BJP Mega Rally: বিজেপির মেগা মিছিল থেকেই ২১ জুলাই বিডিও অফিস ঘেরাওয়ের ডাক সুকান্তর
BJP: কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করিয়েও হিংসা ঠেকানো যায়নি। সেই হিংসার প্রতিবাদে আজ, বুধবার পথে নেমেছে বিজেপি। একই মঞ্চে রয়েছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী থেকে মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ।
কলকাতা: পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে রাজ্যজুড়ে ব্যাপক হিংসা হয়েছে। মননোনয়ন পর্ব থেকে শুরু করে ভোটের ফল প্রকাশের পর পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে রাজনৈতিক হিংসার বলি হয়েছে বহু মানুষ। শাসক ও বিরোধী- উভয় পক্ষেরই বহু কর্মী-সমর্থকের মৃত্যু হয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করিয়েও হিংসা ঠেকানো যায়নি। সেই হিংসার প্রতিবাদে আজ, বুধবার পথে নেমেছে বিজেপি। কলকাতার রাজপথে মহা মিছিল করছে বিজেপি। মিছিল শুরুর আগে কলেজ স্কোয়ারে সভা করে বিজেপি। একই মঞ্চে একসঙ্গে রয়েছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী থেকে মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ। মিছিল শুরুর আগে সভামঞ্চে বক্তৃত্বা দেন দিলীপ ঘোষ।
- ভোটে পুলিশও আক্রান্ত হয়েছে তোপ দেগে সুকান্ত আরও বলেন, “যে সরকার নিজেদের পুলিশকে সুরক্ষা দিতে পারে না, সেই সরকার রাজ্যবাসীকে কি সুরক্ষা দেবে!” এরপর ‘ভারত মাতা কি জয়’ স্লোগান দিয়ে মেগা মিছিল শুরু করলেন সুকান্ত মজুমদার। মিছিলের অগ্রভাগে সুকান্ত, শুভেন্দু। কলেজ স্কোয়্যার থেকে এই মেগা মিছিল শুরু হয়ে ধর্মতলায় এসে শেষ হবে।
- মেগা মিছিলের মঞ্চ থেকে তৃণমূলের শহিদ দিবসেই অর্থাৎ ২১ জুলাই বিডিও অফিস ঘেরাওয়ের ডাক দিলেন সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, “যদি গণতন্ত্রকে বাঁচাতে হয় তাহলে এই সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে হবে। আমাদের লড়াই এখান থেকেই শুরু হচ্ছে।” সকলকে এই লড়াইয়ে নামার আহ্বান জানান সুকান্ত।
- আগামী লোকসভা ভোটে বাংলায় ৩৫ আসনের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে বলে জানান সুকান্ত। তৃণমূল সরকার গণতন্ত্রকে লুঠ করেছে এবং নাম না করে মুখ্যমন্ত্রীকে তোপ দেগে তিনি বলেন, ওখানে গিয়ে শুধু মিটিং-সেটিং-ইটিং করলেই হবে না। একবার গিয়ে খোঁজ নিন বাংলা থেকে কত মানুষ ওখানে কাজের জন্য যাচ্ছেন।
- শুভেন্দুর মতো সুকান্ত মজুমদারও ‘ভারত মাতা কি জয় স্লোগান দিয়ে বক্তব্য শুরু করেন এবং ভোটে সন্ত্রাসের পরেও বিজেপি যে ভোট পেয়েছে তার জন্য দলীয় কর্মীদের ধন্যবাদ জানান তিনি। এদিন সিপিএম-কংগ্রেস সেটিং নিয়েও কটাক্ষ করেন সুকান্ত।
- পঞ্চায়েত ভোটের হিংসা নিয়েও রাজ্যের শাসকদলকে কড়া তোপ দাগেন শুভেন্দু অধিকারী। ত্রিস্তরীয় ভোট ত্রিস্তরীয় লুঠ হয়েছে এবং এরই প্রতিবাদে এদিনের মেগা মিছিল বলে শাসকদলকে রীতিমতো হুঁশিয়ারি দেন শুভেন্দু। শুভেন্দুর বক্তব্যের পর বক্তব্য দেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
