Shakespeare Sarani Murder Case: শেক্সপিয়র সরণিতে বৃদ্ধা খুনে ধৃত গাড়িচালককে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজত
Crime in Kolkata: ধৃতের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় খুন এবং ৩৯৪ ধারায় চুরি অভিপ্রায়ে ইচ্ছাকৃতভাবে আঘাতের অভিযোগ রয়েছে।
কলকাতা : শেক্সপিয়র সরণির আবাসনে বৃদ্ধার রহস্য মৃত্যুর ঘটনায় ধৃত দুধকুমার ঢলকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিল আদালত। ধৃতের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় খুন এবং ৩৯৪ ধারায় চুরি অভিপ্রায়ে ইচ্ছাকৃতভাবে আঘাতের অভিযোগ রয়েছে। বজবজের বাসিন্দা দুধকুমার ওরফে সুমন পেশায় গাড়ি চালক। আগে শেক্সপিয়র সরণির গঙ্গা যমুনা অ্যাপার্টমেন্টের চৌধুরী পরিবারের গাড়ি চালাত সে। গতকাল রাতে হুগলির গারলগাছা এলাকা থেকে খুনের ঘটনায় যুক্ত থাকার সন্দেহে তাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।
মৃত বৃদ্ধা রেণুকা চৌধুরী শেক্সপিয়র সরনির থিয়েটার রোডের আবাসনে তাঁর ছেলে অভয় চৌধুরীর সঙ্গেই থাকতেন। লকডাউনের আগে চৌধুরীদের বাড়িতে গাড়ির চালাত দুধকুমার। ২০১৬ সাল থেকে চৌধুরীদের গাড়ি চালাত সে। মৃতার ছেলে জানিয়েছে, ২০১৮ সালে তাকে কাজ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ ছিল, রেণুকা দেবীর ঘর থেকে জিনিসপত্র সরিয়েছিল সে। তা বুঝতে পেরে যাওয়াতেই তাকে কাজ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল।
এদিকে ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশের কাছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখতেই জানা যায়, ধৃত দুধকুমার আগের দিন সন্ধে ৭ টা নাগাদ আবাসনের ভিতরে ঢুকেছিল। এরপর মধ্যরাতের দিকেও বাড়ির বাইরে ঘোরাফেরা করতে দেখা গিয়েছে সিসিটিভি ফুটেজে।
গতকাল দুধকুমারকে গ্রেফতারির পর তার থেকে সোনা ও হিরের গয়না, একটি আইফোন এবং একটি অ্যান্ড্রয়েড ফোন উদ্ধার হয়েছে। আজ দুপুরে ধৃতকে ফের ওই আবাসনে নিয়ে যায় পুলিশ। গোটা ঘটনার পুনর্নিমাণ করা হয়। দুধকুমারের সঙ্গে এই ঘটনায় আরও বড় কোনও পাণ্ডা জড়িত আছে বলে সন্দেহ করছে পুলিশ।
বৃদ্ধার দেহের ময়না তদন্তের রিপোর্ট ইতিমধ্যেই হাতে এসেছে পুলিশের। ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট থেকে স্পষ্ট যে এটি কোনও স্বাভাবিক মৃত্যু নয়, বৃদ্ধাকে খুন করা হয়েছে। রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, গলায় চাপ দেওয়ার কারণে শ্বাসরোধের থেকেই মৃত্যু হয়েছে ৯১ বছর বয়সি রেণুকা চৌধুরীর। এর আগে বৃদ্ধার ছেলে অভয় চৌধুরীও সন্দেহ করছেন তাঁর মাকে কেউ খুন করেছে।
ছেলে অভয় চৌধুরীর বয়ান অনুযায়ী, ঘরের দরজা খুলে তিনি ঢুকে দেখেন তাঁর মা পড়ে রয়েছেন। সংজ্ঞা নেই। তাঁর নাক দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছিল। বিছানা লন্ডভন্ড ছিল।
২৮ বি, থিয়েটার রোডের অভিজাত আবাসনে একমাত্র ছেলের সঙ্গে থাকতেন বৃদ্ধা রেনুকা। সোমবার রাতে ছেলে আবাসনেরই ছাদে ব্যাডমিন্টন খেলতে যান। ফিরে এসে দেখেন তাঁর মায়ের রক্তাক্ত দেহ বিছানায় পড়ে রয়েছে।
তদন্তকারীরা প্রথমেই মনে করেছিলেন, কোনও পরিচিত কেউ ঘরে ঢুকে থাকতে পারেন। কারণ বৃদ্ধা ঘরের দরজা খুলে দিয়েছিলেন। ফ্ল্যাটের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। চাবি নিয়ে গিয়েছিলেন ছেলে। ছেলে চাবি দিয়ে দরজা খুলে ফ্ল্যাটে ঢুকেছিলেন। তারপরই ওই দৃশ্য দেখতে পান।সেক্ষেত্র পরিচিত কোনও ব্যক্তি ঘরে ঢুকতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। যাকে চিনে দরজা খুলে দিয়েছিলেন বৃদ্ধা।