বদলে যাচ্ছে শিক্ষাঙ্গন, বন্ধ স্কুলে তৈরি হচ্ছে কোভিড কেয়ার ইউনিট, উদ্বোধনে রাজ্যের দুই মন্ত্রী

বৃহস্পতিবার, এই কোভিড কেয়ার ইউনিটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং শিশুমঙ্গল সেবা প্রতিষ্ঠানের সম্পাদক এবং বিধায়ক দেবাশীষ কুমার।

বদলে যাচ্ছে শিক্ষাঙ্গন, বন্ধ স্কুলে তৈরি হচ্ছে কোভিড কেয়ার ইউনিট, উদ্বোধনে রাজ্যের দুই মন্ত্রী
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jun 03, 2021 | 9:05 PM

কলকাতা: কেটে গিয়েছে প্রায় একবছর। ক্লাসঘরে বসে একসঙ্গে ক্লাস করার রেওয়াজ ভুলে গিয়েছে পড়ুয়ারা। অনলাইনে ইলেকট্রনিক ডিভাইসের সামনেই বিন্যস্ত কচি চোখগুলো। বন্ধ স্কুলেই (School) তাই এ বার তৈরি হতে চলেছে কোভিড কেয়ার ইউনিট (COVID Care Unit)। দক্ষিণ কলকাতার শরৎ বোস রোডে, সাউথ সুব্রাবর্ন স্কুলে কলকাতা পৌরসভা ও নগন্যাট ফাউন্ডেশনের যৌথ প্রচেষ্টায় তৈরি হতে চলেছে ৫০ শয্য়া বিশিষ্ট কোভিড কেয়ার ইউনিট। সৌজন্যে রাসবিহারির বিধায়ক দেবাশাীষ কুমার। বৃহস্পতিবার, এই কোভিড কেয়ার ইউনিটের (COVID Care Unit) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং শিশুমঙ্গল সেবা প্রতিষ্ঠানের সম্পাদক এবং বিধায়ক দেবাশীষ কুমার।

স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, স্কুলের একতলায় তৈরি হচ্ছে কোভিড কেয়ার ইউনিট। তৈরি করা হচ্ছে অস্থায়ী অক্সিজেন প্লান্ট। বন্ধ স্কুলে পড়ুয়াদের যাতায়াত নেই। তাই কোভিড মোকাবিলাতেই ব্যবহৃত হচ্ছে স্কুলের একাংশ। ৫০ টি কোভিড শয্যার  পাশাপাশি আলাদা করে পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ডও তৈরি করা হচ্ছে। সর্বক্ষণের জন্য উপস্থিত থাকবেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। যেসব রোগীদের হালকা বা মাঝারি উপসর্গ রয়েছে বা যাঁদের একান্তবাসে থাকার সুবিধা নেই, তাঁরাই এখানে থাকতে পারবেন। রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠানের তরফে এই কোভিড কেয়ার ইউনিটে ধীরে আইসিইউ ও সিসিইউয়ের পরিষেবাও চালু করা হবে।

তবে প্রশ্ন উঠছে, স্কুলে যে মিড-ডে মিল (Mid-day Meal) দেওয়া হয়, সেখানেই কোভিড কেয়ার ইউনিট তৈরি করা কতটা সুরক্ষিত? বন্ধ স্কুলেও প্রতিমাসে নির্দিষ্ট দিনগুলিতে মিড-ডে মিল নিতে যান অভিভাবকরা। সেফ হোমের দৌলতে তাঁরাও সংক্রমিত হতে পারেন। তাঁরা সংক্রমিত হলে পড়ুয়ারাও সেখান থেকে সংক্রমিত হতে পারে। করোনার আসন্ন তৃতীয় ঢেউ যে শিশুদের মধ্যে সংক্রমণের হার বৃদ্ধি করবে তা আগেই জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এই পরিস্থিতিতে স্কুলে কি কোভিড কেয়ার ইউনিট তৈরি হওয়া যথাযথ?এ প্রসঙ্গে বিধায়ক জানিয়েছেন, মিড-ডে মিলের জন্য নির্দিষ্ট দিন বেঁধে দেওয়া হবে ও মাসে একবার করে দেওয়া হবে। মিড-ডে মিল দেওয়ার জন্য বিকল্প স্থানও তৈরি করা হবে। অভিভাবকরা যাতে কোনওভাবে সংক্রমিত না হন, সেইদিকেও বিশেষ নজর দেওয়া হবে। যদিও, এতে পরবর্তীকালে স্কুল পড়ুয়াদের সুরক্ষা কতটা নিশ্চিত থাকবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। কারণ, সংক্রমণের হার খানিক থিতিয়ে পড়লেই ধীরে ধীরে হয়ত স্বাভাবিক ও সচল হতে শুরু করবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি। তখন বিধি মেনে স্যানিটাইজেশন করলেও ঠিক কতটা সুরক্ষিত থাকবে স্কুলবাড়ি তা নিয়ে যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে। এর আগে, স্কুল খোলার অনতিপরেই দক্ষিণ কলকাতার দুটি স্কুলে পরপর শিক্ষকরা করোনা আক্রান্ত হন। ফলে পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে হয় অফলাইনে পঠনপাঠন। তাই আশঙ্কা থাকছেই। যদিও, সাউথ সুব্রাবর্ন স্কুলের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্কুল বন্ধ। এরপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সবদিক বিবেচনা করে সরকারি নির্দেশ মেনেই পড়ুয়াদের আসার অনুমতি দেওয়া হবে।

স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা নগন্যাট ফাউন্ডেশনের (Knognat Foundation) উদ্যোগে বন্ধ স্কুলে কোভিড কেয়ার ইউনিট চালু হওয়ায় খুশিও হয়েছেন অনেকে। রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয়রা। নগন্যাট ফাউন্ডেশনের কর্ণধার শ্রীমতি দেবযানী গুহ ও তাঁর দুই কন্যা দেবলীনা ঘোষ ও দেবপ্রিয়া গুহ দীর্ঘদিন ধরেই সমাজকর্মী হিসেবে পরিচিত। এর আগে, করোনা প্রথম ঢেউয়ের সময় থেকে আমফান দুর্যোগ মোকাবিলা-সহ একাধিক সামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত নগন্যাট ফাউন্ডেশন। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে প্রায় ২৫০ কোভিড রোগীর জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত পরিষেবার ব্যবস্থাপক এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।

আরও পড়ুন: মানুষের পাশেই দিনভর, যেকোনও সমস্যায় হাল ছাড়তে নারাজ ‘উদয়ের পথে’-র ‘বন্ধুরা’