বাবুল-প্রশ্নে তিতিবিরক্ত দিলীপের সাংবাদিক বৈঠক বন্ধ করার হুমকি, দূর থেকেই জল মাপছে ঘাসফুল

অন্যদিকে তৃণমূল শিবিরের কেউ কেউ একে 'নাটক' বলে জল মাপছেন। অনেকে আবার ঝালমুড়ির কথাও মনে করাচ্ছেন বাবুল সুপ্রিয়কে।

বাবুল-প্রশ্নে তিতিবিরক্ত দিলীপের সাংবাদিক বৈঠক বন্ধ করার হুমকি, দূর থেকেই জল মাপছে ঘাসফুল
বাবুল প্রশ্নে বিরক্ত বঙ্গ বিজেপি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 31, 2021 | 7:17 PM

কলকাতা: না, বিনা মেঘে বজ্রপাত একে বলা যাবে না। মন্ত্রিত্ব হারিয়ে বাবুল যে খুশি নন, সেটা বুঝিয়ে দিতে কোনও কার্পণ্য করেননি তিনি। কয়েকদিন ধরেই ফেসবুকে এমন কিছু পোস্ট করছিলেন, যাতে এটা বোঝাই যাচ্ছিল যে রাজনীতি থেকে মন উবে গিয়েছে তাঁর। সমস্ত জল্পনা সত্যি করে শনিবার রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নেওয়ার পাশাপাশি সাংসদ পদ থেকেও ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। মুখে কিছু না বললেও, বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি এই ঘটনায় যারপরনাই বিরক্ত। অন্যদিকে তৃণমূল শিবিরের কেউ কেউ একে ‘নাটক’ বলে জল মাপছেন। অনেকে আবার ঝালমুড়ির কথাও মনে করাচ্ছেন বাবুল সুপ্রিয়কে।

শনিবার বিকেলে দিলীপ ঘোষ যখন সাংবাদিক বৈঠকে বসেন, তার কয়েক মিনিট আগেই ফেসবুকে বোমাটা ফাটিয়েছেন বাবুল। দিলীপের শরীরী ভঙ্গিই স্পষ্ট করে দেয়, এমন কোনও ঘটনার জন্য তিনি মোটেই প্রস্তুত ছিলেন না। এমনকী, আসানসোলের সাংসদকে নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সাংবাদিক বৈঠকে ইতি টানার হুঁশিয়ারি দেন তিনি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টি নিয়ে বেশি ঘাঁটানো হয়নি তাঁকে। কিন্তু যেটুকু তিনি বলেছেন তাতে স্পষ্ট, সংগঠনকে সম্ভবত কখনই আপন করতে পারেননি দু’বারের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।

দিলীপ বলেন, “আমি কারোর ফেসবুক-টুইটার দেখি না। কে কোথায় যাচ্ছেন, কী করছেন, কখন রাজনীতি করবেন, কখন করবেন না, সেটা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার। এই নিয়ে আমার কিছু বলার নেই।” বাবুলের সাংসদ পদ ছাড়া নিয়ে প্রশ্ন উঠলে দিলীপ পালটা প্রশ্ন দেগে বলেন, “উনি কি ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন? উনি এখনও লোকসভায় আছেন, আমাদের সহকর্মী আছেন, সাংসদও আছেন। পদত্যাগ করবেন এরকম খবর রোজই অনেক আসে।”

বাবুলের এই পদত্যাগ পর্ব নিয়ে তৃণমূল অবশ্য খোঁচা মারতে ছাড়ছে না। রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ একে ‘নাটক’ আখ্যা দিয়ে ঝালমুড়ি প্রসঙ্গের কথা উল্লেখ করে নতুন সম্ভাবনার দরজা খোলা রেখেছেন। অন্যদিকে সাংসদ সৌগত রায় চাইছেন, ২০২৪ পর্যন্ত থেকে যান বাবুল। সৌগত রায় বলেন, “আমার সঙ্গে পরশু সেন্ট্রাল হলে দেখা হয়েছিল, ওকে দুঃখিত মনে হচ্ছিল, বাবুল তো রাজনীতির জগতের লোক নয়। বিধানসভায় পরাজয় ওকে আহত করেছে। এটা ওর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত রাজনীতিতে থাকবেন কি না। আমি বলব, ২০২৪ পর্যন্ত সাংসদ, তাই রাজনীতি ছাড়বেন না, তাহলে জনগণের প্রতি সুবিচার হবে না।”

অন্যদিকে কুণাল ঘোষকে বলতে শোনা যায়, “আমি এটাকে একেবারেই গুরুত্ব দিতে রাজি নই। বাবুল মানসিক হতাশা থেকে এটা করেছে। ওকে ঘুম থেকে তুলে বলেছে মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দাও। তাই দুঃখ হয়েছে। দলেও কোণঠাসা, জায়গা পায় না, দমবন্ধ লাগছে, অক্সিজেন কম যাচ্ছে। তাই এখন ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেছে। এটা আসলে দৃষ্টি আকর্ষণের প্রস্তাব। ফেসবুক পোস্ট না করে সংসদ চলার সময় স্পিকারের কাছে ইস্তফা দিল না কেন! এটা তো নাটক করছে। ওর মনে রাখা উচিত ভিক্টোরিয়ার ঝালমুড়ি অনেক বেশি আন্তরিত, সুস্বাদু।” আরও পড়ুন: মন্ত্রিত্ব যেতেই মোহভঙ্গ! ‘চললাম, আলভিদা’ লিখে রাজনীতিকে বিদায় বাবুলের