Presidential Election Explained: কোবিন্দের পর কে বসবেন রাইসিনায়? উত্তর লুকিয়ে উত্তর প্রদেশে

Presidential Election of India: পাটিগণিতের সমীকরণ বলছে, বিরোধী আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে কংগ্রেস-বিজেপি থেকে সমদূরত্ব রেখে চলা দলগুলি মিলে গেলে, বিজেপির জন্য হিসেবটা মোটেও সহজ হবে না।

Presidential Election Explained: কোবিন্দের পর কে বসবেন রাইসিনায়? উত্তর লুকিয়ে উত্তর প্রদেশে
রাষ্ট্রপতি ভবন (ফাইল ছবি)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 06, 2022 | 9:51 PM

নয়া দিল্লি : জুলাইয়ের মাঝামাঝি দেশে আয়োজিত হতে চলেছে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন (Presidential Election)। তার আগে দেশের পাঁচটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে। পরবর্তী রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে এই পাঁচ রাজ্যের সব মিলিয়ে ৬৯০ টি বিধানসভা কেন্দ্রের ফলাফল অনেকটাই নির্ধারক ভূমিকায় উঠে আসতে পারে। এছাড়াও রয়েছে ১৯ টি রাজ্যসভার সাংসদের আসন। এই আসনগুলি মূলত খালি রয়েছে ভোটমুখী পাঁচ রাজ্যের তিনটি রাজ্য থেকে। যেহেতু নির্বাচিত বিধায়ক এবং সাংসদরা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্নপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন, তাই এই পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন এক বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে আগামী দিনে। সেক্ষেত্রে উত্তর প্রদেশ (Uttar Pradesh Polls) এবং উত্তরাখণ্ডে বিধানসভা নির্বাচনে আঞ্চলিক দলগুলির রণকৌশলে কেমন হতে চলেছে, তার উপর অনেকটাই নির্ভর করছে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া।

২০১৭ সালের তুলনায় অঙ্ক কঠিন

উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৭ সালের নির্বাচনের সময় এনডিএকে বিশেষ বেগ পেতে হয়নি। বরং, অনেকটাই সহজ ছিল লড়াইটা। কারণ বিজেপি এবং তার শরিক দলগুলি উত্তর প্রদেশে ৪০৩ টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৩২৫টি এবং উত্তরাখণ্ডে ৭০টির মধ্যে ৫৭টি জিতে এসেছিল৷ এদিকে, বর্তমানে, পশ্চিমবঙ্গ, তেলাঙ্গানা, তামিলনাড়ু, ওড়িশা, অন্ধ্র প্রদেশ, কেরল, ঝাড়খণ্ড, মহারাষ্ট্র, ছত্তীসগঢ়, রাজস্থান এবং দিল্লির মতো রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলগুলিতে বিভিন্ন অ-বিজেপি দলগুলি ক্ষমতায় রয়েছে। এক্ষেত্রে এই বিজেপি বিরোধী দলগুলি যদি একজোট হয়ে যায়, তাহলে বেশ বেগ পেতে হতে পারে বিজেপিকে। বিশেষ করে অবিজেপি দলগুলি যদি ঐক্যমত্যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য কোনও প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে পাল্লা যৌথ-সিদ্ধান্তের বিরোধী প্রার্থীর দিকে ঝুঁকে যেতেও পারে। অন্তত এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

নির্ণায়ক ভূমিকায় আসতে পারে যোগী রাজ্যের ৪০৩ বিধায়ক

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ক্ষেত্রে উত্তর প্রদেশ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে। কারণ, এই রাজ্যের বেশি জনসংখ্যার কারণে, প্রতিটি বিধায়কের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে ভোটের মূল্য সবচেয়ে বেশি। এই পরিস্থিতিতে পাঁচটি রাজ্যের ৬৯০ টি বিধানসভা আসনের ফলাফল (উত্তর প্রদেশের ৪০৩ টি, পঞ্জাবের ১১৭ টি, উত্তরাখণ্ডের ৭০ টি, মণিপুরের ৬০ টি এবং গোয়ার ৪০ টি) ছাড়াও রাজ্যসভার আসন সমীকরণও পরবর্তী রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলেই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।

কীভাবে হয় রাষ্ট্রপতি নির্বাচন?

ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রক্রিয়ায় আমজনতা সরাসরি অংশগ্রহণ করে না। পরবর্তে, আমজনতার নির্বাচিত জন প্রতিনিধিদের ভোট থেকে নির্বাচিত হন দেশের রাষ্ট্রপতি। এক্ষেত্রে দেশের প্রতিটি রাজ্য ও কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চলের বিধায়ক এবং লোকসভা ও রাজ্যসভার নির্বাচিত সাংসদের ভোটের মাধ্যমে দেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।

কিন্তু দেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া একটি জটিল। এ ক্ষেত্রে সব বিধায়ক ও নির্বাচিত সাংসদদের ভোটের মূল্য আলাদা হয়। মূলত, কোনও রাজ্যের জন সংখ্যার উপর ভিত্তি করে এই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রত্যেক বিধায়কের ভোটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়। বর্তমানে যে নিয়ম রয়েছে, তা অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিধায়কদের ভোটের মূল্য হয় সংশ্লিষ্ট রাজ্যের মোট জনসংখ্যাকে মোট বিধায়ক সংখ্যার ১০০ গুণ দিয়ে ভাগ করলে যা হয়, সেটি। সেই হিসেবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মোট ভোট ১০ লাখ ৯৮ হাজার ৯০৩। আর সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া যায় ৫ লাখ ৪৯ হাজার ৪৫২ ভোটে। সংসদের উভয় কক্ষ মিলিয়ে মোট ৭৭৬ জন সাংসদ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় অংশ নেন। তার সঙ্গে রয়েছেন দেশের সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল মিলিয়ে ৪ হাজার ১২০ জন বিধায়কের ভোট। সে ক্ষেত্রে উত্তর প্রদেশের জনসংখ্যা এবং বিধায়ক সংখ্যা উভয়ই বেশি। তারপরেই মহারাষ্ট্র। তৃতীয় স্থানে পশ্চিমবঙ্গ।

কেন উত্তর প্রদেশের মসনদ দরকার বিজেপির?

বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষিতে, উত্তর প্রদেশই কেবল নিজেদের দখলে রেখেছে বিজেপি। মহারাষ্ট্র ও পশ্চিমবঙ্গ উভয় জায়গাতেই অবিজেপি শক্তি। আর পাটিগণিতের সমীকরণ বলছে, বিরোধী আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে কংগ্রেস-বিজেপি থেকে সমদূরত্ব রেখে চলা দলগুলি মিলে গেলে, বিজেপির জন্য হিসেবটা মোটেও সহজ হবে না। আর তাই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগে উত্তর প্রদেশের উপর নিজেদের দখল ধরে রাখার মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিজেপি।

উল্লেখ্য, দেশের বর্তমান রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের মেয়াদ প্রায় শেষের দিকে। আগামী জুলাই মাসে দেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি বেছে নেওয়ার জন্য নির্বাচন প্রক্রিয়া হতে চলেছে। এ ক্ষেত্রে কোন শিবিরের পছন্দের প্রার্থী রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন, তার উপর অনেকটাই নির্ভর করছে আগামী দিনে বিজেপি সরকারের পথ কতটা মসৃণ হতে চলেছে। কিন্তু এই নির্বাচনে বিরোধী দলগুলির সাংসদ, বিধায়করা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে। আর তারা যদি এক কাট্টা হয়ে যায়, তাহলে মোদী সরকারের জন্য নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে রাষ্ট্রপতি করে জিতিয়ে আনার প্রক্রিয়া মোটেই সহজ হবে না। অন্তত এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

বিশেষ করে উত্তর প্রদেশের নির্বাচনে এবারও ২০১৭ সালের মতোই বড়সড় একটি ব্যবধানে জিতে আসতে হবে যোগী আদিত্যনাথদের। অর্থাৎ, দিল্লির রাস্তা যে উত্তর প্রদেশে হয়ে যায় বলা হয়, তা রাইসিনা হিলসের ক্ষেত্রেও একইভাবে প্রযোজ্য। সামনেই ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন। সেদিক থেকে উত্তর প্রদেশকে পাখির চোখ করেছে বিজেপি। তবে শুধু ২০২৪ সালই নয়, বিজেপির নজরে রয়েছে জুলাইয়ের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনও। কারণ, ২০২৪ সালের ঠিক আগে বিরোধীদের পছন্দের কোনও প্রার্থী রাষ্ট্রপতি ভবনে থাকাটা, খুব একটা স্বাচ্ছন্দ্যকর নাও হতে পারে বিজেপির জন্য।

বাংলা টেলিভিশনে প্রথমবার, দেখুন TV9 বাঙালিয়ানা 

বাংলা টেলিভিশনে প্রথমবার, দেখুন TV9 বাঙালিয়ানা 

বাংলা টেলিভিশনে প্রথমবার, দেখুন TV9 বাঙালিয়ানা 

বাংলা টেলিভিশনে প্রথমবার, দেখুন TV9 বাঙালিয়ানা