ঝাঁঝাল বক্তৃতা, তীক্ষ্ণ স্বরক্ষেপণ! বিধানসভায় ‘দিদিইইইই’ ডাক লাভলি মৈত্রের

Assembly: বারবারই এদিন লাভলির কথায় উঠে আসে, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক। কন্যাশ্রী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, স্বাস্থ্যসাথী-সহ একাধিক প্রকল্পে বাংলার নারীরা যে ভাবে উপকৃত হয়েছেন, তা নজির তৈরি করেছে।

ঝাঁঝাল বক্তৃতা, তীক্ষ্ণ স্বরক্ষেপণ! বিধানসভায় 'দিদিইইইই' ডাক লাভলি মৈত্রের
ফাইল ছবি।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 09, 2021 | 4:35 PM

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ: বাজেট অধিবেশনের শেষদিন বিধানসভায় বক্তব্যের ঝাঁঝ ছড়ালেন লাভলি মৈত্র। ভাষণ দেওয়ার সময় উদ্ধত তর্জনী আর কন্ঠের তীক্ষ্ণতায় সকলের নজর কাড়লেন সোনারপুর দক্ষিণের বিধায়ক। শুক্রবার অধিবেশন কক্ষে লাভলি মৈত্র -এর বক্তব্যের রেশ ধরেই ফিরল নরেন্দ্র মোদীর ‘দিদিইইইইই..’ ডাকও। বছর তিরিশের এই বিধায়ক যখন একের পর এক বাক্যবাণে বিরোধীদের বিঁধছেন, অধিবেশন কক্ষে তখন শুধুই টেবিল চাপড়ানোর শব্দ।

নারী এবং শিশু কল্যাণ দফতরের বাজেটের উপরই এদিন ভাষণ রাখেন লাভলি মৈত্র। তাঁর জন্য বরাদ্দ ছিল ৯ মিনিট। এই ৯ মিনিটেই বাম আমলে এ রাজ্যের নারী সুরক্ষার ছবি থেকে বিজেপি নেতাদের ‘কুকথা’ নিয়ে সরব হন তিনি। একইসঙ্গে স্পষ্ট করেন, তৃণমূল সরকারের আমলে এ রাজ্যে নারী সুরক্ষার কতটা কড়াকড়ি। বিধায়ক বলেন, বাংলায় নারীদের সুরক্ষা অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় যে এগিয় কাগজে কলমে সে প্রমাণও রয়েছে। এ প্রসঙ্গেই তুলে আনেন ২০১১ সালের আগে বাংলায় নারী সুরক্ষার ছবিটা।

সে কথার রেশ ধরেই লাভলির বক্তব্যে বিজেপিকে কটাক্ষের সুরও জোরাল হয়। ভোটের সময় শিল্পীদের ‘রগড়ে’ দেওয়ার কথা বলেছিলেন দিলীপ ঘোষ। এদিন লাভলির বক্তৃতায় যেন সে ইঙ্গিতই শোনা গেল। বললেন, বিজেপি নেতারা যে ভাবে অভিনেত্রী, শিল্পীদের নিয়ে কথা বলেন তা বাংলার রুচি ঐতিহ্যের সঙ্গে যায় না। শুক্রবারই এক বিজেপি বিধায়ক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তোপ দেগেছিলেন। এদিন লাভলি সে কথাও তুলে ধরে বলেন, “আমাদের বিরোধী দলের এক সদস্যা কী ভাবে একজন মহিলাকে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করলেন? কেন বিরোধী দলের নেতারা অভিনেত্রীদের বিরুদ্ধে খারাপ কথা বলেন? আমি সেই রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব করছি, যে দল মহিলাদের হয়ে ভাবে, যারা বিশ্বাস করে। যে দল বিশ্বাস করে সৌন্দর্য বাহ্যিক নয়, তা অন্দরের।”

আরও পড়ুন: উচ্চ প্রাথমিকে কাটল জট, নিয়োগে আর বিলম্ব নয়, ৫ বছর বয়স মকুব করার আর্জি আদালতের

বারবারই এদিন লাভলির কথায় উঠে আসে, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক। কন্যাশ্রী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, স্বাস্থ্যসাথী-সহ একাধিক প্রকল্পে বাংলার নারীরা যে ভাবে উপকৃত হয়েছেন, তা নজির তৈরি করেছে। সমাজের আর্থ সামাজিক ক্ষেত্রে এগুলি যেমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে, একইসঙ্গে একজন মহিলাকে স্বনির্ভর করতেও এগুলি তুলনাহীন। পঞ্চায়েতে মহিলাদের ৫০ শতাংশ আসন সংরক্ষণ একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই করেছেন। অথচ সেই বাঙালি মুখ্যমন্ত্রীকে বাইরে থেকে ভোট প্রচারে এসে তাবড় বিজেপি নেতারা এমনকী প্রধানমন্ত্রীও ‘দিদি, দিদি, ও দিদি’ করে যা করেছেন তা বাংলাকে অসম্মান করা।

আরও পড়ুন: ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ডে এখনই সিবিআই তদন্তের দরকার নেই, নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের

লাভলি মৈত্রের এই বক্তব্যে প্রশংসার ঝড় ওঠে অধিবেশন কক্ষে। লাভলির বাঁ দিকেই বসেছিলেন অদিতি মুন্সী, তাঁর পাশে জুন মালিয়া। লাভলির বক্তব্য শেষ হতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়লেন তাঁরাও। কিছুটা দূর থেকে হাত তুলে ইশারায় প্রশংসা ছুঁড়ে দিলেন নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক। এগিয়ে এসে হাত মেলালেন নির্মল মাজি। একেবারে পোড় খাওয়া রাজনীতিকের মতো শরীরী ভাষা, গলার স্বর উচ্চগ্রামে। অধিবেশনে ছিলেন না মদন মিত্র। থাকলে মনে মনে হলেও একবার হয়তো তাঁর ‘সিগনেচার ওয়ার্ড’ ‘ওহ লাভলি’ বলতেনই।