কেন্দ্রের পর রাজ্য, নির্বাচনকে সামনে রেখেই কি ‘লক্ষ্য’ চা বাগান?

চা বাগানের জন্য রাজ্য বাজেটে ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করার কথা বললেল মুখ্যমন্ত্রী

কেন্দ্রের পর রাজ্য, নির্বাচনকে সামনে রেখেই কি 'লক্ষ্য' চা বাগান?
Follow Us:
| Updated on: Feb 05, 2021 | 7:12 PM

কলকাতা: লোকসভা হোক বা বিধানসভা। যে কোনও নির্বাচনেই উত্তরবঙ্গ একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গত লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গের একাধিক আসনে জয় পেয়েছে বিজেপি। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর থেকে পাহাড়কে কতটা গুরুত্ব দেন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কেন্দ্রের পর রাজ্য বাজেটেও উত্তরবঙ্গকে তাই বিশেষ গুরুত্ব দিতে দেখা গেল।

এবার কেন্দ্রীয় বাজেটে বাংলার বেশ কিছু প্রাপ্তি হয়েছে। আর তার মধ্যে জায়গা পেয়েছে চা বাগান। অসম ও পশ্চিমবঙ্গের চা বাগানের জন্য ১০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। যদিও তাতে চা বাগান আদতে কতটা উপকৃত হয়েছে তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এবার সেই চা বাগানের জন্য রাজ্য বাজেটে ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করার প্রস্তাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার পেশ হয় রাজ্য বাজেট। আর সেখানে ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করার পাশাপাশি চা বাগান এলাকায় ১০০টি নতুন স্কুল তৈরি করার কথা বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন: ভোটমুখী বাজেটে ‘কল্পতরু’ হওয়ার চেষ্টা মমতার, এক নজরে বড় ১০ পয়েন্ট

এছাড়াও উত্তরবঙ্গের জন্য রয়েছে আরও প্রস্তাব। রাজবংশী পড়ানোর জন্য ২০০টি স্কুলকে অনুমোদন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

গত লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গের ৮ টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যেই ৭ টি তেই জয়ী হয় বিজেপি। তাই এবার বিধানসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গ শাসক দলের কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ। হিসেব বলছে, লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গের ৫৬ টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ৩৫ টি তে বিজেপি এগিয়ে ছিল।

আরও পড়ুন: Budget 2021 in Bengali LIVE: ৭৫-ঊর্ধ্বদের দিতে হবে না আয়কর, দেখে নিন আর কী নজর কাড়ল এবারের বাজেটে

উত্তরবঙ্গে চা বাগানের অবস্থা ভাল নয়। আর ভোট এগিয়ে এলেই চা বাগানকে ইস্যু করার চেষ্টা করে সব দলই। কেন্দ্রীয় বাজেটের পরের দিনই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “চা বাগান নিয়ে অনেকে অনেক কিছু বলে, কিন্তু করে না। ভোটের জন্য চা বাগানে নজর পড়েছে অনেকের।” এরপরই তিনি বলেন, “তৃণমূল যা বলে তাই করে। এত জন বিধায়ক নিয়ে উত্তরবঙ্গে কী করেছে বিজেপি?” মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দেন, “চা সুন্দরী প্রকল্পে ৩ বছরের মধ্যে গৃহহীনরা ঘর পাবেন। ফালাকাটা ময়নাগুড়িতে হবে নতুন পুরসভা।” রাজবংশী কামতাপুরী ভাষাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে বলেও ঘোষণা করেন তিনি।

যদিও দার্জিলিং চা-শিল্প মহলে কেন্দ্রের এই ঘোষণা বিশেষ উৎসাহের সঞ্চার করতে পারেনি। দার্জিলিং চা-শিল্পে অন্যান্য প্রধান দাবি ছিল নেপাল থেকে বিনা শুল্কে চা আমদানি বন্ধ হোক। তবে কল্যাণমূলক তহবিল ছাড়া চা নিয়ে বাজেটে সরাসরি কোনও ঘোষণা ছিল না।

বাজেটের আগেই দার্জিলিং চা-শিল্পের মুখপাত্র জানিয়েছিলেন, নেপাল থেকে বিনা শুল্কে চা আমদানি হওয়ার ফলে তাঁদের ভরাডুবি হয়েছে। গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে ২০১৭ সালে ১১০ দিনের উত্তরবঙ্গ বন্ধের সময়ে এই ব্যবস্থা চালু হয়। টানা ধর্মঘটের ফলে তখন দার্জিলিংয়ে চায়ের উৎপাদনও বন্ধ ছিল।