Black Goggles: ২৫ টাকার চশমা বিকোচ্ছে ১২০ টাকায়! চোখের আড়ালেও কেলেঙ্কারির আঁধার
Black Goggles: বিতর্ক প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য ভবনের বক্তব্য,চিকিৎসা সামগ্রী কেনা নিয়ে রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা মেনে বরাতপ্রাপ্ত সংস্থার কাছ থেকেই কিনতে হবে কালো চশমা!
কলকাতা: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে মাঝে মধ্য়েই শুনতে পাওয়া যায়, রাজ্যের কোষাগারের অবস্থার কথা। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী কি জানেন চক্ষু হাসপাতালের ২৫ টাকার কালো চশমা ১২০ টাকায় কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য ভবন? প্রায় পাঁচগুণ দামে চশমা ক্রয়ে আপত্তি জানিয়ে স্বাস্থ্য ভবনে চিঠি দিয়েছে পূর্ব ভারতে চোখের চিকিৎসার উৎকর্ষ কেন্দ্র রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অব অপথ্যালমোলজি। আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি চোখের আলোর আড়ালে কি আর্থিক বেনিয়মের আঁধার?
রাজ্যের টানাটানির সংসারে সরকারি দফতরের মাত্রাতিরিক্ত খরচ নিয়ে একাধিক প্রশাসনিক বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বাস্থ্য ভবনের কর্তারা মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বক্তব্য কতটা শুনেছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল চক্ষু হাসপাতালের কালো চশমা-বিতর্ক। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, চোখের অস্ত্রোপচারের পর রোগীদের দেওয়ার জন্য কালো চশমা এতদিন নন-ক্যাট আইটেম হিসেবে ১৭ থেকে ২৫ টাকায় কিনত কলকাতার মেডিক্যাল কলেজগুলি।
কালো চশমা ক্যাট-আইটেম হিসেবে গণ্য হওয়ার পর তা ১২০ টাকায় কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্যভবন। TV9 বাংলার হাতে রয়েছে সেই সংক্রান্ত বিস্ফোরক নথি। ১৭-২৫ টাকায় যে চশমা পাওয়া যাচ্ছিল তা কেন কিনতে হবে পাঁচগুণ টাকায়? উত্তর পেতে গত ২৮ নভেম্বর স্বাস্থ্য ভবনে চিঠি দেয় রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অব অপথ্যালমোলজি।
রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অব অপথ্যালমোলজির প্রতি মাসে গড়ে ৩০০০ চশমার প্রয়োজন হয়। চশমা পিছু ২৫ টাকা দরে মাসে খরচ হত ৭৫ হাজার টাকা। স্বাস্থ্য ভবনের সিদ্ধান্তে তা এক ধাক্কায় বেড়ে হল ৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। বছরে ৯ লক্ষ টাকার খরচ বেড়ে ৪৩ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। সারা রাজ্যের হাসপাতালে বছরে আনুমানিক ৭০ হাজার চশমা প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে ১৪ লক্ষ টাকার পরিবর্তে এখন খরচ হবে ৮৪ লক্ষ টাকা। ছয় গুণ খরচ বৃদ্ধি নিয়ে আপত্তি জানাচ্ছে হাসপাতালগুলি। তবুও স্বাস্থ্য ভবন কেন সিদ্ধান্তে অনড়!
২৫ টাকার জিনিস ১২০ টাকার কেনার মূলে কি গুণমান? চক্ষু বিশেষজ্ঞ হিমাদ্রী দত্ত বলেন, “আমার মনে হয় না কোয়ালিটির বিশেষ তফাত আছে। ইউভি প্রোটেকটেড গ্লাস হলে ভাল। আমার মনে হয় না কেউ ইউভি প্রোকেটটেড গ্লাস দেয়।”রোগীরাদের একাংশ বলছেন, “ওই কাজ চলে যাচ্ছে। ভাল দেখতেই পাচ্ছি।” চিঠি দিয়ে হুইসেল ব্লোয়ারের ভূমিকা পালন করলেও সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে আসতে নারাজ আর আইও ডিরেক্টর অসীম ঘোষ। স্বাস্থ্য ভবনের কোর্টেই বল ঠেলেছেন তিনি।
বিতর্ক প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য ভবনের বক্তব্য,চিকিৎসা সামগ্রী কেনা নিয়ে রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা মেনে বরাতপ্রাপ্ত সংস্থার কাছ থেকেই কিনতে হবে কালো চশমা! কেন সাধারণ মানুষের খরচ পাঁচ গুণ বাড়ানো হল, সে প্রশ্ন উঠছেই।