Gujarat: বিজেপির গড়েই বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ, গুজরাট জয়ে কেজরীবালের নিশানা পতিদার ভোট ব্যাঙ্ক

Guajarat Elections 2022: গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনে জয় পেতে 'পতিদার' সম্প্রদায়ের ভোট ব্যাঙ্ককে নিশানা করেছে আম আদমি পার্টি। বিশেষ করে 'পতিদার' অধ্যূষিত মেহসানায় জয় পেতে ঝাঁপাচ্ছে অরবিন্দ কেজরীবালের দল।

Gujarat: বিজেপির গড়েই বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ, গুজরাট জয়ে কেজরীবালের নিশানা পতিদার ভোট ব্যাঙ্ক
গত সোমবারই মেহসানায় এক বিরাট রোড শো করেছেন অরবিন্দ কেজরীবাল
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 08, 2022 | 3:49 PM

আহমেদাবাদ: বছরের শেষেই গুজরাট লোকসভা নির্বাচন। বরাবরই এই রাজ্যে লড়াইটা ছিল দ্বিমুখী – বিজেপি বনাম কংগ্রেস। তবে, এইবার ছবিটা বেশ কিছুটা বদলে গিয়েছে। দিল্লি, পঞ্জাবের পর, এবার গুজরাট রাজ্যেও শক্তি বৃদ্ধি করতে চাইছে আম আদমি পার্টি। ইতিমধ্য়েই রাজ্যে আপ-এর প্রচারাভিযান শুরু হয়ে গিয়েছে। আর, গুজরাটে ভাল ফল করার লক্ষ্যে, আপ পাখির চোখ করেছে বিজেপির গড় হিসাবে পরিচিত ‘মেহসানা’। যা মূলত ‘পতিদার’ সম্প্রদায় অধ্যূষিত। তবে শুধু মেহসানাতেই নয়, বিজেপিকে কড়া লড়াই ছুড়ে দিতে পতিদার সম্প্রদায়ের ভোটকেই যে নিশানা করছে আপ, তা ঠারে ঠারে বুঝিয়ে দিয়েছেন আপ দলের প্রধান অরবিন্দ কেজরীবালও।

গত সোমবারই (৬ জুন), উত্তর গুজরাটের মেহসানায় এক বিরাট রোড শো করেছেন অরবিন্দ কেজরীবাল। গত দুই মাসের মধ্যে গুজরাটে এটি ছিল কেজরীবালের চতুর্থ কর্মসূচি। তিন দশকের বিজেপি রাজের অবসান ঘটানোর আহ্বান জানান তিনি। লক্ষ্যনীয়ভাবে, তাঁর আক্রমণের নিশানা ছিলেন গুজরাট বিজেপির সভাপতি সিআর পাতিল, মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল নন। সিআর পাতিলের বিরুদ্ধে তিনি রাজ্যে ‘পুতুল সরকার’ চালানোর অভিযোগ করেন। কেজরীবাল বলেন, ‘মানুষ আমায় বলেছেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল। কিন্তু, সত্যিকারের মুখ্যমন্ত্রী তো পাতিল সাহাব, প্যাটেল নন’।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই আক্রমণের মধ্যে প্যাটেলদের আপের পক্ষে আনার চেষ্টা স্পষ্ট। তাঁদের দাবি, গুজরাটের নির্বাচনে সাফল্য পাওয়ার ক্ষেত্রে পতিদার ভোট ব্যাঙ্ক একটা বড় চাবিকাঠি। রাজ্যের জনসংখ্যার ১৪ শতাংশ পতিদার সম্প্রদায়ের। পতিদার সম্প্রদায়ের মূল বসবাস মেহসানাতেই। ২০১৫ সালে যে পতিদার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক উত্থান ঘটেছিল হার্দিক প্যাটেলের সেই আন্দোলনেরও আঁতুড়ঘর ছিল মেহসানা। তবে শুধু মেহসানাতেই নয়, গুজরাটের এই শক্তিশালী ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের মানুষ ছড়িয়ে আছেন গোটা উত্তর গুজরাট, সৌরাষ্ট্র, আহমেদাবাদ, মধ্য গুজরাটের গান্ধীনগর এবং সুরাটেও। গত সাত বছরে গুজরাটের দুই মুখ্যমন্ত্রী (আনন্দীবেন প্যাটেল এবং ভূপেন্দ্র প্যাটেল) এবং একজন উপ-মুখ্যমন্ত্রী (নিতিন প্যাটেল) হয়েছেন এই সম্প্রদায় থেকেই। এর থেকেই এই সম্প্রদায়ের শক্তি বোঝা যায়। এবার এই সম্প্রদায়ের ভোট জয়কেই নিশানা করেছে আম আদমি পার্টি।

তবে, আপের সামনে লড়াইটা মোটেই সহজ নয়। কারণ, মেহসানা বিজেপির গড়ও বটে। ১৯৮৪ সালে গোটা দেশে যখন বিজেপির মাত্র ২ জন সাংসদ ছিল, সেই সময়ও মেহসানা লোকসভায় বিজেপিরই পতাকা উড়ত। এই এলাকায় মোট ৭টি বিধানসভা কেন্দ্র রয়েছে – খেরালু, উনঝা, কড়ি, বিসনগর, বেচারাজি, বিজাপুর এবং মেহসানা। ২০১৭ সালের নির্বাচনে এর মধ্যে ৫টিতেই জয়ী হয়েছিল বিজেপি, বাকি দুটি আসন জিতেছিল কংগ্রেস। পরে কংগ্রেস বিধায়ক আশা প্যাটেল দল পালটে গেরুয়া শিবিরে যোগ দিয়েছিলেন।

এই শক্তিশালী বিজেপি গড়ে তবে কীসের ভরসায় লড়াইয়ে নামছে আপ? কেজরীবালের দল মনে করছে, হার্দিক প্যাটেল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় তাদের সামনে বড় সুযোগ এনে দিয়েছে। হার্দিক বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর, পতিদারদের মধ্যে যে বিজেপি বিরোধী অংশ আছে, সেখানে একটা ফাঁক তৈরি হয়েছে। এতদিন তারা হার্দিককে সমর্থন করলেও, বর্তমানে তিনি গেরুয়া শিবিরে চলে যাওয়ায় কংগ্রেস দলকে নিয়ে তারা হতাশ। বিজেপি এবং কংগ্রেস – দুই দলের উপরই বিরক্ত এই অংশকেই নিজেদের দিকে টানার লক্ষ্য নিয়েছে আপ। দলের স্থানীয় নেতারা বলছেন, ‘গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনে জয় পেতে গেলে মেহসানার যুদ্ধ জিততেই হবে’।