Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Kolkata Police: কলকাতা পুলিশের গর্ব, ছয় শিশুর যৌন নির্যাতনের হিসাব মিটিয়েছেন এই মহিলা অফিসার

Kolkata Police: এ দিন বড়তলার ঘটনা নিয়ে মানসী টিভি ৯ বাংলাকে একান্ত সাক্ষাৎকারে জানান, "এই কেসে প্রচুর খাটুনি হয়েছে। শিশুটির আঘাত ছিল মারাত্মক। আমরা দু'জায়গা থেকে সোয়াব টেস্ট করেছি। ডিএনএ প্রোফাইল বারবার পরীক্ষা করা হয়েছে।"

Kolkata Police: কলকাতা পুলিশের গর্ব, ছয় শিশুর যৌন নির্যাতনের হিসাব মিটিয়েছেন এই মহিলা অফিসার
মানসী মাইতি রায়, SIImage Credit source: Kolkata Police Facebook
Follow Us:
| Updated on: Feb 19, 2025 | 4:52 PM

সুশোভন ভট্টাচার্য ও সুমন মহাপাত্র

কলকাতা: মা-বাবার সঙ্গে ফুটপাথে ঘুমোচ্ছিল সাত মাসের শিশুকন্যা। নারকীয় সেই ঘটনায় রাজীব ঘোষ নামে এক যুবককে দোষী সাব্যস্ত করেছিল নগর ও দায়রা আদালত। মঙ্গলবার যুবকের ফাঁসির সাজা শোনায় কোর্ট। বড়তলা থানায় অভিযোগ দায়েরের ২৬ দিনের মধ্যেই কোর্টে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। তবে এত সহজে কিন্তু সব তথ্য প্রমাণ হাতের নাগালে চলে আসেনি। এই ঘটনার তদন্তভার ছিল সাব-ইন্সপেক্টর মানসী মাইতি রায়ের (IO. LSI) কাছে। তাঁর নেতৃত্বেই পুলিশের বাকি টিম এই ধর্ষণ-কাণ্ডের সুরাহা করেন। কিন্তু জানেন কে এই সাব-ইন্সপেক্টর মানসী মাইতি রায়?

এ দিন, সরকারি পক্ষের আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় সাংবাদিকদের সামনে এই মামলা সম্বন্ধে বলতে গিয়ে একটি বিষয় বারেবারে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, “আমার মনে হয়েছে, কলকাতা পুলিশ ইতিহাস গড়ল। বাংলার বিচার বিচার ব্যবস্থা ইতিহাসের অংশ হল।” কেন এমনটা বলছেন তিনি? বিভাসবাবু বলেছেন, “বিপক্ষের আইনজীবী বারবার বলেছেন, এখানে মেয়েটি বেঁচে আছেন, তবে কি আমরা ফাঁসি চাইতে পারি? তবে আদালতের আইনে কোথাও বলা নেই ফাঁসির সাজা পেতে শোনাতে গেলে নির্যাতিতার মৃত্যু হতে হবে। আমি বারবার আদালতে বলেছি, মেয়েটি যদি সুস্থ হয়ে বাড়িও ফেরে, ওকে সারাজীবন এই ঘটনা মানসিক যন্ত্রণা দেবে।” আদলতও বলেছে, “এই ঘটনা বিরল থেকে বিরলতম।” ফলত, কলকাতা পুলিশ যে ইতিহাস গড়েছে তা বলার অপেক্ষা বোধহয় রাখে না।

কোন-কোন কেসে নজির গড়েছেন সাব-ইন্সপেক্টর মানসী মাইতি রায়?

২০১৯ সালে টালা থানায় এক দম্পতি তাঁদের চোদ্দ বছরের মেয়ের নিখোঁজ ডায়রি করেছিলেন। দম্পতির দাবি ছিল, হয়ত তাঁদের মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে। সেই সময়ও এই ঘটনার তদন্তভার যায় মানসীর হাতে। তিনি তদন্তে নেমে দেখেন, নিখোঁজ নাবালিকার সঙ্গে এলাকারই এক বাস ড্রাইভারের মেলামেশা ছিল। তাৎপর্যপূর্ণভাবেও ওই বাসের চালকও নাবালিকার নিখোঁজের দিন থেকেই মিসিং। পরবর্তীতে জানা যায়, দিল্লিতে রয়েছে নাবালিকা। তাকে উদ্ধার করা হয়। জানা যায়, অভিযুক্ত চালক মেয়েটিকে নিয়ে দিল্লি চলে যায়। বেআইনিভাবে বিয়ে করে। তারপর একাধিকবার তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। কিন্তু পরবর্তীতে সে নাবালিকার সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করে। এই ঘটনার প্রায় দুমাস পর গ্রেফতার হয় ওই চালক। তার বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা রুজু হয়। অপহরণ ও শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের মামলা দায়ের হয়। আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয় যুবক। দশ বছরের কারাদণ্ড হয় তার। সঙ্গে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা হয়। এর আগেও মানসী এমনই ছটি পকসো মামলার তদন্ত শেষ করেছেন।

এ দিন বড়তলার ঘটনা নিয়ে মানসী টিভি ৯ বাংলাকে একান্ত সাক্ষাৎকারে জানান, “এই কেসে প্রচুর খাটুনি হয়েছে। শিশুটির আঘাত ছিল মারাত্মক। আমরা দু’জায়গা থেকে সোয়াব টেস্ট করেছি। ডিএনএ প্রোফাইল বারবার পরীক্ষা করা হয়েছে।”

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত ৩০ নভেম্বর বড়তলা থানায় এক শিশুকন্যা নিখোঁজ হয়ে যায়। বাবা-মায়ের অভিযোগ ছিল, রাতে রাস্তার পাশে ঝুপড়িতে তাঁরা ঘুমোচ্ছিলেন। ঘুমন্ত শিশুকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ওই ফুটপাত থেকেই শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। এরপর বড়তলা থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। গত ৪ ডিসেম্বর ঝাড়গ্রাম থেকে অভিযুক্ত রাজীব ঘোষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২৬ দিনের মাথায় আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়। রাস্তার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে যুবককে চিহ্নিত করা হয়েছিল। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৩৭(২), ৬৫(২) এবং শিশু সুরক্ষা আইনের (পকসো) ৬ নম্বর ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয় তাকে।