কিল-চড়-লাথি! বিধানসভা থেকে আরজেডি নেতাদের টেনে হিঁচড়ে বের করল পুলিশ

বিহার স্পেশাল আর্মড পুলিশ বিল ২০২১ (Bihar Special Armed Police Bill 2021)-এর বিরোধিতা করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন আরজেডি(RJD) সহ অন্যান্য বিরোধী নেতারা। বিরোধীদের অনুপস্থিতিতে বিল পাশ করানোর পরই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি।

কিল-চড়-লাথি! বিধানসভা থেকে আরজেডি নেতাদের টেনে হিঁচড়ে বের করল পুলিশ
বিরোধী নেতাদের টেনে হিঁচড়ে বের করছে পুলিশ। ছবি:PTI
Follow Us:
| Updated on: Mar 24, 2021 | 2:08 PM

পটনা: নতুন পুলিশ বিলের বিরোধীতা করতে গিয়ে পুলিশের হাতেই মার খেলেন রাষ্ট্রীয় জনতা দলের নেতারা। গ্রেফতার করা হয়েছে দলের সুপ্রিমো তেজস্বী যাদব (Tejashwi Yadav) ও তাঁর ভাই তেজ প্রতাপ যাদব(Tej Pratap Yadav)-কে। বিহার বিধানসভায় ধুন্ধুমারের ঘটনায় উত্তাল নেটদুনিয়াও, পুলিশি মারধরের নিন্দা করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও।

ঘটনার সূত্রপাত হয় বিহার স্পেশাল আর্মড পুলিশ বিল ২০২১ (Bihar Special Armed Police Bill 2021) ঘিরে। এই বিলে বলা হয়েছে, কেবলমাত্র সন্দেহের বশেই পুলিশ বিনা ওয়ারেন্টে কারোর বাড়িতে তল্লাশি চালাতে পারে বা কাউকে গ্রেফতার করতে পারে। মঙ্গলবার এই বিলটি বিধানসভায় পেশ করার পরই বিরোধীরা এই বিলের প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। ফলে একাধিকবার অধিবেশন ব্যহত হয়। দুপুরে ফের অধিবেশন শুরু হলে ওয়াকআউট করেন বিরোধী নেতারা, তাঁদের অনুপস্থিতিতেই পাশ করানো হয় এই বিল।

এরপরই বিধানসভার স্পিকার বিজয় কুমার সিনহা(Vijay Kumar Sinha)-কে আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন রাষ্ট্রীয় জনতা দলের বিধায়করা। তাঁর সামনেই বিভিন্ন নথি ছিঁড়ে প্রতিবাদ দেখান তাঁরা। স্পিকারকে কার্যত বন্দি করার ঘটনা সামনে আসতেই পটনা পুলিশ প্রায় ১০০-রও বেশি কর্মীদের নিয়ে এসে বিক্ষোভকারী বিধায়কদের বের করতে শুরু করেন। তবে বিধায়করা বিধানসভা কক্ষ ছেড়ে বের হতে অস্বীকার করলে শক্তি প্রয়োগ করে পুলিশ। কার্যত টেনে হিচড়ে বের করা হয় বিরোধী নেতাদের। ভাইরাল হওয়া একাধিক ভিডিয়োয় দেখা যায় গলা ধাক্কা, কিল-চড়-ঘুসি মারছেন পুলিশকর্মীরা।

আরও পড়ুন: মোদীর রাজ্যকে টপকে টিকাকরণে চার নম্বরে বাংলা, দৈনিক টিকাকরণেও সেরা তিনে রাজ্য

মহিলাদের উপর সেভাবে শক্তি প্রয়োগ না করা হলেও মহিলা পুলিশকর্মীরা তাঁদের টেনেহিঁচড়ে বের করেন। পুলিশের মারধরে গুরুতর আহত হন আরজেডি নেতা সতীশ কুমার। তাঁকে স্ট্রেচারে করে বিধানসভার বাইরে আনা হয়। আরও বেশ কয়েকজন আরজেডি ও জোটসঙ্গী সিপিআই(এম) নেতাদেরও নিরাপত্তা কর্মীরা বের করে আনার ভিডিয়োও দেখা যায়। এদের মধ্যে অধিকাংশ বিধায়কই সংজ্ঞাহীন অবস্থায় ছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশের নির্মম মারেই সংজ্ঞা হারিয়েছিলেন তাঁরা।

হাতে প্লাস্টার নিয়ে এক আরজেডি নেতা বলেন, “শাসকদলের নেতারা আমার হাত ভেঙে দিয়েছেন। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারও উপস্থিত ছিলেন, তিনি মুখ ঘুরিয়ে নেন।” গোটা ঘটনার সমালোচনা করে আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব টুইট করে লেখেন, “নীতীশ কুমার, যদি আপনি মানুষ হন, তবে আমাদের মারধরের বদলে সরাসরি গুলি করুন।”

নিয়ম অনুযায়ী, বিধানসভায় কোনও উত্তেজনার পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা মার্শালরাই তার সামাল দেন। যদি পরিস্থিতি তাঁদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তবেই পুলিশ ডাকা হয়। গতকালের ঘটনায় আদৌই মার্শালরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছিলেন কিনা, সেই বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বহু বিরোধী নেতা।

আরও পড়ুন: ‘দ্বিতীয় ঢেউ’য়ে ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৪৭ হাজার ২৬২, করোনাবিধি মানাতে কড়া নির্দেশিকা কেন্দ্রের