পাশ না করতে পেরে থামেননি। ‘ওবিসি ননক্রিমি লেয়ার’, অর্থাৎ, সুবিধা বঞ্চিত অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির প্রার্থীরা এই সর্বভারতীয় পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পান, সর্বোচ্চ ৯ বার। অন্যায়ভাবে সেই সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। তার জন্য গাদা-গাদা মিথ্যা বলেছিলেন তিনি। নিজের নাম, বাবা-মায়ের নাম, ছবি, স্বাক্ষর, ইমেল আইডি, মোবাইল নম্বর, ঠিকানা – সবই বদলে নিজেকে ‘ওবিসি ননক্রিমি লেয়ার’ বলে প্রমাণ করার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। বুধবার (৩১ জুলাই), এমনটাই জানাল ইউপিএসসি কর্তৃপক্ষ। এই অপরাধের শাস্তি হিসেবে পূজার অস্থায়ী আইএএস পদ বাতিল করা হয়েছে এবং তিনি ভবিষ্যতে ইউপিএসসি-র আর কোনও পরীক্ষাই দিতে পারবেন না।

ইউপিএসসি জানিয়েছে, সমস্ত নাম-পরিচয় বদলে ফেলার কারণেই পূজা যে ছয়বারের বেশি ইউপিএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন, তা ধরতে পারেনি ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন। কেন্দ্রীয় সংস্থা বলেছে, পরিচয় জাল করে পরীক্ষার নিয়ম লঙ্ঘনের বিষয়টি নিয়ে পূজাকে কারণ দর্শানোরনোটিশ দেওয়া হয়েছিল। জবাব দেওয়ার জন্য তাঁকে মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে তিনটে পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিল। তাঁকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছিল, এটাই তাঁর নিজেকে রক্ষা করার শেষ সুযোগ। তিনি কোনও জবাব না দিলেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শেষ পর্যন্ত অনুমোদিত সময় বাড়ানো হলেও, পূজা খেড়কর তাঁর কার্যকলাপের কোনও ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। ইউপিএসসি-র রেকর্ডগুলি যাচাই করে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেছে।

তবে প্রশ্ন উঠছে, পরিচয় জাল করে, ওবিসি শংসাপত্র জাল করে, শারীরিক অক্ষমতার জাল শংসাপত্র দেখিয়ে কীভাবে ইউপিএসসি-কে ধোকা দিলেন পূজা? এই পরীক্ষা আমলাতন্ত্রের মৌলিক পরীক্ষা। ভারত সরকারের বড় বড় আধিকারিকদের বাছা হয় এই পরীক্ষার মাধ্যমে। এই পরীক্ষা ব্যবস্থাকে কীভাবে ধোকা দিলেন পূজা খেড়কর? যদি অস্থায়ী আইএএস অফিসার হয়েই, লালবাতি লাগানো গাড়ি, বড় মাপের অফিস-সহ বিভিন্ন অন্যায় আবদার না করতেন পূজা, তাহলে তো তাঁর এই জালিয়াতির বিষয়টি সামনেই আসত না। জানতেও পারত না ইউপিএসসি কর্তৃপক্ষ। এই বিষয়ে ইউপিএসসি জানিয়েছে, গত বছর আবেদন প্রক্রিয়া চলাকালীন পূজা খেড়করের যে নথিপত্রগুলি দিয়েছিলেন, তার প্রাথমিক যাচাই করেছিল কর্তৃপক্ষ। সেগুলি কোনও উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ জারি করেছে কিনা, তা পরীক্ষা করা হয়েছিল। তা, সঠিক নিয়ম মেনে জারি করা হয়েছিল কিনা, তা পর্যালোচনা করা হয়নি।

ইউপিএসসি বলেছে, “প্রার্থীরা যে নথিপত্র জমা দেয়, তা সাধারণত আসল বলেই ধরা হয়। প্রতি বছর হাজার হাজার প্রার্থী নথি জমা দেয়, সেগুলি পরীক্ষা করার জন্য কোনও নির্দেশ বা ব্যবস্থা নেই।” তবে, পূজার বিষয়টি সামনে আসার পর প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে আরও অনেক আইএএস ও প্রাক্তন আইএএস অফিসারদের নিয়েও। অনেকেই পূজার মতো প্রতিবন্ধকতার বা ওবিসি ক্যাটেগরির জাল শংসাপত্র ব্যবহার করেছেন বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষ এবং ইউপিএসসি-র পরীক্ষার্থীরা। এদিন ইউপিএসসি জানিয়েছে, পূজার জালিয়াতি ধরা পড়ার পর, তারা ২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে আইএএস হওয়া প্রায় ১৫,০০০ প্রার্থীর তথ্য যাচাই করেছে। তবে, আর কোনও ক্ষেত্রে কেউ নিয়মের লঙ্ঘন করেছেন বলে খুঁজে পাওয়া যায়নি।