রাজ্যপালকে বার বার বারণ করলেও কথা শোনেন না, পিএসি-চিঠি নিয়ে প্রতিক্রিয়া বিমানের

PAC: সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের গরিমা যেমন রাজ্যপাল নষ্ট করছেন, তেমন তাঁর সম্মানহানিও হচ্ছে বলে দাবি বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

রাজ্যপালকে বার বার বারণ করলেও কথা শোনেন না, পিএসি-চিঠি নিয়ে প্রতিক্রিয়া বিমানের
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 06, 2021 | 4:08 PM

কলকাতা: পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি নিয়ে বিধানসভায় চিঠি লিখেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। চলতি মাসের শুরুতেই নিজে কড়া মনোভাব চিঠিতে ব্যক্ত করেন তিনি। এবার সেই চিঠি নিয়ে মুখ খুললেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযোগ তুললেন, বিধানসভার গরিমা নষ্ট করছেন রাজ্যপাল। অধ্যক্ষের বক্তব্য, ওনাকে আগেও বলা হয়েছে। তা সত্ত্বেও উনি এই ধরনের কাজ বার বার করছেন। এতে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের গরিমা যেমন রাজ্যপাল নষ্ট করছেন, তেমন তাঁর সম্মানহানিও হচ্ছে বলে দাবি বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

এদিন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পিএসি নিয়ে রাজ্যপালের চিঠির জবাব ওনাকে আমরা দিয়েছি। বলেছি, এটা উনি করতে পারেন না। এতে বিধানসভার গরিমা নষ্ট হচ্ছে। রাজ্যপালকে বার বার বলা সত্ত্বেও কেন তিনি এটা করছেন তা জানি না। আমি আশা করি উনি নিশ্চয়ই এটা উপলব্ধি করতে পারবেন। ভবিষ্যতে বিধানসভা সংক্রান্ত ব্যাপারে এই ধরনের চিঠি চাপাটি উনি বন্ধ করবেন। এখানকার বিষয়ে উনি কোনও রকম হস্তক্ষেপ করবেন না।”

বিজেপির টিকিটে কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের নির্বাচনে লড়ে জয়ী হন মুকুল রায়। যদিও এরপর তিনি বিজেপি ছেড়ে তাঁর পুরনো দল তৃণমূলে ফিরে যান। তবে ছাড়েননি বিধায়ক পদ। এরই মধ্যে বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান হিসাবেও তাঁকেই মনোনীত করা হয়। এই পদে মনোনয়নের ক্ষেত্রে যে দলের প্রতিনিধি সেই দলেরই অনুমোদন লাগে। অথচ বিজেপির অনুমোদন ছাড়াই কী ভাবে মুকুল রায় এই কমিটির চেয়ারম্যান হলেন তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বাকি বিজেপি বিধায়করাও এক জোটে এ বিষয়ে নালিশ জানান রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে।

এরপরই দিন তিনেক আগে বিধানসভায় একটি চিঠি লেখেন রাজ্যপাল। তাঁর দাবি, পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি বা পিএসিতে মুকুল রায়কে চেয়ারম্যান করা হলে সংসদীয় ব্যবস্থার রীতিনীতি ধাক্কা খাবে অভিযোগ তুলে বিজেপি অভিযোগ জানিয়েছে। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় চান, “সংসদীয় ব্যবস্থার মর্যাদা ধরে রাখতে ঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক।” যদিও প্রথম থেকেই এই চিঠি নিয়ে তরজা শুরু হয় তৃণমূল ও বিজেপির অন্দরে।

তৃণমূল নেতা তাপস রায় যেমন বলেন, “সংবিধানে নির্দিষ্ট করে দেওয়া আছে, কার কোনটা এক্তিয়ার।” বিধানসভার কোনও কমিটির বিষয় অধ্যক্ষই দেখেন বলে দাবি করেন এই তৃণমূল নেতা। পাল্টা বলেন, “রাজ্যপাল হঠাৎ নীরবতা ভেঙে নাক গলাচ্ছেন কেন? এ বিষয়ে ওনার কিছু বলার কথা নয়। রীতি বা পরম্পরায় এ বিষয়ে কিছু বলার এক্তিয়ার নেই রাজ্যপালের।”

অন্যদিকে বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদারের প্রতিক্রিয়া, “বিতর্কের সূত্রপাত তো নিয়ম ভাঙা নিয়ে। স্পিকার কি অস্বীকার করতে পারবেন যে তিনি বারবার দলত্যাগ বিরোধী আইন প্রয়োগ করতে ব্যর্থ হয়েছেন এবং তা শাসক দলের বিপক্ষে যাচ্ছে বলে। ৫ বছরে শুধু ২১-২২ বার শুনানি হয়েছে। এটা কি নিরপেক্ষতার পরিচয়?” তবে রাজ্যপালের এই চিঠি নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন বিধানসভার অধ্যক্ষও। আরও পড়ুন: প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়ে হামলা! গাড়ি থেকে নেমে দলীয় কর্মীদের বোঝালেন মানিক সরকার