‘ভোল পাল্টাচ্ছে ভাইরাস, তৃতীয় ঢেউ আসছেই’, চরম সতর্কতা বিজ্ঞানীদের

সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ অনিবার্য। ভাইরাস দ্রুত গতিতে ছড়াচ্ছে: ডঃ কে বিজয়রাঘবন

'ভোল পাল্টাচ্ছে ভাইরাস, তৃতীয় ঢেউ আসছেই', চরম সতর্কতা বিজ্ঞানীদের
ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Updated on: May 05, 2021 | 7:50 PM

নয়া দিল্লি: এক বছরেই সারা বিশ্বের রূপ বদলে দিয়েছে একটি ভাইরাস। যার আকার সূচাগ্রের ১ লক্ষ ভাগের ১ ভাগের থেকেও ছোট। সংক্রমণের প্রথম পর্বে মারণ কামড় বসিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল কোভিড (COVID)। দ্বিতীয় ঢেউ যেন আরও শক্তিশালী। রোজ শুধুই হাহাকার। কিন্তু এখানেই শেষ নয়, আবার ফিরছে ভাইরাস। নতুন রূপে, নতুন ভাবে তৃতীয় ঢেউ আসছেই। চরম সতর্কবাণী শোনালেন কেন্দ্রের বিজ্ঞান উপদেষ্টা ডঃ কে বিজয়রাঘবন।

বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান উপদেষ্টা বিজয়রাঘবন। সেখানে তিনি বেশ কয়েকটি আশঙ্কার কথা জানিয়ে তার সঙ্গে লড়ার প্রস্তুতি সেরে নেওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, “সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ অনিবার্য। ভাইরাস দ্রুত গতিতে ছড়াচ্ছে। তবে এটা পরিস্কার নয়, কবে আছড়ে পড়বে তৃতীয় ঢেউ। তাই প্রস্তুতি সেরে নিতে হবে।”

উদ্বেগের জায়গা কোনগুলি?

ভোল পাল্টাচ্ছে ভাইরাস: করোনা দ্রুত নিজেকে পরিবর্তন করছে। বদলে ফেলছে নিজের গঠনগত কাঠামো। তারপর পেরেন্ট ভাইরাসের মতোই লাগাতার প্রতিলিপিকরণ করছে ওই অপত্যগুলি। ফলস্বরূপ তৈরি হচ্ছে ভ্যারিয়েন্ট। সেই ভ্যারিয়েন্ট আবার গঠনগত প্রক্রিয়া বদলের কাজ চালাচ্ছে। তার ফলে ডিলিশন-মিউটেশনের মাধ্যমে ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনে অ্যামাইনো অ্যাসিডের পরিবর্তন হচ্ছে। এই প্রক্রিয়া চলতে থাকলে ভাইরাস ফাঁকি দিতে পারে ভ্যাকসিনকেও। এই সম্ভাবনার কথা বারবার বলছেন বিজ্ঞানীরা। কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান উপদেষ্টা ডঃ কে বিজয়রাঘবনের মুখেও একই কথা। তিনি বলেন, “ভারতীয় বিজ্ঞানীরা তো বটেই সারা বিশ্বের বিজ্ঞানীরা ভাইরাসের মিউটেশনকে মাথায় রেখে তা রোখার গবেষণা চালাচ্ছেন।”

ভ্যাকসিনের উন্নতিসাধন: বর্তমানে যে ভ্যারিয়েন্টগুলি ভারতে বা বিশ্বে ছড়িয়েছে তা অনুমোদনপ্রাপ্ত ভ্যাকসিন দিয়েই রোখা সম্ভব। এ বিষয়ে আশ্বস্ত করলেও উদ্বেগের জায়গাটাও জানিয়েছেন ডঃ কে বিজয়রাঘবন। ভাইরাস যেভাবে নিজেকে বদলে ফেলছে, সেখানে ভ্যাকসিনেরও উন্নতিসাধন প্রয়োজন বলে জানান তিনি। অর্থাৎ বর্তমান ভ্যাকসিন ভাইরাসের লাগাতার মিউটেশনকে নাও রুখতে পারে, সেই সম্ভাবনার কথা ভেবেই এ কথা বলছেন রাঘবন, এমনটাই দাবি বিশেষজ্ঞদের। উল্লেখ্য, একাধিক ভ্যাকসিন নির্মাতা সংস্থা ইতিমধ্যেই ভ্যারিয়েন্টের উপযোগী ভ্যাকসিন তৈরি বা বর্তমান ভ্যাকসিনে সেই রূপে উন্নতিসাধনের কাজ চালাচ্ছে।

কেন মিউটেশন এত গুরুত্বপূর্ণ?

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে উপসর্গ, প্রথম বারের থেকে অনেকাংশেই আলাদা। এমনকি ভাইরাস এ বার আরটিপিসিআর টেস্টকেও ফাঁকি দিয়ে যাচ্ছে। কেন এমনটা হচ্ছে? তার আসল কারণ হল ভাইরাসের মিউটেশন। বিজ্ঞানীদের একটা বড় অংশ মনে করেন, এ বারে ভাইরাসের এহেন বাড়বাড়ন্তের জন্য দায়ী ডবল মিউট্যান্ট স্ট্রেন। এই স্ট্রেন হল দু’টি স্ট্রেনের মিশ্রণ। ই৪৮৪কিউ (E484Q) ও এল ৪২৪আর (L424R) এই দুই স্ট্রেন মিলে তৃতীয় স্ট্রেন তৈরি হয়েছে। যা আগের থেকে বেশি ক্ষতিকারক। এই নতুন স্ট্রেনের ফলেই করোনা সংক্রমণ দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরাও। ইতিমধ্যেই প্রকোপ বাড়িয়েছে ট্রিপল মিউট্যান্ট স্ট্রেনও। তাই বিশেষজ্ঞরা অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন এই ভাইরাসের ভোল বদলানোকে।