Karnataka: খাড়্গের ঘাড়ে মরার উপর খাঁড়ার ঘা! নিজেদের সম্প্রদায়ের মুখ্যমন্ত্রীর দাবি তুলল লিঙ্গায়তরা
Veerashaiva Mahasabha writes to Mallikarjun Kharge: মঙ্গলবার (১৬ মে) কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গেকে একটি চিঠি লিখে বীরাশৈব মহাসভার পক্ষ থেকে কর্নাচকের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কোনও লিঙ্গায়ত নেতাকে বাছাই করার আর্জি জানানো হয়েছে।
বেঙ্গালুরু: ডিকে শিবকুমার না সিদ্দারামাইয়া? কর্নাটক বিধানসভা নির্বাচন ২০২৩-এ দুর্দন্ত ফল করার পর, এখন এটাই মাথাব্যথা জাতীয় কংগ্রেসের। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের কপালের ভাঁজ আরও বাড়ালো সর্বভারতীয় বীরাশৈব মহাসভা। কর্নাটকের লিঙ্গায়ত সম্প্রদায়ের এই সংগঠন দাবি জানিয়েছে, পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী করতে হবে লিঙ্গায়ত সম্প্রদায় থেকেই। তাদের যুক্তি, কংগ্রেসের নব নির্বাচিত বিধায়কদের মধ্যে ৩৪ জনই লিঙ্গায়ত সম্প্রদায়ের। পাশাপাশি আরও ৫০টি বিধানসভা কেন্দ্রেও কংগ্রেসের জয়ের পিছনে বড় ভূমিকা নিয়েছে লিঙ্গায়ত ভোট। কংগ্রেসের জয়ের পিছনে অন্যতম বড় কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে, লিঙ্গায়ত ভোট বিজেপির পক্ষ থেকে কংগ্রেসের পক্ষে আসা। তাই, মুখ্যমন্ত্রী করতে হবে তাদের সম্প্রদায় থেকেই। এই বিষয়ে মঙ্গলবার (১৬ মে) কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গেকে একটি চিঠি দিয়েছে বীরাশৈব মহাসভা।
চিঠিতে তারা বলেছে, এবারের ভোটে কংগ্রেস লিঙ্গায়ত সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে ৪৬ জন প্রার্থী দেওয়া হয়েছিল। তার মধ্য থেকে ৩৪ জনই জয়ী হয়েছেন। পাশাপাশি আরও ৫০ টি আসনে কংগ্রেসের জয়ে প্রধান ভূমিকা নিয়েছে এই সম্প্রদায়। যারা বরাবর বিজেপিকে ভোট দিত, তারা কংগ্রেসের দিকে ঝুঁকেছে। আর তার জন্যই ১৩৪টি আসনে জয় পেয়েছে কংগ্রেস। বীরাশৈব মহাসভা বলেছে, “আমরা কংগ্রেস দলের কাছে, উপরের বিষয়গুলি বিবেচনা করে বীরাশৈব লিঙ্গায়ত সম্প্রদায়ের কোনও নেতাকে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য বিবেচনা করতে আর্জি জানাচ্ছি।” শুধু মুখ্য়মন্ত্রী পদ নয়, মন্ত্রিসভাতেও লিঙ্গায়তদের যাতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ জায়গা দেওয়া হয়, সেই আর্জিও জানিয়েছে বীরাশৈব মহাসভা। তাদের দাবি, লিঙ্গায়ত সম্প্রদায় থেকে যতজন বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন, সেই অনুপাতেই তাদের মন্ত্রিসভায় জায়গা দিতে হবে।
প্রসঙ্গত, এখনও পর্যন্ত কর্নাটকের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কংগ্রেসের আলোচনায় রয়েছে দুইটি নামই – শিবকুমার এবং সিদ্দারামাইয়া। দুজনের কেউই লিঙ্গায়ত সম্প্রদায়ের নন। শিবকুমার ভোক্কালিগা সম্প্রদায়ের এবং সিদ্দারামাইয়া হলেন কুরুবা গৌড়া সম্প্রদায়ের। সর্বভারতীয় বীরাশৈব মহাসভা, মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে লিঙ্গায়ত সম্প্রদায়ের কোনও নির্দিষ্ট নেতার নাম নেননি। তবে, কংগ্রেসের জয়ী বিধায়কদের মধ্যে অনেকেই এই সংগঠনের সদস্য। সংগঠনটির সভাপতি হলেন, ৯১ বছর বয়সী শমানুরু শিবশঙ্করাপ্পা। তিনিই এখন কর্নাটকের বয়স্কতম বিধায়ক। কর্নাটকের সর্ববৃহৎ জনগোষ্ঠী হল এই লিঙ্গায়ত সম্প্রদায়, মোট জনসংখ্যার ১৭ শতাংশই এই সম্প্রদায়ের। মনে করা হয়, কর্নাটকের অন্তত ১০০টি বিধানসভা আসনের ভোট নিয়ন্ত্রণ করে এই সম্প্রদায়। তাই এই সম্প্রদায়ের সমর্থন পেতে সব রাজনৈতিক দলই মরিয়া হয়ে থাকে।
দীর্ঘদিন বিজেপিকেই সমর্থন করেছে এই সম্প্রদায়। তবে, বিএস ইয়েদুরাপ্পাকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া, জগদীশ শেত্তার, লক্ষ্ণণ সাড়াভিদের মতো লিঙ্গায়ত নেতাদের নির্বাচনের টিকিট না দেওয়ার মতো পদক্ষেপে, গেরুয়া শিবির থেকে এবার মুখ ফিরিয়েছে লিঙ্গায়ত সম্প্রদায়। এবার কংগ্রেস লিঙ্গায়তদের সমর্থছন ধরে রাখতে পারে কিনা, সেটাই দেখার। খাড়্গেকে লেখা চিঠিতে বীরাশৈব মহাসভা কিন্তু বলেছে, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ভাল ফল করতে গেলে কংগ্রেসের পক্ষে লিঙ্গায়ত ভোট ধরে রাখাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।