Pawan Jaiswal: সামনে এনেছিলেন মিড-ডে মিলে ‘রুটি নুনের’ খবর, মাঝপথেই যুদ্ধ থামল উত্তর প্রদেশের সেই সাংবাদিকের
Pawan Jaiswal: মিড-ডে মিলের দুর্নীতি ফাঁস করতেই জেলা প্রশাসনের তরফে ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশি অভিযোগে ব্লক এডিকেশন অফিসার দাবি করেন যে ওই সাংবাদিক ও গ্রামের প্রতিনিধিরা চক্রান্ত করে উত্তর প্রদেশ সরকারকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করছে।
নয়া দিল্লি: স্কুল পড়ুয়াদের পুষ্টিকর খাবার দিতেই কেন্দ্রের তরফে চালু করা হয়েছিল মিড-ডে মিল (Mid-day Meal)। খাদ্য তালিকায় ডিম, সোয়াবিন থেকে মাছ, মাংস থাকার কথা। কিন্তু সত্যিই কি তারা সেই খাবার পাচ্ছে? এই রহস্যই ফাঁস করেছিলেন উত্তর প্রদেশের (Uttar Pradesh) এক সাংবাদিক। তাঁর ক্যামেরাতেই ধরা পড়েছিল কীভাবে স্কুলের বারান্দায় বসে নুন দিয়ে শুকনো রুটি খাচ্ছে পড়ুয়ারা। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা তুলে ধরার পর ২০১৯ সালে তাঁর নামে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার অভিযোগও উঠেছিল। তবে সত্যের অনুসন্ধান থামিয়ে দেননি তিনি। কিন্তু মাঝপথে থেমে গেল যুদ্ধ। মারণ কর্কট রোগের কাছে হার মানতে হল তাঁকে। বৃহস্পতিবার মৃত্যু হয় পবন জয়সওয়াল নামক ওই সাংবাদিকের।
জানা গিয়েছে, সরকারি অব্যবস্থার পর্দা ফাঁস করার পর থেকেই আর্থিক সঙ্কটে ভুগছিলেন ওই সাংবাদিক। চিকিৎসার খরচ চালানোর জন্য সাধারণ মানুষের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। একাধিক তহবিলও গঠন করা হয়েছিল তাঁকে সাহায্য করার জন্য। কিন্তু সেই তহবিল আর কাজে লাগল না। তাঁর আগেই থেমে গেল যাত্রা।
যে ভিডিয়োটি করে খবরের শিরোনামে এসেছিলেন পবন, তা উত্তর প্রদেশের মির্জাপুরের একটি স্কুলের ছিল। জামালপুর ব্লকের সিউর প্রাইমারি স্কুলের বারান্দায় বসে বাচ্চাদের শুকনো রুটি নুন দিয়ে খেতে দেখা যায়। তিনি প্রশ্ন তোলেন, কেন্দ্রের তরফে যে বরাদ্দ অর্থ আসছে মিড-ডে মিলের জন্য, তা কোথায় যাচ্ছে?
This is Pawan Jaiswal , the #Mirzapur reporter who broke the roti + salt in mid day meal story. He has been booked by @mirzapurpolice for allegedly conspiring against the @UPGovt . In this video he reiterates he reported what he saw . @IndEditorsGuild please take cognizance ! pic.twitter.com/5mU47uufAo
— Alok Pandey (@alok_pandey) September 2, 2019
তবে মিড-ডে মিলের দুর্নীতি ফাঁস করতেই জেলা প্রশাসনের তরফে ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশি অভিযোগে ব্লক এডিকেশন অফিসার দাবি করেন যে ওই সাংবাদিক ও গ্রামের প্রতিনিধিরা চক্রান্ত করে উত্তর প্রদেশ সরকারকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করছে। এদিকে, তাঁর তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতেই স্কুলের শিক্ষক ও গ্রাম পঞ্চায়েতের সুপারভাইজারকে বরখাস্ত করা হয়।
পবন জয়সওয়ালও জবাবে জানান, যে কেউ তাঁর প্রতিবেদনের সত্যতা যাচাই করতে পারেন। তিনি বলেছিলেন, “স্কুলে মিড-ডে মিলে অনিয়ম নিয়ে একাধিকবার আমাকে জানানো হয়েছিল। কখনও পড়ুয়াদের রুটি আর নুন, কখনও আবার ভাত ও নুন খেতে দেওয়া হত। ২২ অগস্ট আমি ভিডিয়োটি শ্যুট করি, তখনও এক ব্যক্তিই আমায় ফোন করে জানিয়েছিলেন। স্কুলে যাওয়ার আগে আমি শিক্ষা অধিকারী ব্রজেশ কুমার সিংকে ফোন করেছিলাম ও স্কুলে যাওয়ার কথা বলেছিলাম। প্রথম ভিডিয়োটি শ্যুট করার পর আমি স্থানীয় রিপোর্টারদের সঙ্গে কথা বলি, যারা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। জেলাশাসক নিজে ওই স্কুলে গিয়ে তদন্ত করেছিলেন এবং অভিযুক্তদের সাসপেন্ড করেছিলেন। এখন আমার নামেই অভিযোগ দায়ের করা হচ্ছে কারণ সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। এটা সাংবাদিকতার উপরে আক্রমণ। যে কেউ আমার প্রতিবেদনের সত্যতা যাচাই করতে পারেন।”
এডিটরস গিল্ড অব ইন্ডিয়ার তরফেও সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার সমালোচনা করা হয়। সরকারের পদক্ষেপের সমালোচনা করে ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়ার দাবি জানানো হয়।