Human Story: অচৈতন্য পথচারীকে তুলল না কেউ, এগিয়ে এল মুদির দোকানের ছোট্ট ছেলেটা

Road Accident: বৃহস্পতিবার রাতে বাগুইআটির এক সিভিক ভলান্টিয়ার প্রকাশ ঘোষ কাজ থেকে ফেরার সময় স্থানীয় কলেজ মোড়ের কাছে বাইক দুর্ঘটনার কবলে পড়েন।

Human Story: অচৈতন্য পথচারীকে তুলল না কেউ, এগিয়ে এল মুদির দোকানের ছোট্ট ছেলেটা
পথ দুর্ঘটনাগ্রস্তকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন সুদীপ মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 05, 2021 | 8:13 PM

কলকাতা: মানুষের বিপদে মানুষ পাশে দাঁড়াবে, এটা যেমন খুব স্বাভাবিক। ঠিক তেমনই কঠিন বাস্তব হল, বিপদ দেখলে পাশ কাটিয়ে যাওয়াই শ্রেয় মনে করেন অধিকাংশ মানুষ। তবে সকলে তেমনটা যে হন না বৃহস্পতিবার তা প্রমাণ করে দিলেন এক মুদি দোকানের কর্মী সুদীপ মণ্ডল। বাগুইআটি কলেজ মোড়ে দুর্ঘটনাগ্রস্ত এক পথচারী নিজের উদ্যোগে অ্যাম্বুলেন্স ডেকে হাসপাতালে পৌঁছে দিলেন। শুধু তাই নয় স্থানীয় থানায় যোগাযোগ করে সবটা জানালেন পুলিশকেও।

গোল্ডেন আওয়ারে দুর্ঘটনাগ্রস্তকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে প্রাণে বাঁচালে কেন্দ্রের তরফে পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। কারণ একটাই, যাতে পথেঘাটে কেউ বিপদে পড়লে সকলে মুখ ফিরিয়ে না চলে যান। পথচারীদের উৎসাহ দিতে নগদ টাকা পুরস্কারের কথা বলেছে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রক। তবু উৎসাহী কই! ব্যতীক্রম অবশ্য সুদীপরা।

বৃহস্পতিবার রাতে বাগুইআটির এক সিভিক ভলান্টিয়ার প্রকাশ ঘোষ কাজ থেকে ফেরার সময় স্থানীয় কলেজ মোড়ের কাছে বাইক দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। রাস্তায় পড়ে যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকেন প্রকাশ। অনেকেই দেখেন, কিন্তু ধীরে ধীরে সরেও পড়েন।

সেই সময় মুদি দোকানের কর্মী সুদীপ মণ্ডল বন্ধুদের সঙ্গে কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিলেন। বাগুইআটি কলেজ মোড়ের কাছে এক যুবককে কাতরাতে দেখে থমকে দাঁড়ান। কালীপুজোর রাত। ব্যস্ততম ভিআইপি রোড। এরই মধ্যে অনেক কষ্ট করে একটি ফাঁকা অ্যাম্বুলেন্স পান। তবে সে কিছুতেই দুর্ঘটনাগ্রস্ত প্রকাশকে তুলতে নারাজ। রীতিমতো হাতে পায়ে ধরে প্রকাশকে নিয়ে যান বাগুইআটিরই একটি বেসরকারি হাসপাতালে।

কিন্তু সেখানে ভর্তির জন্য যে টাকা প্রয়োজন তা সুদীপ বা তাঁর বন্ধুদের কাছে ছিল না। প্রকাশেরও পকেট অত ভারী নয়। এরপরই সেখান থেকে দুর্ঘটনাগ্রস্ত যুবককে নিয়ে সুদীপরা ছোটেন আরজিকর হাসপাতালে।

সেখানে গিয়ে প্রকাশ ঘোষকে ভর্তি করানো হয়। তবে এরপরও হাসপাতাল ছাড়েননি সুদীপ। এ ভাবে একা একজন দুর্ঘটনাগ্রস্তকে একা ফেলে রেখে যেতে চাননি তিনি। ততক্ষণে ঘটনার খবর পেয়ে আরজিকর হাসপাতালে পৌঁছয় বিধাননগর কমিশনারেটের এসিপি জোন টু সুরজিৎ রায়।

সেখানে গিয়ে সুদীপের সঙ্গে কথা বলে তিনি গোটা ঘটনা জানতে পারেন। ততক্ষণে প্রকাশের মাথায় আটটি সেলাই পড়েছে। সুদীপ মণ্ডলের এ হেন মানবিকতায় খুশি হন এসিপি সুরজিৎ রায়ও। এরপরই তাঁরা ঠিক করেন, পরোপকারী সুদীপকে পুরস্কৃত করবেন। শুক্রবারই পুরস্কৃত করা হয় তাঁকে। এয়ারপোর্ট থানাও এগিয়ে আসে এই উদ্যোগে। তারা জানিয়েছে, এইটুকু ছেলে যা করল তাতে প্রশংসা নয়, শ্রদ্ধা জানাতে হয় তাঁকে। একজন দুর্ঘটনাগ্রস্ত যুবক অবচেতন অবস্থায় পড়েছিলেন। তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়ে সুদীপ মণ্ডল চিকিৎসার ব্যবস্থা করে সমাজের কাছে দৃষ্টান্ত তৈরি করল। সকলেই এ ভাবে মানুষের বিপদে এগিয়ে আসুক, প্রশাসনও এটাই চায়।

আরও পড়ুন: Covid Update: এক ধাক্কায় ১১ হাজার নমুনা পরীক্ষা কমল রাজ্যে, তবুও পজিটিভিটি রেট ঊর্ধ্বমুখীই