TV9 Explained on Excise Policy: দিল্লি সরকারের ‘মদ বিক্রির নীতি’ কী এমন ছিল যে আজ ‘দুয়ারে’ CBI?
TV9 Explained: দুর্নীতির বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলে দিল্লির ক্ষমতায় এসেছিল কেজরীবালে আম আদমি পার্টি। সরকার জানিয়েছিল, নতুন আবগারি নীতিতে মদের কালো বাজারি কমবে এবং মদ মাফিরা শায়েস্তা হবেন।
নয়া দিল্লি: শুক্রবার সকালেই দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়ার বাড়িতে হানা দিয়েছে সিবিআই। দিল্লির আবগারি নীতি নিয়ে দুর্নীতি তদন্তে মণীশের বাড়িতে হাজির হয়েছিলেন সিবিআই আধিকারিকরা। দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর বিনয় কুমার সাক্সেনা এর আগেই আবগারি নীতি নিয়ে সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করেছিলেন। তাঁর দাবি ছিল, দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী আবগারি নীতিতে দুর্নীতির পিছনে সরাসরি যুক্ত এবং বিভিন্ন ব্যক্তিকে এই আবগারি নীতির মাধ্যমে সুযোগ-সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে তিনি নিজেও আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। বিতর্কের মুখে গতমাসে নয়া আবগারি নীতি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছিল। তাঁর দলের নেতা-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে সিবিআই অভিযান হতে পারে তা আগেভাগে আন্দাজ করে অরবিন্দ কেজরীওয়ালকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘সিবিআই আমাদের গ্রেফতার করতেই পারে’। কিন্তু দিল্লি সরকারে যে আবগারি নীতি নিয়ে এত বিস্তর আলোচনা চলছে, সেই নিয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
নতুন আবগারি নীতি
১৬ নভেম্বর ২০২১ সালে আবগারি নয়া আবগারি নীতির প্রবর্তন হয়েছিল। নতুন নীতিতে মদ কেনার পদ্ধতির পাশাপাশি মদ বিক্রির পদ্ধতিতেও বিস্তর বদল নিয়ে আসা হয়েছিল। নতুন আবগারি নীতিতে সরকারি মদের দোকানগুলি বন্ধ করে ঢালাও বেসরকারি মদের দোকানগুলিকে মদ বিক্রির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। নতুন আবগারি নীতিতে দিল্লির সরকারের পরিকল্পনা ছিল, নতুন করে ৮৪৯টি মদের দোকান খোলার। গোটা শহররে ৩২টি অঞ্চল জুড়ে এই মদের দোকানগুলির খোলার পরিকল্পনা ছিল এবং প্রত্যেকটি জ়োনে ২৭টি করে মদের দোকান থাকার কথা ছিল। এবং একটি জ়োনের সবকটি দোকানই একজন লাইসেন্সধারীর অধীনে থাকবে।দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া আবগারি দফতরের দায়িত্বে ছিলেন।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলে দিল্লির ক্ষমতায় এসেছিল কেজরীবালে আম আদমি পার্টি। সরকার জানিয়েছিল, নতুন আবগারি নীতিতে মদের কালো বাজারি কমবে এবং মদ মাফিরা শায়েস্তা হবেন। এমনকী রাজস্ব বাড়াতেও এই নয়া নীতি সাহায্য করবে। আগের আবগারি নীতিতে দিল্লির মোট ৮৬৪টি মদের দোকানের মধ্যে চারটি সরকারি সংস্থা রাজ্যে ৪৭৫টি মদের দোকান চালাত এবং বাকি ৩৮৯টি সংস্থার বেসরকারি মালিকদের হাতে ছিল।
সমস্যাটা কোথায় হল?
প্রাথমিকভাবে দিল্লি সরকারের নতুন আবগারি নীতি খুবই আশাব্যাঞ্জক ছিল বলে মনে করছিল সংশ্লিষ্ট মহল। দিল্লি সরকার ৭ হাজার ৪১ কোটি টাকার রিজার্ভ মূল্য নিলাম করে ৮ হাজার ৯১৭ কোটি টাকা আয় করেছিল। কিন্তু আবগারি লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে বেনিয়ম এমনকী আর্থিক দুর্নাীতির অভিযোগ উঠেছিল। সেই কারণে নতুন আবগারি নীতি বাস্তবায়নের ঠিক ৮ মাস পর তা প্রত্যাহার করা হয়। নতুন নীতিতে পদ্ধতিগত কিছু সমস্যা ছিল। প্রথম দিনে হাতে গোনা কয়েকটি মদের দোকান খোলা ছিল। পরবর্তীকালে কোনও ক্রমে ৬৪৪টি মদের দোকান খোলা হলেও শেষমেশ ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে না পেরে লাইসেন্স জমা দিতে শুরু করেছিলেন। ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে সরকার পুরনো আবগারি নীততে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
রাজনৈতিক বিতর্ক
কেন্দ্রীয় সরকারে প্রতিনিধি তথা দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর বিনয় কুমার সাক্সেনা দিল্লি সরকারে এই নতুন নীতিতে বিস্তর দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়েছিলেন। সেই সংক্রান্ত মামলারই তদন্ত করছে সিবিআই। কেন্দ্রীর সরকারের অভিযোগ, দিল্লির সরকারে এই নীতির ফলে সরকারি কোষগারের ক্ষতি হয়েছে এবং ‘কমিশন’-এর মাধ্যমে অযোগ্য ব্যক্তিদের মদের লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে। আগামী দিনে এই তদন্ত কোন পথে যায়, সেটাই এখন দেখার।