- বেঙ্গালুরুতে বিরোধীদের মিটিংয়ে বিজেপির কোনও ক্ষতি হবে না দাবি জানিয়ে শুভেন্দু বলেন, “একদিকে মোদীজি আর অন্যদিকে, দুর্নীতিগ্রস্তরা। আগলিবার মোদীজি ৪০০ পার। আর ইন্ডিয়া নাম দিলেই স্বদেশপ্রেমী হওয়া যায় না। তাহলে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিও ভারতে থাকত। তাই ইন্ডিয়া নাম দিয়ে বিভ্রান্ত করা যাবে না। মানুষ মোদীজির হাতেই দেশ আগামী কয়েক দশক রাখবে।”
- বেঙ্গালুরুতে বিরোধীদের জোট নিয়েও তোপ দাগেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, “গত লোকসভা ভোটের আগেও ১৯ জানুয়ারি কলকাতায় এরকমই একটা সার্কাস হয়েছিল। সেই সময় নাম দিয়েছিলেন ইউনাইটেড ইন্ডিয়া। তার পরিণতি গোটা দেশের মানুষ দেখেছে। বাংলাতে তৃণমূল ৩৪ থেকে ২২-এ নেমেছে। আর বিজেপি ২ থেকে বেড়ে ১৮-এ পৌঁছেছে। এই পরিবারবাদী লোকেরা, দুর্নীতিগ্রস্ত পার্টিরা ইডি, সিবিআই থেকে বাঁচতে বেঙ্গালুরুতে ফাইভ স্টার মিটিং করেছে।”
- বিজেপির এদিনের মেগা মিছিলে পুলিশ অনুমতি দেয়নি। মুখ্যমন্ত্রীর কথাতেই পুলিশ আধিকারিক বিনীত গোয়েল অনুমতি দেয়নি তোপ দেগে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর তোপ, “যদি বুকের পাটা থাকে তো এই মিছিল আটকে দেখাও।”
- দিলীপ ঘোষের পর শুভেন্দু অধিকারী মঞ্চে উঠেই ‘ভারত মাতা কি জয় স্লোগান দিয়ে এবং তৃণমূল সুপ্রিমোর বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করে বক্তব্য শুরু করেন। তিনি বলেন, “মাত্র ২৪ ঘণ্টার নোটিশে হাজার-হাজার বিজেপি কর্মী রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে এই মেগা মিছিলে হাজির হয়েছেন।”
- শহিদ দিবস নিয়েও কটাক্ষ করেন দিলীপ ঘোষ। বলেন, “দু-দিন পরে এখানে একটা নাটক হবে শহিদ দিবসের নামে। সারা বছর রাজ্যজুড়ে লোককে মারা হয়, আর ২১ জুলাই শহিদ দিবসের নামে নাটক করা হয়। এখানে লোক আসবে না। তাই পুলিশ আর সিভিক পুলিশ ফোন করে জানছে, কত বাস লাগবে, কত লোক আসবে। মেদিনীপুরের কাউন্সিলারকেও ফোন করে কত বাস লাগবে জানছে পুলিশ।”
- ভোট-লুঠের অভিযোগ তুলে দিলীপ ঘোষ বলেন, “ভোটকেন্দ্রে সরকারি ক্ষমতাকে ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার লুঠ করা হয়েছে। আমাদের কর্মীদের গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হয়েছে। বিডিও-র নেতৃত্বে ভোট লুঠ হয়েছে। ওসি পর্যন্ত ভোট লুঠে সাহায্য করেছে। এই সমস্ত ওসি, বিডিও-দের চাকরি খেয়ে আমরা ভিখারি করে ছাড়ব, যারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। তাই আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে পথে নেমেছি। এর জন্য যতদূর যেতে হয় যাব।”
- মেগা মিছিল শুরুর আগে মঞ্চে উঠে প্রথমেই বক্তব্য দিতে গিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, “পঞ্চায়েত ভোটের নামে রাজ্যজুড়ে প্রহসন হয়েছে। আমাদের কর্মীদের মনোনয়ন ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। বহু কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। গোটা বিষয়টি কোর্টে জানিয়েছি। বিচার চলছে। জনগণ আমাদের পাশে রয়েছে। জনগণকে পাশে নিয়ে আমরা পথে নেমেছি।”