Bowbazar: মধ্যরাতে এক ঘণ্টার নোটিসে তল্পিতল্পা গুটিয়ে হোটেলে উঠলেন, মিলল না খাবারও, ফুঁসছেন বউবাজারের গৃহহীনরা

Bowbazar: "মাঝরাতে এক ঘণ্টার নোটিসে ঘর ছাড়তে হয়েছে। তাহলে কী অবস্থা হয় ভাবুন। বয়স্ক মানুষ, বাচ্চাগুলো সঙ্গে ছিল। মেট্রো তো একবারও ভাবলই না কী খাবেন ওঁরা।"

Bowbazar: মধ্যরাতে এক ঘণ্টার নোটিসে তল্পিতল্পা গুটিয়ে হোটেলে উঠলেন, মিলল না খাবারও, ফুঁসছেন বউবাজারের গৃহহীনরা
বউবাজারে বাড়িতে ফাটল
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 12, 2022 | 8:16 AM

নিজস্ব প্রতিবেদন: এক থেকে দেড় ঘণ্টার নোটিস। তার মধ্যেই যতটুকু পেরেছেন সহায় সম্বল গুটিয়ে ঘর ছেড়েছেন বউবাজারের দুর্গাপিতুরি লেনের বাসিন্দারা। মেট্রো কাজ চলাকালীন বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে বউবাজারের দুর্গা পিতুরি লেনের বেশ কয়েকটি বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। আতঙ্কে ইতিমধ্যেই ঘর ছেড়েছে অনেক পরিবার। বিপজ্জনক বাড়িতে থাকা বাসিন্দাদের জরুরি নথি এবং অত্যন্ত প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে ক্রিক রো হোটেল কিউ ইন্ ও গণেশ চন্দ্র অ্যাভিনিউয়ের ব্রডওয়ে হোটেলে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। যদিও হোটেলের তরফ থেকে বা মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের তরফে আবাসিকদের জন্য কোনওরকম খাবারের ব্যবস্থা করা হয়নি বলে অভিযোগ। মধ্যরাতে ঘরছাড়া হয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এক মহিলা বাসিন্দা বললেন, “আমরা তো আসলে হোটেলে খেতে যেতে পারি না। তাই আমাদের মাঝেমধ্যেই হোটেলে খাওয়াতে নিয়ে যায় ওরা।” আরেক বাসিন্দা বলেন, “মাঝরাতে এক ঘণ্টার নোটিসে ঘর ছাড়তে হয়েছে। তাহলে কী অবস্থা হয় ভাবুন। বয়স্ক মানুষ, বাচ্চাগুলো সঙ্গে ছিল। মেট্রো তো একবারও ভাবলই না কী খাবেন ওঁরা।”

২০১৯-এর স্মৃতি যে আবারও বলা ভালো এত তাড়াতাড়ি উস্কে দেবে দুর্গা পাতুরি লেন, তা দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারেননি বাসিন্দারা। ২০১৯ সালেও তাঁরা একই ভাবে ঘরছাড়া হয়েছিলেন। মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন তাঁরা। মেট্রোর তরফ থেকে এখনও পর্যন্ত নির্দিষ্ট করে কোনও বক্তব্য দেয়নি। বারবার এই ঘটনায় কোনও ব্যবস্থা কেন নিচ্ছে না মেট্রো কর্তৃপক্ষ, অভিযোগ বাসিন্দাদের। তাঁদের একটাই প্রশ্ন, প্রাণের দাম নেই? কেন ফাটল, তা নিয়ে ধোঁয়াশায় রয়েছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। কেএমআরসিএল-এর তরফে বলা হচ্ছে, বাড়িতে ফাটলের কারণ খতিয়ে দেখা হবে।

কিন্তু কেন বারবার এই ঘটনা? নির্মাণ বিশেষজ্ঞ পার্থপ্রতিম বিশ্বাস বলেন, “কলকাতার একটা প্রেস্টিজিয়স প্রজেক্ট ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রো। যা ঘটছে, সেই একই জায়গা, সেই একই বাড়িতে ফাটল কীভাবে দেখা যাচ্ছে? বোঝা যাচ্ছে বাড়িগুলির পায়ের তলার মাটি সরছে। শিয়ালদা থেকে বউবাজার পর্যন্ত টিবিএম (টানেল বোরিং মেশিন)-গুলি আসছে, এই এলাকাতেই অপারেশন শেষ হচ্ছে। যেখানে মাটির বৈশিষ্ট্যের জন্য এতটা ভারী যন্ত্রাংশের মুভমেন্ট সমস্য়া তৈরি হচ্ছে। আগেরবারও মাটির বৈশিষ্ট্য আমরা বুঝতে পারিনি। তখন এই ঘটনা ঘটেছিল। কিন্তু এবার তো বুঝে গিয়েছিলাম। তাহলে কেন আগে থেকেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি?” তিনি আরও সতর্ক করেন, ” যদি ঘণ্টায় ঘণ্টায় ক্রমশ বেড়ে চলে, তাহলে এই ফাটলগুলো মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। এই বাড়ির বাসিন্দাদের প্রাথমিকভাবে ৭২ ঘণ্টা নিরাপদে থাকা উচিত।”