Supreme Court Verdict: মোদী সরকারের নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত ‘বৈধ’, কী কী যুক্তি দেখাল সুপ্রিম কোর্ট
নোটবন্দির সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা নিয়ে মোট ৯টি ইস্যু উঠেছিল। তার মধ্যে আমার পুরো বিষয়টি ৬টি ইস্যুতে নিয়ে এসে সেগুলি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

নয়া দিল্লি: নরেন্দ্র মোদী সরকারের নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত ‘বৈধ’ বলে স্বীকৃতি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি এস এ নজিরের ৫ সদস্যের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের ৪:১ মতামতে স্বীকৃতি পেল মোদী সরকারের নোটবন্দির ঘটনা। ‘Grounds of Proportionality’-র ভিত্তিতেই নোটবন্দি বৈধ বলে স্বীকৃতি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এস এ নজিরের ৫ সদস্যের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এদিন নরেন্দ্র মোদী সরকারের নোট বাতিলের সিদ্ধান্তে সিলমোহর দেয়। এস এ নজির ছাড়াও ৫ বিচারপতির মধ্যে রয়েছেন, বিচারপতি বি আর গবাই, বিচারপতি এ. এস বোপান্না, বিচারপতি রামা সুব্রহ্মণ্যম এবং বিচারপতি বি.বি নাগরত্না। এঁদের মধ্যে বিচারপতি নাগরত্না নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের বিপক্ষে মত ব্যক্ত করেছেন। অন্যান্য বিচারপতিদের মতে, মূলত যে তিনটি কারণে নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেগুলির উদ্দেশ্য সঠিক এবং এগুলির মধ্যে একটি যুক্তিসঙ্গত সম্পর্ক ছিল। এছাড়া নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত মোদী সরকার হঠাৎ করে নেয়নি। এর কার্যকারিতা নিয়ে একটি সেন্ট্রাল বোর্ড গঠন করা হয়। সেই বোর্ডের সদস্যরা দেশের অর্থনীতির সবদিক খতিয়ে দেখেই নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের পক্ষে মত দেন। বিষয়টি নিয়ে বিগত ছয় মাস ধরে RBI-এর বিশেষ কমিটির সঙ্গে কেন্দ্রের আলোচনাও হয়। তার প্রেক্ষিতে ২০১৬ সালের ৭ নভেম্বর নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করে সরকার। শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, নোট বাতিল নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়াটিকে দোষ দেওয়া যায় না, কারণ কেন্দ্রের তরফে এ ব্যাপারে প্রস্তাবটি এসেছে।
নোটবন্দির সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা নিয়ে রায় দেওয়ার ক্ষেত্রে মূলত ৬টি ইস্যু নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে বলে রায়ে জানিয়েছেন বিচারপতি বি.আর গবাই। তিনি বলেন, “নোটবন্দির সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা নিয়ে মোট ৯টি ইস্যু উঠেছিল। তার মধ্যে আমার পুরো বিষয়টি ৬টি ইস্যুতে নিয়ে আসি এবং সেগুলি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এই বিষয়ের মধ্যে আদৌ আরবিআই-এর ২৬ (২) ধারাটি কার্যকর হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হয়। ‘Ground of Proportionality’-র ভিত্তিতে ২০১৬-র ৮ নভেম্বর বিজ্ঞপ্তি জারি করা যায় কিনা তাও বিচার করা হয়।” বিচারপতি আরও বলেন, “বর্তমান বাস্তবসম্মত আলোচনার প্রেক্ষিতেই সবকিছু বিচার্য হয়। তাই অযৌক্তিক বিষয়গুলি এড়িয়ে চলতে হবে। আলোচনার সময় আইনের উদ্দেশ্যে বিবেচনা করা অবশ্যই উচিত।” এদিন নোটবন্দি নিয়ে ৪:১ মতামতের ভিত্তিতে আদালতের রায়টি বিচারপতি গবাই পড়ে শোনান।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিল করে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। কালো টাকা ঠেকাতেই নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানায় কেন্দ্র। যদিও হঠাৎ করে সরকারের নোটবন্দির ঘোষণায় বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষ। নোট বদল করতে গিয়ে ব্যাঙ্কে লাইনে দাঁড়িয়ে অসুস্থ হয়ে বহু মানুষের মৃত্যুও হয়। এরপর নোটবন্দির সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে ৫৮টি পিটিশন জমা পড়ে। আবেদনকারীদের দাবি ছিল, সরকারের এই সিদ্ধান্ত পরিকল্পিত নয় এবং অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত বাতিল করা উচিত। যদিও এখন আর সিদ্ধান্ত বদল করা সম্ভব নয় বলে দাবি জানায় সরকার। দীর্ঘ শুনানির পর এদিন এ বিষয়ে ঐতিহাসিক রায় দিল শীর্ষ আদালত।





