Fraud Case: চিনারপার্ক, কাঁকুড়গাড়ি সহ বিভিন্ন জায়গায় চলত এই কাজ, পুলিশের জালে ১৪ যুবক-যুবতি
Kolkata Fraud Case: পুনরায় সে কলকাতা ফিরে এসে ওই সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করলে সংস্থার পক্ষ থেকে তাকে পুনরায় জানানো হয় কলকাতার একটি বেসরকারি বিমান সংস্থায় তাকে চাকরি দেওয়া হবে।
কলকাতা: দেশ-বিদেশের বিমানবন্দরে চাকরি দেওয়ার নাম করে কোটি কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ। বিভিন্ন বেসরকারি বিমান সংস্থার জাল নথি তৈরি করে চলত প্রতারণা চক্র। সেই প্রতারণা চক্রের পর্দা ফাঁস। বেসরকারি একটি সংস্থার দুই কর্ণধার, ১১ জন মহিলা সহ মোট ১৪ জনকে গ্রেফতার করল বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। উদ্ধার একাধিক ইলেকট্রনিক্স গ্যাজেট ও বেসরকারি বিমান সংস্থার জাল নথি।
পুলিশ সূত্রে খবর, মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা হাকিম শেখ। তিনি গত ১৯ ডিসেম্বর বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ করেন, তিনি চাকরির জন্যে একটি জব পোর্টালে নিজের বায়োডেটা আপলোড করেন। সেখান থেকে খোঁজ পেয়ে একটি বেসরকারি সংস্থা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে। ওই সংস্থার পক্ষ থেকে তাঁকে জানানো হয় বিমানবন্দরে চাকরি দেওয়া হবে। তবে তার পরিবর্তে তাঁকে সেই সংস্থায় ট্রেনিং কোর্স করতে হবে। এবার সেই ট্রেনিং বাবদ ওই অভিযোগকারীর থেকে প্রাথমিক ভাবে ১০ হাজার টাকা নেয় ওই সংস্থা।
ট্রেনিং শেষে অভিযোগকারীকে প্লেসমেন্ট বাবদ আরও ৫০ হাজার টাকা জমা দিতে বলে তারা। এবার সেই ব্যক্তি ৫০ হাজার টাকা জমা দিলে তাকে ব্যাঙ্গালোর বিমানবন্দরে কার্গোতে চাকরির অফার লেটার দেওয়া হয়। তবে হাকিমবাবু ব্যাঙ্গালোরে গিয়ে জানতে পারে এটি একটি চাকরি ভুয়ো চাকরি।
পুনরায় সে কলকাতা ফিরে এসে ওই সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করলে সংস্থার পক্ষ থেকে তাকে পুনরায় জানানো হয় কলকাতার একটি বেসরকারি বিমান সংস্থায় তাকে চাকরি দেওয়া হবে। সেই মর্মে তাকে ওই বেসরকারি বিমান সংস্থার নামে একটি অফার লেটার দেওয়া হয়। তার পরিবর্তে তার থেকে নগদে আরও ৫০ হাজার টাকা সল্টলেকের একটি হোটেলের সামনে থেকে নেয় ওই সংস্থার এক কর্মী। অভিযোগকারী সেই বিমান সংস্থার অফিসে যোগাযোগ করলে জানতে পারে ওই বিমান সংস্থার নথি জাল করে ভুয়ো অফার লেটার তৈরি করেছে ওই সংস্থা। এরপরই লক্ষাধিক টাকা প্রতারিত হয়েছে বুঝতে পেরে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার দ্বারস্থ হয় ওই ব্যক্তি।
ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ জানতে পারে, এই বেসরকারি সংস্থাটি বিভিন্ন চাকরীর অপেক্ষায় থাকা ব্যক্তিকে টার্গেট বানাত। এরপরই তাদের দেশের এবং বিদেশের বিমানবন্দরে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে লক্ষাধিক টাকা প্রতারণা করত। পুলিশ সূত্রে খবর, কলকাতার চিনার পার্ক, কাঁকুরগাছি, পার্ক স্ট্রিট সহ দুর্গাপুর, দিল্লি, মুম্বাই, হরিয়ানা সহ একাধিক রাজ্যে এই প্রতারণা চক্র জাল বিস্তার করে রেখেছে। এই সংস্থার পক্ষ থেকে একাধিক বেসরকারি বিমান সংস্থার জাল নথি তৈরি করে সাধারণ মানুষদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলার কৌশল সাজিয়েছিল এই সংস্থা বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
অবশেষে গতকাল রাতে ওই সংস্থার অফিসে হানা দেয় বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। সেখান থেকে এই চক্রের মূল পাণ্ডা অরুণ সৌখিন এবং সংস্থার অন্যতম কর্ণধার অদিতি বদ্রাইকা সহ ১৪ জনকে গ্রেফতার করে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। তাদের কাছ থেকে একাধিক ইলেকট্রনিক্স গ্যাজেট, কাস্টমার ডেটা, হার্ড ডিস্ক, মোবাইল ফোন সহ একাধিক জাল নথি উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ অভিযুক্তদের বিধাননগর আদালতে তোলা হবে। পুলিশ দুই কর্ণধারকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাবে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এই চক্রের অন্যদের খোঁজে তদন্ত শুরু করেছে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ।