‘খোলাখুলি বলছি…এটা বন্ধ করুন’, ডিজিপি নিয়োগ মামলায় রাজ্যকে তুলোধোনা শীর্ষ আদালতের
তীব্র ভর্ৎসনা করা হয়েছে রাজ্যের পক্ষ থেকে প্রতিনিধিত্ব করা আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরাকে।
নয়া দিল্লি: ইউপিএসসি-র হস্তক্ষেপ ছাড়াই রাজ্যে পুলিশ প্রধান নিয়োগের মামলায় সুপ্রিম কোর্টে জোর ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার। কেন্দ্র-রাজ্য অম্ল-মধুর সম্পর্কের প্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার সুপ্রিম কোর্টে একটি আপিল করেছিল। যেখানে দাবি করা হয়, ডিজি নিয়োগের ক্ষমতা যেন রাজ্যের হাতেই দেওয়া হয়। এবং এতে ইউপিএসসি-র কোনও হস্তক্ষেপ না থাকে। শুক্রবার এই মামলাটি সমূলে খারিজ করে দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে তীব্র ভর্ৎসনা করা হয়েছে রাজ্যের পক্ষ থেকে প্রতিনিধিত্ব করা আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরাকে।
বিচারপতি নাগশ্বের রাওয়ের ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন মামলাটি খারিজ করে জানায়, “এই ধরনের আবেদন করবেন না। ইউপিএসসি-কে বাইপাস করে ডিজি নিয়োগ করা যাবে না।” শুনানি চলাকালীন তাৎপর্যপূর্ণ পর্যবেক্ষণে শীর্ষ আদালত রাজ্যের কৌঁসুলিকে বলে, “আমরা আপনাকে এই পিটিশন প্রত্যাহার করার সুযোগ দিচ্ছি। বিষয়টি নিয়ে পরে তর্ক করা যেতে পারে। আমাদের কাছে একক ব্যক্তির দায়ের করা অসংখ্য মামলা রয়েছে। এখন রাজ্য সরকারও যদি এসব করতে শুরু করে, আমরা (অন্যান্য) মামলা শুনব কী ভাবে? আর আপনারা বলেন যে জামিনের আবেদন শোনা হয় না!”
রাজ্যের আইনজীবীকে রীতিমতো তিরস্কারের সুরে বিচারপতি রাও বলেন, “আপনাদের (একই ধরনের) আবেদন আগেও খারিজ হয়েছে। মিস্টার লুথরা, খুব খোলাখুলি বলছি। দয়া করে বারবার একই ধরনের আবেদন জানানো বন্ধ করুন। এটা বিচার ব্যবস্থার একপ্রকার প্রহসন।”
রাজ্য সরকারের দাবি, পুলিশের ডিজি নিয়োগের ক্ষেত্রেও কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের সঙ্গে বঞ্চনা করে। প্রক্রিয়ায় অযথা গড়িমসি করা হয়। বারবার আবেদন জানানো হলেও সময় মতো ইউপিএসসি-র প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় না। এই কারণগুলি দেখিয়েই রাজ্য আবেদন জানায় যাতে ডিজি নিয়োগের স্বাধীনতা পুরোপুরি রাজ্য সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। জরুরি ভিত্তিতে এই আবেদনের শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানান রাজ্যের আইনজীবী। কিন্তু এই মামলার শুনানি শুরু হতে না হতেই আদালতের তোপের মুখে পড়তে হল রাজ্য সরকারকে।
উল্লেখ্য, গত ৩১ অগস্ট রাজ্যের ডিজি পদ থেকে অবসর নেন বীরেন্দ্র। সেই শূন্যস্থান এখনও পূরণ করা যায়নি ইউপিএসসি-র ছাড়পত্র সংক্রান্ত বিষয়ে। যে কারণে আপাতত রাজ্যের কার্যনির্বাহী ডিজির ভূমিকা পালন করছেন মনোজ মালব্য। যাতে এই ধরনের সমস্যা না হয় সেটা নিশ্চিত করতেই রাজ্য চেয়েছিল ডিজি নিয়োগের ক্ষেত্রে যাতে ইউপিএসসি-কে এড়িয়ে যাওয়া যায়। সেই মামলাটি বিচারপতি নাগেশ্বর রাওয়ের এজলাসে উঠেছিল এ দিন। কিন্তু পত্রপাট খারিজ হয়ে গেল। রাজ্য যাতে বারবার একই ধরনের মামলা নিয়ে শীর্ষ আদালত ব্যতিব্যস্ত না, সেই হুঁশিয়ারিও পরোক্ষে এ দিন দিয়ে রেখেছে আদালত। আরও পড়ুন: ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় অবশেষে সিটের দায়িত্বে অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি চেল্লুর