Sweeping Staff of Odisha: পিঠে বাঁধা দুধের সন্তান, ঝাঁটা হাতে নর্দমা পরিষ্কার করার মাঝেই দুধ খাওয়ান লক্ষ্মী

Sweeping Staff of Odisha: ১০ বছর ধরে এই কাজ করছেন লক্ষ্মী। আর এখন তাঁর সঙ্গী হয়ে আসে তাঁর ১১ মাসের সন্তান।

Sweeping Staff of Odisha: পিঠে বাঁধা দুধের সন্তান, ঝাঁটা হাতে নর্দমা পরিষ্কার করার মাঝেই দুধ খাওয়ান লক্ষ্মী
এ ভাবেই রোজ কাজে আসেন লক্ষ্মী
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 29, 2022 | 12:57 PM

ওড়িশা: মায়ের আদর পাওয়া প্রত্যেক শিশুর অধিকার। সম্প্রতি মাতৃত্বকালীন ছুটি সংক্রান্ত এক মামলায় এমন বার্তা উঠে এসেছে। কিন্তু মাতৃত্বকালীন ছুটির জন্য আইনি লড়াই করার কথা যাঁরা ভাবতেও পারেন না, অথচ পরিবারের পেট চালানোর দায় যাঁদের কাঁধে, তাঁদের কী উপায়? তাঁদের সন্তানদের কপালে কি জোটে মায়ের আদর? ওয়ার্কিং মাদার বলতে তো শুধুমাত্র সেই সব মহিলাদের বোঝায় না, যাঁরা ঠাণ্ডা ঘরে বসে কাজ করেন, যাঁদের গভর্নেসকে বা ক্রেশে দেওয়ার মতো অর্থ রয়েছে। এমন অনেক মাকেও প্রতিদিন কাজে বেরতে হয়, যাঁদের সন্তান হয়ত ছেঁড়া কাঁথায় কাঁদতে কাঁদতেই ঘুমিয়ে পড়ে, কোলে তুলে নেওয়ার মত কেউ থাকে না। ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলার বারিপদ এলাকার সাফাইকর্মী লক্ষ্মী মুখী, সেই কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছে।

প্রতিদিন সকাল হলেই এলাকার মানুষ তাঁকে দেখতে পান ঝাঁটা হাতে। আজ নয়, অনেক বছর ধরে ওই এলাকায় সাফাইয়ের কাজ করেন লক্ষ্মী। অনেকেই তাঁর মুখ চেনেন। কিন্তু সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে, তাঁর পিঠে বাঁধা দুধের শিশু। মায়ের পিঠে ঝুলে এদিক ওদিক তাকায় সে। আর নালা-নর্দমা থেকে রাস্তা, সবটাই মন দিয়ে পরিষ্কার করেন লক্ষ্মী। কাজে কোনও খামতি নেই তাঁর। শুধু একটি বিরতির দরকার হয়। ছেলেটাকে দুধ খাওয়ান হয় সেই সময়। রোদ হোক বা বৃষ্টি, সবসময় একইভাবে দেখা যায় তাঁকে।

জানা গিয়েছে বারিপদ পুরসভার চুক্তিভিত্তিক সাফাইকর্মী হলেন লক্ষ্মী। একসঙ্গে দুই গুরুদায়িত্বই পালন করেন তিনি। পেশা আর পরিবার কোনও কাজেই খামতি নেই তাঁর। ওড়িশার ঝিনেই গ্রামের বাসিন্দা তিনি। ওড়িশার সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, লক্ষ্মীর স্বামীর উপার্জন তেমন ভাল নয়। চারজনরে পরিবারে খাবার জোটানো মুস্কিল হয়ে যায়। তাই কাজ ছাড়তে পারছেন না তিনি। আর দুই কাজ হাসিমুখেই সামলে চলেছেন লক্ষ্মী।

কিন্তু কেন এ ভাবে সন্তানকে প্রতিদিন আনতে হয়? প্রশ্নের উত্তরে লক্ষ্মী জানান, কারও কাছে সন্তানকে রেখে আসতে চান না তিনি। তিনি মনে করেন, এই সংসারে কাউকেই বিশ্বাস করতে পারেন না তিনি। তাই ১১ মাসের সন্তানকে ছেড়ে এক মুহূর্তও কাটাতে চান না লক্ষ্মী। তিনি জানান, ১০ বছর ধরে এই কাজ করছেন তিনি। আর সঙ্গে না আনলে সন্তানকে একা রেখে আসতে হবে, তাই এ ভাবেই প্রতিদিন কাজে আসেন তিনি।

এই প্রসঙ্গে বারিপদ পুরসভার চেয়ারম্যান বাদল মোহান্তি জানিয়েছেন, সন্তানকে নিয়েই লক্ষ্মী প্রতিদিন তাঁর দায়িত্ব পালন করেন তিনি। লক্ষ্মীর কী অসুবিধা হচ্ছে, সে দিকে নজর রাখতে পুরসভার কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন চেয়ারম্যান।