Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

India vs Bharat row: কোথা থেকে এল ‘ভারত’ নাম, কোথা থেকে এল ‘ইন্ডিয়া’? জেনে নিন ইতিহাস

India vs Bharat row: দেশের এই দুটি নাম এল কোথা থেকে? ভারত নামটির উদ্ধব কীভাবে? ইন্ডিয়া নামটি কি সত্যিই ইংরেজদের দেওয়া, নাকি এরও ইতিহাস অনেক পুরনো?

India vs Bharat row: কোথা থেকে এল 'ভারত' নাম,  কোথা থেকে এল 'ইন্ডিয়া'? জেনে নিন ইতিহাস
প্রতীকী ছবিImage Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 08, 2023 | 7:53 AM

নয়া দিল্লি: সংবিধানে দেশের নাম হিসেবে ‘ইন্ডিয়া’ এবং ‘ভারত’, দুটিই রয়েছে। তা সত্ত্বেও, জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের নৈশভোজের আমন্ত্রণপত্রকে ঘিরে উসকে উঠেছে দেশের নাম নিয়ে বিতর্ক। ‘ইন্ডিয়া’ নামটি বাদ দেওয়া উচিত কিনা, সেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। আবার, কেন্দ্রের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে একটি রেজোলিউশন আনা হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। ২০২০ সালে, ঔপনিবেশিক দাসত্বের অতীত ঝেড়ে ফেলতে সংবিধান থেকে ‘ইন্ডিয়া’ নাম বাদ দিয়ে শুধু ভারত নামটি রাখার জন্য জনস্বার্থ মামলা করা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। সেটি খারিজ করে দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। এই নিয়ে চলতে থাকা বিতর্কের মধ্যে দেখে নেওয়া যাক, দেশের এই দুটি নাম এল কোথা থেকে? ভারত নামটির উদ্ধব কীভাবে? ইন্ডিয়া নামটি কি সত্যিই ইংরেজদের দেওয়া, নাকি এরও ইতিহাস অনেক পুরনো?

প্রথমে আলোচনা করা যাক ‘ভারত’ নামের উদ্ভব নিয়ে। ভারত বা ভারতবর্ষ নামের শিকড় পাওয়া যায় পুরাণে এবং মহাভারতে। পুরাণে ‘দক্ষিণে সমুদ্র এবং উত্তরে তুষার আবাস’-এর মধ্যবর্তী ভূমিকে ভারত হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। অনেকের মতে, কিংবদন্তী রাজা ভরতের নাম থেকে ‘ভারত’ শব্দটির উদ্ভব ঘটেছে। দুষ্মন্ত এবং শকুন্তলার পুত্র ভরতকে, ঋগ্বৈদিক যুগের মানুষের পূর্বপুরুষ বলে মনে করা হয়।

তবে, সমাজ বিজ্ঞানী ক্যাথরিন ক্লেমেন্টিন-ওঝার মতে, ভারত কোনও রাজনৈতিক বা ভৌগোলিক সত্তা নয়। এটি আসলে একটি ধর্মীয় এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক সত্তা। ১৯২৭ সালের জানুয়ারিতে, জওহরলাল নেহেরু লিখেছিলেন, “ভারতের একতার মূল হল, এক সাধারণ বিশ্বাস এবং সংস্কৃতি। দূরবর্তী অতীত থেকে এই একতা রয়েছে। ভারত ছিল হিন্দুদের পবিত্র ভূমি। ভারতের চার কোণে হিন্দুদের তীর্থস্থানগুলি ছড়িয়ে রয়েছ।”

এবার আসা যাক ‘ইন্ডিয়া’ এবং ‘হিন্দুস্তান’ নামের প্রসঙ্গে। হিন্দুস্তান নামটি ‘হিন্দু’ থেকে এসেছে বলে মনে করা হয়। ফার্সি উচ্চারণে সিন্ধু হয়েছিল হিন্দু। সংস্কৃত ভাষায় ‘সিন্ধু’ শব্দের অর্থ নদী। নদী, অর্থাৎ, সিন্ধু নদীর তীরবর্তী সভ্যতার মানুষদের বোঝাতে আল-হিন্দ বা হিন্দু শব্দটি ব্যবহার করত পারস্যের মানুষ। খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে সিন্ধু উপত্যকা অর্থাৎ, ভারত উপমহাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল দখল করেছিল পারস্য। সেই সময় থেকে মুদ্রায় সিন্ধু কথাটি খোদাই করা শুরু হয়েছিল এবং মুখে মুখে হিন্দু কথাটি বলা শুরু হয়।

পারস্যের মানুষের কাছ থেকেই ‘হিন্দ’ বা ‘হিন্দু’ সভ্যতা সম্পর্কে জানতে পেরেছিল গ্রীকরা। তাদের উচ্চারণে আবার হিন্দু হয়েছিল ‘ইন্দুস’। খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে মেসিডোনিয়ার রাজা আলেকজান্ডার ভারত আক্রমণ করার সময়, সিন্ধু নদীর ওই পারের অঞ্চলকে ইন্ডিয়া বলে চিহ্নিত করেছিলেন।

ফার্সিরাই খ্রিস্টীয় প্রথম শতাব্দী থেকে, হিন্দুর সঙ্গে তার সঙ্গে ‘স্তান’ প্রত্যয় জুড়ে হিন্দুস্তান বলা শুরু হয়েছিল। এরপর আসা যাক ষোড়শ শতকে, অর্থাৎ, মুঘল আমলের একেবারে শুরুতে। সেই সময় পুরো ইন্দো-গাঙ্গেয় সমভূমিকে ‘হিন্দুস্তান’ বলে বর্ণনা করা শুরু হয়েছিল। ইতিহাসবিদ ইয়ান জে ব্যারো জানিয়েছেন, অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি, দক্ষিণ এশিয়ার বেশিরভাগ অংশই ছিল মুঘল সাম্রাজ্যের অংশ। সেই সময় সামগ্রিকভাবে মুঘল সাম্রাজ্যকেই হিন্দুস্তান বলা হত।

অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ থেকে ব্রিটিশ মানচিত্রগুলিতে ‘ইন্ডিয়া’ নামের ব্যবহার বাড়তে থাকে। গ্রিক-রোমানদের হাত ধরে দীর্ঘদিন ধরেই ইউরোপে ইন্ডিয়া শব্দটি চালু ছিল। তাছাড়া, সেই সময় ‘সার্ভে অব ইন্ডিয়া’র মতো বেশ কিছু বৈজ্ঞানিক ও আমলাতান্ত্রিক সংস্থা ইন্ডিয়া নামটি ব্যবহার করা শুরু করেছিল। তা থেকেই ব্রিটিশদের কাছেও ক্রমে এই নামটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। অনেকে দাবি করেন, এটি ইংরেজদের পক্ষে উচ্চারণ করাও সহজ হয়েছিল। ক্রমে এই নামের মাধ্য়মে ভারতীয় উপমহাদেশকে একক, সীমাবদ্ধ, ব্রিটিশ রাজনৈতিক অঞ্চলে পরিণত করেছিল তারা। স্বাধীনতার পর, গণপরিষদেও এই দুই নাম নিয়ে প্রচুর বিতর্ক হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত দুটি নামই রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।