Agnipath Scheme: অগ্নিপথ প্রকল্পে ‘সুপ্রিম’ মান্যতা, সেনায় পূর্ববর্তী নিয়োগের আবেদন খারিজ করল শীর্ষ আদালত

Agnipath Scheme: অগ্নিপথ স্কিমকে বৈধ বলল সুপ্রিম কোর্ট। এ দিন দিল্লি হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে করা দুই আবেদন খারিজ দিল শীর্ষ আদালত।

Agnipath Scheme: অগ্নিপথ প্রকল্পে ‘সুপ্রিম’ মান্যতা, সেনায় পূর্ববর্তী নিয়োগের আবেদন খারিজ করল শীর্ষ আদালত
Image Credit source: গ্রাফিক্স: অভিজিৎ বিশ্বাস
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Apr 10, 2023 | 6:55 PM

নয়া দিল্লি: প্রতিরক্ষায় অস্থায়ী নিয়োগের জন্য অগ্নিপথ প্রকল্প (Agnipath Scheme) নিয়ে এসেছিল কেন্দ্র। এই প্রকল্পের আওতায় ১৭ থেকে ২৩ বছরের যুবক-যুবতীদের নিয়োগের কথা বলেছে কেন্দ্র। চার বছরের জন্য প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে নিয়োজিত যুবক-যুবতীরা পাবেন ‘অগ্নিবীরে’র সম্মান। তবে এই প্রকল্প ঘোষণা করার পরই দেশজুড়ে অগ্নিপথের বিরোধিতায় প্রতিবাদ-বিক্ষোভ দেখা যায়। চারবছর পর অগ্নিবীরদের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিরোধীরা। প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়ে দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনীতে স্থায়ী নিয়োগের প্রক্রিয়া। তাই অগ্নিপথ প্রকল্প আসার আগে ভারতীয় সেনাবাহিনী ও বায়ুসেনায় পূর্ববর্তী নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার দাবি নিয়েই শীর্ষ আদালতে আবেদন করা হয়েছিল। উল্লেখ্য, পূর্ববর্তী নিয়োগ এবং অগ্নিপথ প্রকল্প নিয়ে আবেদন দিল্লি হাইকোর্টও খারিজ করে দেওয়া হয়। হাইকোর্টে রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তাঁদের এই আবেদন এদিন খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট।

গত ফেব্রুয়ারি মাসে দিল্লি হাইকোর্ট অগ্নিপথ প্রকল্পকে বৈধ বলে ঘোষণা করেছিল। দিল্লি হাইকোর্ট রায়ে উল্লেখ করে, জাতীয় স্বার্থে এবং সশস্ত্র বাহিনী যাতে আরও ভালভাবে সজ্জিত হয় তা নিশ্চিত করার জন্যই অগ্নিপথ প্রকল্পটি নিয়ে আসা হয়েছে। এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দুটি আবেদন করা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। গোপাল কৃষ্ণাণ ও আইনজীবী এমএল শর্মা দুটি পৃথকভাবে আবেদন করেন। এক আবেদনকারীর বক্তব্য, অগ্নিপথ প্রকল্প কার্যকর হওয়ার পর সামরিক বাহিনীতে পূর্ববর্তী নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে গিয়েছে। এদিকে আইনজীবী এমএল শর্মার যুক্তি এই প্রকল্পটি কোনও এক্সিকিউটিভ আদেশের মাধ্যমে চালু করা যায় না। এর জন্য আইনের প্রণয়নের প্রয়োজন। তবে এই দুই আবেদনই সোমবার খারিজ করল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি পিএস নরসিমহা ও বিচারপতি জেবি পার্দিওয়ালার বেঞ্চ।

প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, পূর্ববর্তী নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার দাবি জানানোর কোনও অধিকার নেই প্রার্থীদের। অগ্নিপথ প্রকল্প আসার আগে বাকি থাকা নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন না করার সিদ্ধান্ত কোনও স্বেচ্ছাচারিতা নয়। আজ শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, বৃহত্তর জনস্বার্থ জড়িত থাকলে সবসময় পূর্ব অঙ্গীকার নাও মেনে চলা হতে পারে। এদিন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, “আমার এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার কিছু নেই। এটা কোনও চুক্তি নয়। এটা জননিয়োগের একটি বিষয়।” এদিকে আবেদনকারীদের হয়ে আইনজীবী অরুণাভ মুখোপাধ্যায় আদালতে স্পষ্ট করেন, তাঁরা এই অগ্নিপথ প্রকল্পটিকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন না। বরং সেনাবাহিনী ও বায়ুসেনায় পূর্বে ঘোষিত নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা। তিনি উল্লেখ করেছেন, কোভিড সংক্রমণের কারণে কেন্দ্রীয় সরকার এই প্রকল্পের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া অনেকবার স্থগিত করেছে। তারপর জুনেই এই অগ্নিপথ প্রকল্পের ঘোষণা করা হয়। ফলে বায়ুসেনায় নিয়োগের পরীক্ষা হলেও তার ফলাফল প্রকাশিত হয়নি বলে উল্লেখ করেন আইনজীবী। তিনি আদালতের সামনে তুলে ধরেন, এই পরীক্ষা কোনওদিন বাতিল করা হয়নি। শুধু পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

এর প্রেক্ষিতে ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, “সেনায় নিয়োগের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া যেমন- শারীরিক ও মেডিক্যাল টেস্ট হয়েছে কিন্তু প্রবেশিকা পরীক্ষা হয়নি। আর যখন নয়া প্রকল্প এল তখন পূর্ব প্রক্রিয়া আর এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়নি কর্তৃপক্ষ…অতএব আর কোনও প্রশ্নই থাকে না।” এরপর আইনজীবী জানান, আবেদনকারীদের নিয়োগ করা হলে অগ্নিপথ প্রকল্প কোনওভাবে প্রভাবিত হবে না। এদিকে কেন্দ্রীয় সরকার পক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ঐশ্বর্য্য ভারতী আদালতে জানান, দিল্লি হাইকোর্টের রায়ে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। তিনি বলেন, “কোভিডের সময়ে বিভিন্ন ধরনের বিষয় ছিল। এটা কোনও যেমন তেমন করে বেছে নেওয়ার বিষয় ছিল না। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্র ও জাতীয় স্বার্থের কথা মাথায় রেখে আমাদের শূন্যপদ পূরণ করতে হয়েছিল।”

এদিকে অন্য একটি মামলায় আরেক আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ বলেন, ভারতীয় বায়ুসেনায় নিয়োগ প্রক্রিয়ার বেশ কয়েকটি ধাপ পেরিয়ে যাওয়ার পর প্রভিশনাল তালিকায় নাম এসেছিল প্রার্থীদের। চাকরি প্রার্থীর হয়ে তিনি উল্লেখ করেছেন, “এক বছর ধরে নিয়োগপত্র দেওয়া হবে বলে বারবার বলা হয়েছে। কিন্তু তা বারংবার পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে…আমরা গোটা পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে গিয়েছি। কিন্তু নিয়োগ করা হয়নি। এইসব মানুষদের দুর্দশা বুঝুন। তিন বছর ধরে তাঁরা অপেক্ষা করেই যাচ্ছেন।” এর উত্তরে প্রধান বিচাপরপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, “এরকম কোনও অধিকার দেওয়া হয়নি। এই পরিপ্রেক্ষিতে এটি স্বৈরাচারী নয়।” তবে প্রশান্ত ভূষণের অনুরোধে, আগামী ১৭ এপ্রিল ফের এই মামলা শোনার কথা জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। তবে বাকি দুটি আবেদন খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট।