জোড়াফুলের সাফল্যই বিজেপির হাতিয়ার! ‘দিদিকে বলো’র ধাঁচেই রাজ্যবাসীর কথা শুনবেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী

যেকোনও সরকারি প্রকল্প নিয়ে সমস্যা, অভিযোগ থেকে শুরু করে আর্থিক সাহায্য কিংবা হাসপাতালের বেডের আর্জি- সমস্ত কিছুই দিদিকে বলোর হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করে জানানো যেত।  সরকারের তরফে সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপও করা হত। এ বার সেই পরিষেবাই মিলবে ত্রিপুরায়।

জোড়াফুলের সাফল্যই বিজেপির হাতিয়ার! 'দিদিকে বলো'র ধাঁচেই রাজ্যবাসীর কথা শুনবেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী
প্রতীকী চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 03, 2021 | 3:20 PM

আগরতলা: বাংলার মসনদ তৃতীয়বারের জন্য দখলের পর দিদির নজর পড়েছে প্রতিবেশী রাজ্যে। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগেই যেখানে ত্রিপুরায় নিজেদের সংগঠন মজবুত করতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস, সেখানেই রাজ্য়বাসীর মন জয় করতে মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের দেখানো পথই অনুসরণ করছে রাজ্য বিজেপি। “দিদিকে বলো”র অনুসরণেই এ বার ত্রিপুরাতেও সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যাবতীয় দাবি, ক্ষোভ-অভিযোগ জানানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের রাজ্যে “টনিক”-র মতো কাজ করেছিল দিদিকে বলো কর্মসূচি। দলীয় কর্মীদের শক্তি জোগাতেও এই কর্মসূচি বিশেষ সাহায্য করেছিল। ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের মাথা থেকেই বেরিয়েছিল জনসংযোগের এই পরিকল্পনা। দলের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে এবং সাধারণ মানুষের মন জয় করতেও “দিদিকে বলো”র সাফল্য নজিরবিহীন ছিল। বিভিন্ন সময়ে ঘরোয়া আলাপচারিতায় জোড়াফুল শিবিরের অনেকেই স্বীকার করেছেন যে কাটমানি থেকে শুরু করে নানা ঘটনাকে কেন্দ্র করে দলের ভাবমূর্তিতে যেখানে কালি লেগেছিল, তা অনেকটাই দূর করেছিল “দিদিকে বলো” কর্মসূচি।

এ বার সেই পথেই হাঁটছে ত্রিপুরার বিজেপি পরিচালিত সরকার। সেখানেও চালু হচ্ছে দিদিকে বলোর ধাঁচে মুখ্যমন্ত্রীর হেল্পলাইন। সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবকে ফোন করে ত্রিপুরাবাসী তাঁদের বিভিন্ন সমস্যার কথা জানাতে পারবেন। কোনও বিধি নিষেধ নেই,  যে কোনও প্রয়োজনেই মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে যোগাযোগ করতে পারবেন সাধারণ মানুষ।

দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী সোমবার থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর হেল্পলাইন নম্বর চালু হচ্ছে। ১৯০৫- এই নম্বরে ফোন করলেই বিপ্লব দেবের প্রশাসনের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা যাবে। কোনও পরিষেবা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে অভিযোগ বা আবেদন জানালেই সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দফতরকে অবগত করা হবে এবং দ্রুত সমস্য়া সমাধানের চেষ্টা করা হবে। প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রী নিজেও ফোন ধরবেন এবং জনসাধারণের যাবতীয় ক্ষোভ-অভিযোগ শুনবেন বলে জানানো হয়েছে।

যেকোনও সরকারি প্রকল্প নিয়ে সমস্যা, অভিযোগ থেকে শুরু করে আর্থিক সাহায্য কিংবা হাসপাতালের বেডের আর্জি- সমস্ত কিছুই দিদিকে বলোর হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করে জানানো যেত।  সরকারের তরফে সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপও করা হত। দ্রুত ফলাফল মেলার কারণেই রাজ্যবাসীর কাছে জনপ্রিয়তা পেয়েছিল এই জনসংযোগ কর্মসূচি।

বিরোধী দলের নেতা কর্মীরাও এলাকার  নানা সমস্য়া জানানোর সুযোগ পেয়েছিলেন সেই নম্বরে ফোন করেই। পাশাপাশি গোষ্ঠীকোন্দলে জেরবার শাসকদলের নেতা-কর্মীরাও দলের নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। দিদিকে বলোতে ফোনের পরই জেলা বা স্থানীয় নেতারাও সাহায্য পৌঁছে দিয়ে রাতারাতি হিরো হয়ে গিয়েছিলেন।

মুখ্য়মন্ত্রী বিপ্লব দেবকে নিয়ে দলের অন্দরে অসন্তোষ এবং ভাঙন রুখতে এই নতুন জনসংযোগ কর্মসূচি সফল হবে বলেই মনে করছেন বিজেপি নেতা-মন্ত্রীরা। সমস্যা সমাধানের মাধ্যমেই সাধারণের মন বুঝতে এই কর্মসূচি লাভজনক হবে বলেই আত্মবিশ্বাসী সকলে। একইসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্যে প্রবেশে কতটা প্রভাব পড়েছে, তাও আন্দাজ করে নিয়ে বিধানসভা নির্বাচনের আগেই প্রয়োজনীয় ড্যামেজ কন্ট্রোল করা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। আরও পড়ুন: বিজেপি কর্মীরা একসঙ্গে থুতু ফেললেই ধুয়ে-মুছে সাফ হয়ে যাবে কংগ্রেস!