অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলবে লোকাল! কিন্তু কীভাবে মানা সম্ভব শারীরিক দূরত্ববিধি, ঘেঁটেই আছে সরকার
TV9 বাংলা ডিজিটাল: বেশ কয়েকমাস ধরেই যাত্রী বিক্ষোভের ঘটনা ঘটছে। দাবি একটাই, লোকাল ট্রেন (Local Train) চালু করা হোক। তা না হওয়ায় রেলকর্মীদের জন্য চালানো স্পেশ্যাল ট্রেনে উঠতে চাইছেন সাধারণ যাত্রীরা। বাধা দিচ্ছে রেল পুলিস। আর তাতেই ধিক ধিক করে জ্বলতে থাকা ক্ষোভের আগুন দাবানলের চেহারা নিচ্ছে। ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন স্টেশনে বিক্ষোভ হয়েছে। সাধারণ মানুষের […]
TV9 বাংলা ডিজিটাল: বেশ কয়েকমাস ধরেই যাত্রী বিক্ষোভের ঘটনা ঘটছে। দাবি একটাই, লোকাল ট্রেন (Local Train) চালু করা হোক। তা না হওয়ায় রেলকর্মীদের জন্য চালানো স্পেশ্যাল ট্রেনে উঠতে চাইছেন সাধারণ যাত্রীরা। বাধা দিচ্ছে রেল পুলিস। আর তাতেই ধিক ধিক করে জ্বলতে থাকা ক্ষোভের আগুন দাবানলের চেহারা নিচ্ছে। ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন স্টেশনে বিক্ষোভ হয়েছে। সাধারণ মানুষের বক্তব্য, সারাদিনে যদি ৩০০ টাকা আয় হয়, গাড়ি ভাড়াই চলে যাচ্ছে ১৫০ টাকা! এই পরিস্থিতি কতদিন সামলানো যাবে। বিষয়টি ভাবাচ্ছে রাজ্যকেও (Bengal)। ইতিমধ্যেই রেলের সঙ্গে বৈঠক সেরেছে রাজ্য।
সোমবার রাজ্যের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন পূর্ব ও দক্ষিণ পূর্ব রেল কর্তারা। রেল চাইছে, যত সংখ্যক আসন রয়েছে, তার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে ট্রেন চালাতে। তাতে নাকি সংক্রমণ কিছুটা হলেও এড়ানো যাবে। অন্তত এমনটাই দাবি করছে রেল। এদিকে, রাজ্য চাইছে অন্তত অফিস টাইমে যাতে বেশি সংখ্যক ট্রেন চালানো যায়। তাতে ভিড় একটু কমবে।
কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে! কীভাবে অফিস টাইমে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ট্রেন চালাতে পারবে রাজ্য? কোন রুটে কোন সময়ে ট্রেন চলবে? কটি ট্রেন চলবে? কটি লোকাল ট্রেন আর কটিই বা গেলোপিন ট্রেন চলবে? তা নিয়ে এখনও স্থির কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি রাজ্য-রেল।
তবে রাজ্য এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছে, সামাজিক দূরত্ববিধি, অত্যাবশ্যক মাস্ক, থার্মাল স্ক্রিনিং-সহ একাধিক কোভিড-বিধির ব্যবস্থা রাখতে হবে প্রত্যেকটি স্টেশনে। গোটা বিষয়টির ওপর রেল পুলিসের পাশাপাশি নজর রাখবে রাজ্য পুলিসও।
রেলের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রবিবার বাদ দিয়ে সপ্তাহের ছদিন শিয়ালদহ শাখায় রোজ ৯১৫টি ট্রেন চলে। হাওড়া শাখায় চল ৪০৭ টি। লোকাল ট্রেনে গড়ে ১২০০ যাত্রী যাতায়াত করেন। রেল বলছে, এই সংখ্যার ১০-১৫ শতাংশ নিয়ে আপাতত পরিষেবা চালু হবে। পরিস্থিতি বুঝে তা ধাপে ধাপে বাড়ানো হবে।
চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে রেল কর্তাদের সঙ্গে আরও একবার বৈঠকে বসবেন রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব। যদিও এই নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিঁধেছে বিজেপি। দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, “যে কোনও একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছতে রাজ্য সরকার অনেক দেরি করে ফেলছে।”
তবে সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্কও রয়েছে, লোকাল ট্রেন চলতে শুরু করলেই কি ফের ঊর্ধ্বমুখী হবে করোনা আক্রান্তের গ্রাফচিত্র? বেশিরভাগই মনে করছেন ‘হ্যাঁ’, অন্তত তেমনটাই বলছে জনমত। আবার অনেকে বলছেন, “করোনা কালেই যখন মেট্রো চলছে, বাস, অটো সবই চলছে, লোকাল ট্রেনই বা কী দোষ করল? তাতে অন্তত দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলোর কিছুটা হলেও সুবিধা হবে।”
নিত্যযাত্রীদে বক্তব্য, কাজের জন্য তো বেরতেই হচ্ছে। কিন্তু যা করছি গাড়ি ভাড়াতেই চলে যাচ্ছে, কী পেটে দেব, আর কী বাচ্চাদের পড়াশোনা চালাব! করোনা হচ্ছে অনেকের, সেরেও যাচ্ছে। কিন্তু কাজে না বেরোলে তো বউ-বাচ্চাকে না খাইয়ে মারব! সেটা কেমন করে সম্ভব! বেরোচ্ছি, কাজে যাচ্ছি, ভয় নিয়ে ফিরছি বাড়িতে- বাকিটা ছেড়ে দিয়েছি কপালের হাতে!