Firhad Hakim:’৯০% মেরামতি সম্পূর্ণ’, ‘গুটিকয়েক’ রাস্তা দেখেই সার্টিফিকেট মেয়রের
Firhad Hakim: মেয়র পরিদর্শন করলে ইকবালপুর সংলগ্ন ডায়মন্ড হারবার রোডের যে অংশে প্লাস্টিক গলিয়ে পিচের সঙ্গে সংমিশ্রণ করে রাস্তা তৈরি করছে সড়ক বিভাগ, সেখানে পৌঁছন। বিটুমিন, স্টোন চিপস আর বালির সঙ্গে মিশে যাচ্ছে প্লাস্টিকের গ্রেনিউলস। নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় উপাদান তৈরি করা হচ্ছে
কলকাতা: উত্তর থেকে দক্ষিণ ‘গুটিকয়েক’ রাস্তার হাল হকিকত দেখেই কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়ে দিলেন, শহরের ৯০ শতাংশ রাস্তা মেরামত করা সম্পূর্ণ। যেগুলি বাকি সেগুলি পুজোর পর মেরামত করা সম্পূর্ণ হবে। পুজোর আগে কলকাতা তৈরি। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত শহরের কয়েকটি এলাকায় পরিদর্শন করেন মেয়র। কোন রাস্তার কী অবস্থা, পুজোর আগে শহর রাস্তা সংক্রান্ত পরিষেবা দিতে কতটা প্রস্তুত, তা দেখতেই পরিদর্শনে বেরিয়েছিলেন। সঙ্গে ছিলেন কলকাতা বিএফ পৌরসভার আলো বিভাগের মেয়র পরিষদ সন্দীপ রঞ্জন বক্সি, সড়ক বিভাগের মেয়র পরিষদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়-সহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ক বিভাগের পুরসভার ডিজি এবং আধিকারিকরা।
কলকাতা পুরভবন থেকে বেরিয়ে মেয়রের গাড়ি চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ দিয়ে পৌঁছয় শ্যামবাজার, উল্টোডাঙ্গা, শিয়ালদহ বিদ্যাপতি সেতু, মল্লিকবাজার, বালিগঞ্জ ফাঁড়ি, গোলপার্ক, টালিগঞ্জ ফাঁড়ি, জেমস নং সরণি হয়ে জোকা, একবালপুর হয়ে হাজরা গিয়েই শেষ হয়। হাতেগোনা কয়েকটি জায়গাতেই তিনি নেমেছিলেন।
আর এখানেই বিরোধীরা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন, কলকাতার যে এলাকাগুলিতে বড় বড় পূজো হয়, সেখানকার বেশিরভাগ রাস্তার জোড়াতাপ্পি মেরে সংস্কার হয়েছে। সেই সব এলাকায় মেয়র না গিয়ে যেখানকার অবস্থা পুরোপুরি ভালো রয়েছে সেখানে গেলেন। যদিও মেয়র জানিয়েছেন, উত্তর এবং দক্ষিণের সব রাস্তার রিপোর্ট নিয়েছেন। কলকাতা পুলিশের তরফে যে ৪৪ টি রাস্তার তালিকা নেওয়া হয়েছিল, সেই রাস্তা গুলি সম্পর্কেও রিপোর্ট নেওয়া হয়েছে। সব রাস্তা মেরামত হয়ে গিয়েছে। ৯০ শতাংশ রাস্তার মেরামতের কাজ শেষ হয়েছে। কেইআইআইপি’র যেখানে যেখানে কাজ হচ্ছে সেখানেই রাস্তার অবস্থা খুব একটা ভালো নেই। সেগুলি মেরামত না হওয়ায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে রয়েছে।
এদের মেয়র পরিদর্শন করলে ইকবালপুর সংলগ্ন ডায়মন্ড হারবার রোডের যে অংশে প্লাস্টিক গলিয়ে পিচের সঙ্গে সংমিশ্রণ করে রাস্তা তৈরি করছে সড়ক বিভাগ, সেখানে পৌঁছন। বিটুমিন, স্টোন চিপস আর বালির সঙ্গে মিশে যাচ্ছে প্লাস্টিকের গ্রেনিউলস। নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় উপাদান তৈরি করা হচ্ছে। সেই উপাদান এদিন রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে খতিয়ে দেখেন। ডায়মন্ড হারবার রোডের একাংশে এই উপাদান দিয়েই রাস্তা মেরামত করা সম্ভব হয়েছে। তার উপর দিয়ে বড় বাড়ি পণ্যবাহী গাড়ি গেলেও কোন ক্ষতি হয়নি। তাই এই উপাদান দিয়েই কলকাতা শহরের রাস্তা মেরামত করা শুরু হয়েছে। বড় রাস্তা মেকানিক্যাল ম্যাস্টিফ দিয়ে করা হবে বলে আগে জানিয়েছিলেন মেয়র। এদিনও মেয়র বলেন, ওই মেশিনপত্র এখনও কলকাতা পুরসভার হাতে আসেনি। তাই যতক্ষণ না ওই মেশিন কলকাতায় এসে কাজ শুরু করছে, ততক্ষণ এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করা যাবে না। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, কলকাতার দক্ষিণ শহরতলির হোক বা উত্তর কলকাতার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা, এখনও বড় বড় গর্ত হয়ে রয়েছে। সেই রাস্তা গুলি পরিদর্শন করার ব্যাপারে কেন তৎপরতা দেখালেন না মেয়র? মেয়র নির্দেশ দিচ্ছেন, যেখানে যেখানে রাস্তা খারাপ রয়েছে সেখানে পুজোর মধ্যে মেরামত করে দেওয়ার জন্য। কিন্তু যে পরিমাণ অর্থ প্রয়োজন, তা কি আছে কলকাতা পুরসভার ভাঁড়ারে?
বিরোধীদের কটাক্ষ, হাতেগোনা কয়েকটি রাস্তা দেখলে কখনই বাস্তব পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত হতে পারবেন না মেয়র। এদিন মেয়র শিয়ালদহের বিদ্যাপতি উড়ালপুলের উপরে পৌঁছন। সংশ্লিষ্ট উড়ালপুল দিয়ে অনেক আগেই ট্রাম চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সেই লাইনগুলি তুলতে পারছে না পরিবহন দফতর। কারণ আদালতের ফাঁসে আটকে যাবতীয় সিদ্ধান্তের কার্যকরী প্রক্রিয়া। ফলে পুরসভার তরফে মেরামত করতে পারছে না যথেষ্টভাবে। খানাখন্দ হয়ে ভয়াবহ অবস্থা এই ট্রাম লাইন সংলগ্ন রাস্তাগুলির। মেয়র ওই উড়ালপুলে পৌঁছে বিষয়টি দেখে অত্যন্ত খেদ প্রকাশ করেন।