‘মেয়েদের মৃত্যুর খবর রাখেন?’ সুপ্রিম নির্দেশে খারিজ ‘পুরুষ কমিশন’ গঠনের দাবি
National Commission for Men: জাতীয় মহিলা কমিশনের মতো, পুরুষদের একটি জাতীয় কমিশন গঠনের দাবিতে জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল। কিন্তু, আদালত বলেছে আবেদনকারী বিবাহিত পুরুষদের প্রতি সহানুভূতিশীল। তবে এই সহানুভূতি ভুল ধারণা থেকে তৈরি।
নয়া দিল্লি: জাতীয় মহিলা কমিশনের মতো, পুরুষদের একটি জাতীয় কমিশন গঠন এবং বিবাহিত পুরুষদের আত্মহত্যার বিষয়ে গবেষণার নির্দেশ চেয়ে হওয়া জনস্বার্থ মামলা গ্রহণই করল না সুপ্রিম কোর্ট। মহেশ তিওয়ারি নামে এক আইনজীবী এই জনস্বার্থ মামলাটি দায়ের করেছিলেন। বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ মামলাটি গ্রহণ না করে বলেছে, “আপনি কি মনে করেন, স্ত্রীর হেনস্থার কারণেই এই স্বামীরা আত্মহত্যা করেছেন? আপনার এই ধারণা ভুল।” মামলাটি গ্রহণ না করলেও, আবেদনকারীকে তাঁর আবেদনটি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানোর অনুমতি দিয়েছে আদালত। আদালত জানিয়েছে, পুরুষ কিংবা মহিলা – কেউই আত্মহত্যা করতে চায় না। প্রতিটি মামলার ক্ষেত্রে আত্মঘাতী হওয়ার ভিন্ন ভিন্ন কারণ থাকে। এই সমস্যাগুলি সমাধানের জন্য ভারতীয় দণ্ডবিধিতে পর্যাপ্ত বিধান রয়েছে।
আদালত আরও বলেছে, আবেদনকারী বিবাহিত পুরুষদের প্রতি সহানুভূতিশীল। কিন্তু, কারও প্রতি ভুল ধারণা থেকে সহানুভূতি থাকাটা ঠিক নয়। বিয়ের পর কতজন অল্প বয়সী মেয়ের মৃত্যু হয়, আবেদনকারী সেই খবর রাখেন কিনা, সেই প্রশ্নও করে আদালত। বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চ আবেদনকারীকে বলেছে, “আপনি শুধু এক তরফের ছবি তুলে ধরছেন। বিয়ের পর অল্পবয়সী মেয়েদের মৃত্যু সম্পর্কে কোনও তথ্য কি আপনি আমাদের দিতে পারবেন? কেউই আত্মহত্যা করতে চায় না। প্রতিটি পৃথক মামলা, সেই মামলার বিভিন্ন তথ্যের উপর নির্ভর করে।”
মহেশ তিওয়ারি তাঁর আবেদনে দাবি করেছিলেন, পারিবারিক সমস্যার কারণে ভারতে পুরুষদের আত্মহত্যার সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি জানিয়েছিলেন, গোটা বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ৮০,০০,০০০ মানুষ আত্মঘাতী হন। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো বা এনসিআরবি (NCRB)-র দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-এ শুধু ভারতেই ১,৬৪,০৩৩ জন আত্মহত্যা করেছেন। এর মধ্যে ৮১,০৬৩ জনই বিবাহিত পুরুষ। এর মধ্যে প্রায় ৩৩.২ শতাংশ পুরুষ সাংসারিক সমস্যার কারণে এবং ৪.৮ শতাংশ পুরুষ বৈবাহিক সমস্যার কারণে আত্মঘাতী হয়েছেন বলে দাবি জানিয়েছিলেন ওই আইনজীবী।
তিনি আরও জানিয়েছিলেন, ভারতে প্রতি এক লক্ষ মানুষের মধ্যে ১২ জন আত্মহত্যা করেন। ১৯৬৭ সালের পর থেকে আত্মহত্যার কারণে এত মৃত্যু হতে এর আগে দেখা যায়নি। ২০২০ সালের তুলনায় ২০১-এ আত্মহত্যার সংখ্যা ৭.২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। গোটা বিশ্বের মধ্যে ভারতেই আত্মহত্যার কারণে মৃত্যুর সংখ্যা সবথেকে বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, আত্মহত্যা ভারতে একটি গুরুতর জনস্বাস্থ্যগত সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।