‘আদালতের চোখ ঢাকার চেষ্টা’, দিল্লি হিংসাকাণ্ডে পুলিশি তদন্তের তুমুল সমালোচনা আদালতের

বিচারপতি বিনোদ যাদব বলেন, "আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি যে ইতিহাসে যখনই দেশভাগের পর দিল্লিতে সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনাগুলি দেখা হবে, তখন এই মামলাটি তদন্তকারী দলের ব্য়র্থতা হিসাবেই দেখা হবে।"

'আদালতের চোখ ঢাকার চেষ্টা', দিল্লি হিংসাকাণ্ডে পুলিশি তদন্তের তুমুল সমালোচনা আদালতের
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 03, 2021 | 2:05 PM

নয়া দিল্লি: দিল্লি হিংসা (Delhi Riot) মামলায় আদালতের তুমুল সমালোচনার মুখে পড়ল দিল্লি পুলিশ (Delhi Police)। ইতিহাসে এই ঘটনাটি দিল্লি পুলিশের  তদন্তে ব্য়র্থতা বলেই মনে রাখা হবে বলে তুলোধনা করে আদালত।

২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে উত্তর পূর্ব দিল্লিতে যে হিংসার ঘটনা ঘটেছিল, তাতে আপ(AAP) কাউন্সিলর তাহির হুসেনের ভাই শাহ আলমকে গ্রেফতার করেছিল দিল্লি পুলিশ। হিংসার সময়ে দিল্লির চাঁদবাগ এলাকায় দোকানপাট ভাঙচুর ও লুঠের অভিযোগে  তাঁকে বেআইনি কার্যকলাপ (বিরোধী) আইনে গ্রেফতার করা হয়। এ দিন সেই  মামলাতেই শাহ আলম সহ তিন জনকে মুক্তি দেয় দিল্লি আদালত।  একইসঙ্গে দিল্লি পুলিশের তদন্তের সমালোচনাও করা হয়। যে পুলিশ কন্সটেবলকে সাক্ষী হিসাবে আদালতে হাজির করেছিল পুলিশ, তাও যে সাজানো, তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে বলে জানায় আদালত।

সেশন আদালতের অতিরিক্ত বিচারপতি বিনোদ যাদব দিল্লি পুলিশের সমালোচনা করে বলেন, “এই মামলাটি সম্পূর্ণরূপে করদাতাদের টাকা ধ্বংস করার একটি প্রয়াস, যেখানে পুলিশ আদালতের চোখে বেঁধে রাখার চেষ্টা করেছে।” আদালতের তরফে জানানো হয়, ঘটনাস্থলে যে অভিযুক্তরা উপস্থিত ছিল, তার কোনও সিসিটিভি ফুটেজ নেই। কোনও প্রত্য়ক্ষদর্শী বা চক্রান্তের প্রমাণও দিতে পারেনি পুলিশ।

বিচারপতি বিনোদ যাদব বলেন, “আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি যে ইতিহাসে যখনই দেশভাগের পর দিল্লিতে সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনাগুলি দেখা হবে, তখন এই মামলাটি তদন্তকারী দলের ব্য়র্থতা হিসাবেই দেখা হবে।” দিল্লি পুলিশের সমালোচনা করে তিনি আরও জানান, বিনা প্রত্যক্ষদর্শী, প্রমাণ বা আসল অভিযুক্তদের না খুঁজেই কেবলমাত্র একটি চার্জশিট দাখিল করে মামলার নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করা হয়েছিল। তদন্তে দক্ষতা ও  সংবেদনশীলতার অভাব ছিল বলেও জানানো হয়।

আদালতের মূল্যবান সময় নষ্ট করে এই ধরনের মামলা করার অনুমতি দেওয়া যায় না বলেও জানানো হয় আদালতের তরফে। দীর্ঘদিন ধরে তদন্ত চালিয়েও পুলিশ কেবলমাত্র পাঁচজন সাক্ষীকেই হাজির করতে পেরেছে। এদের মধ্যে একজন হিংসায় আহত ব্যক্তি, একজন ডিউটি অফিসার, একজন তদন্তকারী অফিসার ও কন্সটেবলকে হাজির করা হয়েছিল, যারা অভিযুক্তদের চিন্হিত করেছিল। বিচারপতি জানান, সাক্ষী হিসাবে হাজির করা ওই কন্সটেবলের রিপোর্ট জমা দিতে দেরী হওয়ায় প্রায় বোঝাই যাচ্চে যে দিল্লি পুলিশই ওই কন্সটেবলকে সাক্ষী হিসাবে পেশ করা হয়েছিল।

বিচারপতি বলেন, “কোনও আসল বা কার্যকরী তদন্ত করা হয়নি। পুলিশ কেবল কন্সটেবলের বয়ান রেকর্ড করেই মামলাটি বন্ধ করার চেষ্টা করেছে। তদন্তকারী সংস্থা যে রেকর্ডগুলি জমা দিয়েছিল, তা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণ করার জন্য পর্যাপ্ত নয়। সেই কারণেই তিন অভিযুক্তকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে।” আরও পড়ুন: অমরিন্দর- সিধুর দ্বৈরথ! সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাই কম্যান্ড