Ramdev: ‘পোশাক না পরলেও মহিলাদের ভাল লাগে’, রামদেবের মন্তব্যে বিতর্ক, ক্ষমা চাওয়ার দাবি
Ramdev's comment on women's attire: ৮-১০ বছর বয়স পর্যন্ত তিনি নগ্নই থাকতেন বলে জানিয়েছেন রামদেব। তাঁর মতে, মহিলাদের সব পোশাকেই এমনকি পোশাক ছাড়াও দেখতে ভাল লাগে।
নয়া দিল্লি: মহিলাদের পোশাক নিয়ে ‘অশালীন’ মন্তব্য যোগগুরু রামদেবের। যা নিয়ে তৈরি হয়েছে তীব্র রাজনৈতিক বিতর্ক। গত শুক্রবার মহারাষ্ট্রের থানেতে এক অনুষ্ঠানে রামদেব জানান, শাড়ি, সালোয়ার কামিজ বা এমনকি কিছুই না পরলেও মহিলাদের দেখতে ভাল লাগে। রবিবার, তাঁর এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করে দিল্লি মহিলা কমিশনের প্রধান স্বাতি মালিওয়াল জানিয়েছেন, রামদেবের উচিত “গোটা দেশের কাছে ক্ষমা চাওয়া”। শুধু তিনিই নন, শিবসেনা, কংগ্রেস, এনসিপি, তৃণমূল কংগ্রেস-সহ বহু বিজেপি বিরোধী দলই এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে রামদেবের সমালোচনা করেছে।
রামদেবের ওই বিতর্কিত ভাষণের একটি ভিডিয়ো ক্লিপ টুইট করেছেন স্বাতি মালিওয়াল। ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, সেই সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীশের স্ত্রী অমৃতা ফড়ণবীশ। এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের ছেলে শ্রীকান্ত শিন্ডেও। রামদেবকে হাসি মুখে বলতে শোনা যায়, “আমি দেখছি সবাই বেশ খুশি মনে আছেন। আপনাদের ভাগ্যও সুখের হবে। সামনে যারা আছেন, তাঁরা শাড়ি পরার সুযোগ পেয়েছেন। যারা পিছনে আছেন, তাঁরা সেই সুযোগ পাননি। তারা সম্ভবত বাড়ি থেকে শাড়ি গুছিয়ে এনেছিলেন, কিন্তু পোশাক বদলানোর সময় পাননি। আপনাদের শাড়িতে সুন্দর লাগছে। অমৃতাজির মতো সালোয়ার স্যুট যাঁরা পরেছেন, তাঁদেরও সুন্দর দেখাচ্ছে। যদি আমার মতো কেউ এটা না পরে, তাহলেও ভালো দেখায়।”
এরপরই ক্যামেরা রামদেবের দিক থেকে দর্শকদের দিকে ঘুরে যায়। দেখা যায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত মহিলারা একে-অপরের দিকে অবাক হয়ে তাকাচ্ছেন। তারপরও থামেননি রামদেব। তিনি বলেন, “আপনারা সামাজিক নিয়মের জন্য পোশাক পরেন। শিশুদের কোনও পোশাক পরতে হয় না। আমরা আট-দশ বছর বয়স পর্যন্ত নগ্ন হয়ে ঘুরে বেড়াতাম। এখন অবশ্য শিশুদের গায়ে পাঁচ স্তরের পোশাক থাকে।” এই ভিডিয়ো টুইট করে স্বাতি মালিওয়াল তার ক্যাপশনে লিখেছেন, “মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রীর সামনে মহিলাদের নিয়ে বাবা রামদেবের করা মন্তব্য অশালীন এবং নিন্দনীয়। এই বিবৃতিতে সমস্ত মহিলারা আঘাত পেয়েছেন। এই বিবৃতির জন্য বাবা রামদেবজির দেশের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।”
महाराष्ट्र के उपमुख्यमंत्री जी की पत्नी के सामने स्वामी रामदेव द्वारा महिलाओं पर की गई टिप्पणी अमर्यादित और निंदनीय है। इस बयान से सभी महिलाएँ आहत हुई हैं, बाबा रामदेव जी को इस बयान पर देश से माफ़ी माँगनी चाहिए! pic.twitter.com/1jTvN1SnR7
— Swati Maliwal (@SwatiJaiHind) November 26, 2022
এদিকে রামদেবের ওই মন্তব্যের সময়, অমৃতা ফড়ণবীস কেন প্রতিবাদ করেননি, সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন শিবসেনা গোষ্ঠী। সঞ্জয় রাউত বলেছেন, “রাজ্যপাল যখন শিবাজীকে নিয়ে অপমানজনক মন্তব্য করেন কিংবা, যখন কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী মহারাষ্ট্রের গ্রামগুলিকে কর্ণাটকের অধীনে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেন তখন সরকার নীরব থাকে। এখন বিজেপির প্রচারক রামদেব মহিলাদের অপমান করলেন, তখনও সরকার চুপ। সরকার কি তার জিভ দিল্লির কাছে বন্ধক রেখেছে?”
তৃণমূল কংগ্রেসের মহুয়া মৈত্রও রামদেবের মন্তব্যের নিন্দা করেছেন। টুইট করে তিনি বলেছেন, “এখন বুঝলাম কেন পতঞ্জলি বাবা মহিলাদের পোশাক পরে রামলীলা ময়দান থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি বলেছেন যে তিনি শাড়ি, সালোয়ার পছন্দ করেন…স্পষ্টতই তাঁর চোখ টেরা, তাই তাঁর মতামত এতটা বৈষম্যমূলক।” উল্লেখ্য, ২০১২ সালে পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে রামলীলা ময়দান থেকে পালাতে গিয়ে ধরা পড়েছিলেন যোগগুরু রামদেব। সেই সময় তার পরণে ছিল সালোয়ার কামিজ। স্পষ্টতই সেই ঘটনার কথাই উল্লেখ করেছেন তৃণমূল সাংসদ।
Now I know why Patanjali baba ran away from Ramlila Maidan in women’s clothes. He says he likes sarees, salwars and ……
Clearly got a strabismus in his brain that makes his views so lop-sided.
— Mahua Moitra (@MahuaMoitra) November 26, 2022
এখনও পর্যন্ত বিজেপির পক্ষ থেকে রামদেবের এই মন্তব্যের কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি। রামদেব বা পতঞ্জলী গোষ্ঠীর পক্ষ থেকেও এই বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। এই মন্তব্যকে ঘিরে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তার জল কতদূর গড়ায়, এখন সেটাই দেখার।