Sharad Pawar: ‘গুগলি নয় ডাকাতি’, ভাইপোর বিরুদ্ধে আদালতে যাবেন না ‘হতাশ’ পওয়ার
Sharad Pawar's first reaction: নিঃসন্দেহে রবিবার (২ জুলাই), তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বিরাট ধাক্কা খেলেন এনসিপি প্রধান। এতে শরদ কিছুটা হলেও ভেঙে পড়েছেন, কিন্তু মচকাচ্ছেন না।
মুম্বই: নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে যখন বিরোধী দলগুলিকে একজোট করার চেষ্টা করছেন শরদ পওয়ার, ঠিক সেই সময়ই বিজেপির সঙ্গে হাত মেলালেন ভাইপো অজিত পওয়ার। রবিবার (২ জুলাই), বিরোধী দলনেতা থেকে রাতারাতি মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন অজিত। শুধু তাই নয়, অজিতের পাশে আছেন ছগন ভুজবল, প্রফুল্ল প্যাটেলের মতো বিশিষ্ট নেতারাও। প্রফুল্ল প্যাটেলকে কয়েকদিন আগেই দলের কার্যকরী সভাপতি করেছিলেন শরদ। এমনকি, অজিত দাবি করেছেন এনসিপি-র গোটা দল তাঁর পক্ষেই আছে। তবে, এই সিদ্ধান্ত অজিত পওয়ারের একান্ত ব্যক্তিগত, দলের এতে সায় নেই বলে স্পষ্ট জানালেন শরদ পওয়ার। নিঃসন্দেহে রবিবার (২ জুলাই), তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বিরাট ধাক্কা খেলেন এনসিপি প্রধান। এতে শরদ কিছুটা হলেও ভেঙে পড়েছেন, কিন্তু মচকাচ্ছেন না। এই বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করে শরদ পওয়ার জানিয়েছেন ৬ জুলাই তিনি দলের এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ডেকেছিলেন। কিন্তু, তার আগেই তাঁর ভাইপো এবং কয়েকজন সহকর্মী পৃথক অবস্থান নিয়েছেন। তবে, দলের অন্দরে এই ধরনের বিদ্রোহ তাঁর কাছে নতুন নয় বলেই জানিয়েছেন এনসিপি প্রধান।
রবিবার সকালের মহা-নাটকের পর প্রথমবার মুখ খুললেন শরদ পওয়ার। এই প্রসঙ্গে তিনি নিশানা করেছেন বিজেপি এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। শরদ পওয়ার বলেছেন, “আমার কিছু সহকর্মী ভিন্ন অবস্থান নিয়েছেন। আমি ৬ জুলাই সমস্ত নেতাদের নিয়ে এক বৈঠক ডেকেছিলাম। সেখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করার কথা ছিল। দলের মধ্যে কিছু পরিবর্তন করার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই কয়েকজন নেতা ভিন্ন অবস্থান নিয়েছেন। দুদিন আগেই প্রধানমন্ত্রী মোদী এনসিপি সম্পর্কে দুটি কথা বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন এনসিপি খতম হয়ে গিয়েছে। সেচ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগের কথাও বলেছিলেন তিনি। আমার কয়েকজন সতীর্থ এদিন শপথ নেওয়ার আমি খুশি। তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর দাবি সত্যি বলে প্রমাণ করেছেন। তাঁরা মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ নিশ্চয়ই মুছে গেল। এর জন্য আমি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিতে চাই।”
তবে, এই রাজনৈতিক পট পরিবর্তন তাঁর কাছে নতুন নয় বলেই দাবি করেছেন এনসিপি প্রধান। তিনি বলেছেন, “এটা নতুন কিছু নয়। ১৯৮০ সালে আমি যে দল তৈরি করেছিলাম, তার ৫৮ জন বিধায়ক ছিল। পরে সবাই অন্য দলে চলে যায়। মাত্র ৬জন বিধায়ক থেকে গিয়েছিলেন। কিন্তু, আমি দলকে শক্তিশালী করেছিবলাম। যারা আমার পাশ থেকে সরে গিয়েছিলেন, তাঁরা প্রত্যেকেই তাঁদের নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় হেরেছিলেন।” তিনি আরও জানিয়েছেন, প্রফুল্ল প্যাটেল এবং সুনীল ততকারে-কে তিনি দলের কিছু দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তাঁরা সেই দায়িত্ব পালন করেননি। তাই তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন তিনি। তবে, ভাইপোর বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের পথে যাবেন না। অজিত পওয়ার সাফ জানিয়েছেন, এনসিপির প্রতীকেই সামনের সব নির্বাচন লড়বেন তাঁরা। নির্বাচনী প্রতীকের অধিকার নিয়ে আদালতে না গেলেও, জনতার দরবারে যাবেন বলে জানিয়েছেন শরদ।
এদিকে, মহারাষ্ট্রের এই রাজনৈতিক পালা বদলের ফলে, বিরোধী জোটের নেতারাও উদ্বিগ্ন বলে জানিয়েছেন পওয়ার। তবে তিনি নিজে উদ্বিগ্ন নন। শরদ বলেছেন, “কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অনেকেই আমাকে ফোন করেছেন। আজ যা ঘটেছে তা নিয়ে আমি চিন্তিত নই। আগামীকাল, করদে ওয়াইবি চবন মেমোরিয়ালে আমি একটি জনসভা করব। তারপর গোটা রাজ্যে সফর করব। দ্রুত সত্যিটা বেরিয়ে আসবে।” গোটা ঘটনাকে তিনি ‘গুগলি নয়, ডাকাতি’ বলেছেন।