বৈঠকে দলের বিরুদ্ধেই অভিযোগ ২ হাজার বিজেপি কর্মীর! ‘ড্যামেজ কন্ট্রোলে’ মাঠে নামল কংগ্রেসও

সরকারের কাছে যাতে দলীয় কর্মীদের অসন্তোষ পৌঁছে যায়, তার জন্যই এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল বলে দাবি করেন সুদীপ রায় বর্মণ।

বৈঠকে দলের বিরুদ্ধেই অভিযোগ ২ হাজার বিজেপি কর্মীর! 'ড্যামেজ কন্ট্রোলে' মাঠে নামল কংগ্রেসও
সুদীপ রায় বর্মণ।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 29, 2021 | 9:19 PM

আগরতলা: বিজেপি(BJP)-তে ফের অশনি সঙ্কেত! দল নিয়ে ক্ষোভ মিটছেই না কর্মীদের। ভাঙন ধরতে পারে যে কোনও মুহূর্তেই, আর সেই মুহূর্তের অপেক্ষাই করে রয়েছে তৃণমূল (TMC)। রবিবার বিজেপি বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণ (Sudip Roy Burman) দলের আরও চার বিধায়ক ও প্রায় দুই হাজার দলীয় কর্মীকে নিয়ে আলোচনায় বসলেন। বৈঠকের মুখ্য আলোচ্য বিষয় ছিল দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ।

এক সময় তৃণমূল ছেড়েই বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন সুদীপ রায় বর্মণ। কিন্তু সময়ের সঙ্গে রাজ্য রাজনীতির পটচিত্রও বদলেছে। মুকুল রায়ের ঘর ওয়াপসির পর থেকেই গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, ফের তৃণমূলেই যোগ দিতে পারেন তিনি। এরই মাঝে রবিবার আগরতলার তুলসীবতী বালিকা বিদ্যালয়ে বৈঠকের আয়োজন করেন বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণ। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আরও চার বিধায়ক আশীষ সাহা, আশীষ দাস, দিবাচন্দ্র রাখাল ও বুর্ব মোহন। সুদীপদের সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করে নেন বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি রনজয় দেবও। উপস্থিত ছিলেন বিজেপির প্রায় দেড় থেকে দুই হাজার কর্মী।

দল ও সরকার কর্মীদের কথা শুনছে না, এই অভিযোগ দীর্ঘদিনের। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের বিরুদ্ধেও বারংবার মুখ খুলেছেন দলীয় নেতারা। শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ জানালেই সমস্য়ার সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তা আশ্বাসেই আটকে থেকেছে, সমস্যা মেটেনি দলীর কর্মীদের। এ দিনের বৈঠকেও দলের বিরুদ্ধেই ক্ষোভ উগরে দেন সকলে। সরকারের কাছে যাতে দলীয় কর্মীদের অসন্তোষ পৌঁছে যায়, তার জন্যই এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল বলে দাবি করেন সুদীপ রায় বর্মণ। তবে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁরা কোনও যোগাযোগ করেননি বলেই দাবি করেন তিনি।

তিনি জানান, রাজ্যে আইনের শাসন উন্নত করা উচিত। বিজেপি সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রীর মতে, রাজ্যে আইন শৃঙ্খলা উন্নত করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। প্রত্যেকের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের সুযোগও পাওয়া উচিত বলে দাবি করেন তিনি। সুদীপ বলেন, “রাগ-অভিমান থাকবেই। কিন্তু এদের কথা শোনা উচিত। বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি থেকে শুরু করে যারাই উপস্থিত রয়েছেন, সকলেই নিজেদের ক্ষোভের কথা বলছেন। সকলের অভিযোগ শুনে তা সরকার ও শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে জানানো হবে। ভুল সকলেরই হতে পারে, কিন্তু তা সংশোধন করা প্রয়োজন।”

এ দিকে, শাসক দলের অন্দরেই যখন ক্ষোভের ফোয়ারা তৈরি হয়েছে, সেই সময়ই সতর্ক হয়েছে বিরোধী দল। রাজ্যে দলের হাল হকিকত ও দলীয়কর্মীদের ক্ষোভ শুনতে আগরতলায় গিয়েছেন কংগ্রেসের ত্রিপুরার কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক অজয় কুমার। জানা গিয়েছে, ত্রিপুরায় কংগ্রেসের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি পীযূষ কান্তি বিশ্বাসের সঙ্গে তিনি কথা বলবেন। একইসঙ্গে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে কর্মীদের সঙ্গেও কথা বলবেন। রবিবার সকালেই তিনদিনের সফরে আগরতলায় পৌঁছন অজয় কুমার।

উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই দলের সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন পীযূষ কান্তি বিশ্বাস। তবে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তিনি সেই ইস্তফাপত্র প্রত্যাহার করে নেন। দলের ভাঙন রুখতেই কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকের এই সফর বলে মনে করা হচ্ছে। আরও পড়ুন: ঘুরতে যেতে হাতে রাখতে হবে না করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট! কেন্দ্রের নয়া উদ্য়োগে স্বস্তিতে যাত্রীরা