Love: ছিল লিভ-ইন সম্পর্ক, সুখজিৎকে বিয়ে করতে সুদূর দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ভারতে এলেন কিম

South Korean Woman Love: ভালবাসার টানে একেবারে সাত সমুদ্র পেরিয়ে ভারতে চলে এলেন দক্ষিণ কোরিয়ার মহিলা কিম বোহ নিই। শুধু দেশ ছেড়ে চলে আসা নয়, ভালবাসার মানুষের সঙ্গে সংসার করতে যাতে আর কোনও বাধা না থাকে সেজন্য একেবারে আইনি পথে হাঁটছেন কিম।

Love: ছিল লিভ-ইন সম্পর্ক, সুখজিৎকে বিয়ে করতে সুদূর দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ভারতে এলেন কিম
উত্তরপ্রদেশের যুবক সুখজিতের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধছেন দক্ষিণ কোরিয়ার যুবতী কিম বোহ নিই।Image Credit source: twitter
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 21, 2023 | 3:00 PM

লখনউ: প্রেম মানে না ভৌগোলিক দূরত্ব। এর প্রমাণ বহুবার মিলেছে। প্রেমের টানে স্বামী, সন্তান, সংসার ছেড়ে ‘শত্রু’ দেশ থেকে পাকিস্তান থেকে ভারতে চলে এসে ঘর বাঁধা বা ভালবাসার খোঁজে ভারত থেকে পাকিস্তানে গিয়ে সংসার পাতার খবর সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে। তবে এবার ভালবাসার টানে একেবারে সাত সমুদ্র পেরিয়ে ভারতে চলে এলেন দক্ষিণ কোরিয়ার (South Korea) মহিলা কিম বোহ নিই। শুধু দেশ ছেড়ে চলে আসা নয়, ভালবাসার মানুষের সঙ্গে সংসার করতে যাতে আর কোনও বাধা না থাকে সেজন্য একেবারে আইনি পথে হাঁটছেন কিম। উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) বাসিন্দা সুখজিৎ সিংয়ের সঙ্গে আইনিভাবে গাঁটছড়া বাঁধতে ইতিমধ্যে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছেন এবং রেজিস্ট্রি বিয়ের আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার এই মহিলা।

কিম আর সুখজিতের প্রেমের গল্পটা একেবারে সিনেমার মতো। উত্তরপ্রদেশের শাহজাহানপুর জেলার উদনা গ্রামের যুবক সুখজিৎ সিং কাজের খোঁজে পাড়ি দিয়েছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ায়। সেখানে বুসন এলাকায় একটি কফি শপে কাজ পান সুরজিৎ। সেই কফি শপে প্রায়ই কফি পান করতে যেতেন কিম বোহ নিই। তখন তিনি ২৩ বছরের যুবতী। আর সুখজিতের বয়স ২৬ বছর। প্রথম দেখাতেই দুজনে দুজনের প্রতি আকৃষ্ট হন। তারপর সময় যত গড়ায়, ততই ওই কফি শপে যাওয়ার টান বাড়ে কিমের। ধীরে-ধীরে পরস্পরের মধ্যে আলাপচারিতাও বাড়তে থাকে। তারপর সুখজিৎ ৬ মাসের ছুটি নিয়ে দেশে ফিরে আসেন। তখন সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁকে ফলো করতেন কিম। তখনই সুখজিতের প্রতি বিশেষ টান অনুভব করেন কিম। সেকথা সুখজিতেরও বুঝতে অসুবিধা হয়নি। তাঁর কথায়, “বুসনে থাকার সময় থেকেই আমরা কথা বলা শুরু করি। তাঁর সঙ্গে কথা বলার জন্যই তখন আমি কোরিয়া ভাষা শিখতে শুরু করি।”

সুখজিৎ ৬ মাসের ছুটি কাটিয়ে বুসনে ফিরে যাওয়ার পরই পরস্পর পরস্পরের প্রতি প্রেম নিবেদন করেন। তাঁদের প্রেমের মাঝে বাধা হয়নি পরিবার। তাই পরিবারের সম্মতিতেই তাঁরা লিভ-ইন সম্পর্কে থাকেন। সুখজিৎ বলেন, “আমরা পরিবারের অনুমতিতেই চার বছর লিভ-ইন ছিলাম। তারপর আমি দেশে ফিরে এলে দু-মাস পর কিম আমাকে অনুসরণ করে আসেন। তারপর আমরা দুজনেই বিয়ের সিদ্ধান্ত নিই।” এরপর একটি গুরুদ্বারে দুজনে বিয়ে করেন।

তবে বর্তমানে যে কেবল গুরুদ্বারে বিয়ে করলে সেটা আইনি স্বীকৃতি পায় না, সেটা অজানা নয় কিমেরও। তাই এবার আইনিভাবে সুখজিতের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধার পথে হাঁটলেন দক্ষিণ কোরিয়ার যুবতী। ভৌগোলিক অবস্থান, ভাষা, ধর্ম যে ভালবাসার পথে বাধা হতে পারে না, তারই যেন প্রমাণ দিলেন কিম ও সুখজিৎ। বিদেশিনী হয়েও ভালবাসার মানুষের সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে গিয়েছেন কিম। সুখজিৎ বলেন, “সে ভারতীয় সংস্কৃতি ভালবাসে, বিশেষত পঞ্জাবি গান। সে আমাদের স্থানীয় ভাষা জানে না, কিন্তু আমাদের গানের মিউজিক শুনে আনন্দ পায়। সবকিছুই তাঁর কাছে নতুন।” ভাষার বাধা কাটাতে কোরিয়া ভাষা শিখে নিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের যুবক। ফলে তাঁদের আলাপচারিতায় কোনও সমস্যা হয় না বলেও জানান সুখজিৎ।

বর্তমানে তিন মাসের ভিসা নিয়ে ভারতে এসেছেন কিম। ভিসার মেয়াদ পূরণ হতে আর একমাস বাকি। একমাস পরই তিনি দেশে ফিরে যাবেন। তারপর সুখজিতও বুসন যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। সেখানেই তাঁরা ঘর বাঁধার পরিকল্পনা করছেন।